বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: পটুয়াখালী দুমকির উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক রাজন মানুষের নিকট একটি আতংকের নাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। রাজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধর ও খুনজখমের হুমকিসহ বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে তাদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করা যেন তার পেশায় পরিনত হয়েছে। কেউ চাঁদা না দিলে রাজন তার সন্ত্রাসী বাহিনীদের দিতে হামলার শিকার হতে হয়। রাজনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে মসজিদের ইমাম ও বৃদ্ধ থেকে শুরু করে এলাকার প্রতিটি স্তরের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে দিনাতিপাত করছে। এলাকার কোন মেয়ের বিয়ে ঠিক হলেই সেখানে বাধা হয়ে দাড়ায় রাজন ও তার নিকতস্থ সহযোগী রাজিব। গত কয়েক মাসে রাজন ও রাজিব তাদের হামলা ও হুমকির পরিমান বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুন। অভিযুক্ত রাজন পটুয়াখালী দুমকির মৃত নুরুল হক হাওলাদারের ছেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানান, গত ১৭ রমজান তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আঙ্গারিয়া পেশকার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জাকির হোসেনকে মারধর করে বের করে দেয় রাজন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসী রাজিবসহ কয়েকজন। প্রত্যক্ষদর্শীরা ইমামকে মারধরের বিষয়টি দেখলেও কেউ রাজনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস করেননি। তার নির্যাতন থেকে অপরাপর দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা নিস্তার পায়নি। আঙ্গারিয়া ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলাম খোকনকে কুপিয়ে-পিটিয়ে নিমর্মভাবে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে রাজন ও তার সহযোগীরা। এলোপাথারি কুপিয়ে তার পেটের ভুরি বের করে দেয়া হয়। নির্মমভাবে কোঁপানোর ফলে খোকন পঙ্গুত্ববরণ করে। বর্তমানে খোকন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
আঙ্গারিয়া এলাকায় রাজন ও রাজিবের নির্যাতন, উত্যক্ত ও ইভিটিজিংয়ের শিকার হয়েছে অনেক পরিবার। স্কুল ও কলেজের মেয়েরা তাদের উত্যক্তের শিকার হয়ে পড়াশুনা বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া নির্যাতিতার পরিবারগুলো তাদের মেয়েদের অন্য এলাকায় নিয়ে বিয়ে দিতে হয়। বিমান সাহার মেয়ে পিংকি, মন্নান মাস্টারের মেয়ে রুমা, ফরিদ গাজীর মেয়ে লাকি, ফিরোজ গাজী মেয়ে লুচিসহ বহু পরিবার রাজন ও রাজীবসহ তাদের সহযোগীদের নির্যতানের শিকার হয়েছে। এছাড়া আঙ্গারিয়ার স্কুল শিক্ষক নুরুন্নাহারকে প্রায় সময় পথরোধ করে উত্যক্ত করে রাজন ও রাজীবসহ তাদের সহযোগীরা। একই এলাকার ফজলুল হক মাস্টারের উপর রাজন মসজিদের মধ্যে বসে মারধর করা হয়। শত অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েও এসব মানুষগুলো কোনদিন রাজনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করার সাহস পাননি। মুখ বুঝে সব শিকার করে আল্লাহর কাছে বিচার চেয়েছেন তারা।
আঙ্গারিয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে বালু ব্যবসায়ী মানসুর আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী রাজন ও রাজীবসহ তাদের সহযোগীরা মানসুরের নিকট মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দিলে মানসুরকে এলাকা থেকে উৎখাত করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। মানসুর আরো জানান, পুরো দুমকিতে রাজন, রাজীব ও তার সহযোগীরা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। পুলিশ প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন তাদের অত্যাচার-নির্যাতনের পরিমান বেড়ে যাচ্ছে।
এসব বিস্তর অভিযোগে বিষয়ে রাজনের নিকট জানতে তিনি নিজেকে একজন সমাজসেবক হিসেবে পরিচয় দেন। এছাড়া রাজনৈতিক চলার পথে কিছু ছোটখাট ভুলত্রুটি থাকতেই পারে বলে জানান। তবে চাঁদাবাজির বিষয়টি আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রভাবে করা হয়েছে।
দুমকি উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির জানান, রাজনের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ থাকলেও সবগুলো অভিযোগ সত্যি নয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালাম মৃধা জানান, রাজন রাজন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় তার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
Leave a Reply