শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বাগেরহাটের শরণখোলার রায়েন্দা ইউপির জিলবুনিয়া গ্রামের বেগম বিবি। কোরবানি দেয়া তো দূরের কথা, মাংস কিনে খাওয়ানোর মতো সামর্থও নেই তাদের। তবুও মেয়ে-জামাইর পাতে এক টুকরো মাংস তুলে দেয়ার চেষ্টায় সারাদিন শত বাড়ি ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু দিন শেষে পেলেন দেড় কেজি হাড্ডি!
দুপুর সোয়া দুইটা পর্যন্ত প্রায় ১০০ বাড়ি ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। খর রৌদ্রের মধ্যে বিত্তবানদের দ্বারে ঘুরে ক্লান্ত এই বৃদ্ধা অশ্রুসজল চোখে বলেন, কোরবানির ইদ। ছোড মাইয়া-জামাই আইবে। হের পর তিনডা নাতী-নাতনী। হেয়াগো পাতে একটু গোস্ত না দেতে পারলে মানইজ্জত থাকপে? প্রায় একশো বাড়ি গেছি। কেউ দিছে, কেউ কইছে মোগো দেওয়া শ্যাষ ওইয়া গ্যাছে। সকাল ওইতে এই পর্যন্ত (দুপুর সোয়া দুইটা) দ্যাড় কেজির মতো পাইছি। কিন্যা খাওয়ার কায়দা নাই। আরো কয় বাড়ি যামু। দেহি আরোকটু পাই কিনা।
এক সময় অন্যের নৌকায় করে সুন্দরবনে কাঠ কাটতে যেতেন স্বামী সুলতান খান। প্রায় ২০ বছর আগে বাঘের মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছেন। সেই থেকে আর বনে যাননি। নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন তার শরীর আর চলে না। কানেও শুনতে পান না। কোনো কাজও করতে পারেন না।
বেগম বিবি জানান, সামান্য উপার্জনে স্ত্রী, তিন ছেলে-মেয়েসহ সাতজনের বিশাল বোঝা তার মাথায়।
আক্ষেপ করে বেগম বিবি জানান, থাকার ঘর নেই। সবাই ঘর পায়, কিন্তু তাদের খোঁজ কেউ নেয় না। ভাঙা ঘরে এতোগুলো মানুষের থাকতে খুবই কষ্ট হয়। মেয়ে-জামাই বা আত্মীয়-স্বজন এলে তাদের অন্যের বাড়িতে গিয়ে থাকতে হয়। তাই সরকারের কাছে একটি বসত ঘরের দাবি জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধা।
Leave a Reply