বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক ও ধর্মসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভুল তথ্যের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই সময়কালে রাজনৈতিক ভুল তথ্য ছড়ানোর হার প্রায় ৪৩ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় তিন গুণ বেশি। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে ভুল তথ্যের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
ডিজিটালি রাইটের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ ডিসমিসল্যাব কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ফ্যাক্ট-চেক প্ল্যাটফর্মগুলো ৯১৭টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে ৪২.৯ শতাংশ ছিল রাজনৈতিক ভুল তথ্য, আর ধর্মসংশ্লিষ্ট ভুল তথ্যের হার ছিল ১১.৫ শতাংশ। গবেষণা থেকে প্রতীয়মান হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে এই ভুল তথ্যের সংযুক্তি রয়েছে।
ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, সঠিক তথ্য দিয়ে ভুল তথ্যের মোকাবিলা করতে হবে। মূলধারার গণমাধ্যম মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করে, যা ডিজিটাল লিটারেসির উন্নয়নে সহায়তা করবে।
গবেষণা অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে ভুল তথ্যের প্রবণতা কমলেও জুন মাস থেকে তা পুনরায় বেড়ে যায়। কোটা আন্দোলন চলাকালীন ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে কিছুটা কমে গেলেও রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সেপ্টেম্বর মাসে ভুল তথ্যের সংখ্যা শীর্ষে পৌঁছায়।
রাজনৈতিক ভুল তথ্য প্রধানত দুই পক্ষকে ঘিরে ছড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘিরে ৩৬ শতাংশ এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ৩৫ শতাংশ ভুল তথ্য প্রচারিত হয়েছে। রাজনৈতিক ভুল তথ্যের মধ্যে ৪৯ শতাংশ শেখ হাসিনাকে মহিমান্বিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছে, যেখানে ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে ৬৫ শতাংশ নেতিবাচক তথ্য প্রচারিত হয়েছে।
সংবাদে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে দেখা গেছে, জুলাই মাসে শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভুল তথ্যগুলো ছিল সামরিক চাপ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার হুমকি সংক্রান্ত। আগস্ট মাসে এসব তথ্য আরও বেড়ে যায়, যেখানে শেখ হাসিনার মৃত্যু এবং অসুস্থতা নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। সেপ্টেম্বর মাসে শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক অবস্থান নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারিত হয়, যা তার নেতৃত্বের গুরুত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
ডিসমিসল্যাব আরও জানিয়েছে, ধর্ম বিষয়ে ভুল তথ্যের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাসংক্রান্ত মিথ্যা তথ্যও অন্তর্ভুক্ত। বিশেষ করে এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে এসব ছবি ও ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছে।
এছাড়া, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ভিডিওর মাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্যের পরিমাণ ৩১ শতাংশ, ছবি ২৭ শতাংশ এবং গ্রাফিক কার্ডের মাধ্যমে ১৯ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য হলো, গ্রাফিক কার্ডের মাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্যের মধ্যে ৮১ শতাংশ প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের নাম ও লোগো নকল করা হয়েছে।
সূত্র: প্রথম আলো
Leave a Reply