রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ পূর্বাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি:বাবার বাড়ী থেকে বিল্ডিং নির্মাণের টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় নাজমা আক্তার (৩০) নামের দু’সন্তানের জননীকে মারধর করেছে স্বামী ইব্রাহিম মাঝি। আহত গৃহবধুকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) আমতলী উপজেলার চাওড়া পাতাকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, উপজেলার চাওড়া বেতমোর গ্রামের ছালাম ফকিরের কন্যা নাজমাকে একই ইউনিয়নের পাতাকাটা গ্রামের সেকান্দার মাঝির ছেলের সাথে ২০০৩ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ ২০ হাজার টাকা, স্বর্নালংকার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এতে দিতে হয় স্বামীকে। টাকা এনে না দিলেই নামে অমানষিক নির্যাতন।
গত বুধবার বিল্ডিং নির্মাণ করবে বলে নাজমাকে বাবার বাড়ী থেকে এক লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে স্বামী ইব্রাহিম। নাজমা এ টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করেন তিনি। পরে একটি ইজিবাইকে তুলে স্ত্রী নাজমাকে বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয় এবং শাসিয়ে দেয় টাকা না নিয়ে বাড়ীতে না আসার। স্বজনরা তাকে ওইদিন রাতে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। চিকিৎসা নেয়ায় শুক্রবার সকালে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে শাসিয়ে গিয়েছে ইব্রাহিম। হুমকি দিয়েছে কিছু করলে সেও দেখিয়ে দেবে এমন অভিযোগ স্ত্রী নাজমা ও তার স্বজনদের।শুক্রবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, নাজমার বাহু, উড়–, পায়ের গোড়া, হাটুতে রক্তাক্ত জখম রয়েছে। শরীরের বিষম যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন তিনি।
আহত গৃহবধু কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, বিয়ের ১৬ বছরে বহুবার টাকার জন্য নির্যাতন করেছে। একটু কিছু হলেই বাবার বাড়ী থেকে টাকা এনে দিতে হয়। টাকা না এনে দিলেই নামে অমানষিক নির্যাতন। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতন সহ্য করছি। বিল্ডিং নির্মাণ করবে বলে আমাকে বাবার বাড়ী থেকে এক লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে। আমি এ টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় আমাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে।
তিনি আরও বলেন, গত দুই মাস পূর্বে আমাকে মেরে বাম হাত গুরুতর জখম করেছে। ওই হাত দিয়ে এখন কিছুই করতে পারিনা।আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আহত নাজমার উড়ু, বাহু, পায়ের গোড়ালী, রান (পায়ের মাংশপেশী) ও হাটুসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে।আহত নাজমার বাবা ছালাম ফকির বলেন, জামাইরে টাকা দেতে দেতে মুই এ্যাহত শ্যাষ অইয়্যা গেছি। টাহা না দিলেই মোর মাইয়্যারে মারে। মুই এ্যাইয়্যার বিচার চাই।এ বিষয়ে স্বামী ইব্রাহিম মাঝির সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, খবর পেয়ে আমতলী হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply