বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ইউনুস হাওলাদার নামের এক প্রতিপক্ষ ঘরে কৃষকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছে। মৃত কৃষকের নাম বারেক গাজী (৬০)। ঘটনার পর থেকে উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) মৃত কৃষকের আপন ভাই আব্দুল হালিম গাজী নিজে বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ ইউনুস হাওলাদারের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদী (ইউনুস হাওলাদার) আমার একই এলাকার প্রতিবেশী। এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে গায়ের জোরে অপরের জমি দখল করা, কথায় কথায় মানুষকে মারধর করা তার নেশা ও পেশা। তার নামে একাধিক মামলা চলমান আছে। সাধারণ মানুষ বিবাদীর হয়রানির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে ও মুখ খুলতে ভয় পায়।
রবিবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে আমার ভাই বারেক গাজী তার নিজের জমিতে ইরি ধানের বীজ রোপণ করে। ওইদিন বিকেলে বিবাদীর বীজতলা থেকে কে বা কারা বীজ নিয়েছে বলে বারেক গাজীকে সন্দেহ করে।
বিষয়টি নিয়ে বিবাদী বারেক গাজীর বাড়িতে এসে উক্ত বিবাদী হুমকিসহ শাসিয়ে বারেক গাজীকে বাড়িতে না পেয়ে কোথায় আছে তা জানতে চায়। এ সময় ঘরে থাকা পুত্রবধূ ইয়াসমিন বেগম তার শ্বশুর সাপলেজা বাজারে গেছে বলে জানায়।
তখন বিবাদী ইউনুস হাওলাদার ক্ষুব্ধ হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বলে যে, বারেক গাজী বাড়িতে আসার সাথে সাথেই আমাদের বাড়িতে যেতে বলবি, তাতে রাত যতই হোক।
বারেক গাজী সন্ধ্যার পর বাড়িতে আসার সাথে সাথে তার মেয়ে সালমা ও পুত্রবধূ ইয়াসমিন বিষয়টি জানালে তিনি রাত ৮ টার দিকে ইউনুস হাওলাদারের বাড়িতে যান। বাড়িতে যাওয়ার পর বীজতলা থেকে বীজ নেওয়াকে কেন্দ্র করে তর্ক বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে বিবাদী ইউনুস হাওলাদার ক্ষিপ্ত হয় বারেক গাজীকে মারধর করে। ঘটনাস্থলেই বারেক গাজী মারা যায়।
অভিযোগে আ. হালিম আরও উল্লেখ করেন, আমার ভাই বিবাদির পা জড়িয়ে ধরেও রেহাই পায়নি। খবর পেয়ে বারেক গাজীর পুত্র মো. খলিল উদ্ধার করতে গিয়েও মারধরের শিকার হন।
পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বারেক গাজীকে নিয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই বারেক গাজীর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
এদিকে সোমবার সকাল ১১ টায় মৃত ওই কৃষকের জানাযা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বিবাদী প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভীত সন্ত্রস্ত থাকায় অভিযোগ দিতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a Reply