কলাপাড়ায় অবৈধ বাঁধ কেটে দিয়ে গ্রামবাসীদের জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করলেন ইউএনও Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




কলাপাড়ায় অবৈধ বাঁধ কেটে দিয়ে গ্রামবাসীদের জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করলেন ইউএনও

কলাপাড়ায় অবৈধ বাঁধ কেটে দিয়ে গ্রামবাসীদের জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করলেন ইউএনও




তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ॥  পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে পানি নিস্কাশনের প্রধান পাখিমারা খালে অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় বর্ষা মেীসুম শুরু হলেই বছরের পর বছর ধরে পানিবন্দী হয়ে পড়ে শতশত পরিবার।

পানিতে তলিয়ে থাকে প্রায় তিনশ একর আবাদি জমির ফসল। মরে যায় গাছপালা। বছরের প্রায় ছয় মাস এভাবে জলাবদ্ধ থাকায় এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদূর্ভাব বৃদ্ধিসহ মশার উপদ্রব শুরু হয়। এ দূর্ভোগ থেকে রক্ষার জন্য কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার বিকালে থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমানের নেতৃত্বে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অনুপ দাস পাখিমারা খাল পরিদর্শণ করে শতশত গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে দীর্ঘ বছর ধরে আটকে রাখা খালের বাঁধ কেটে খালটি উম্মুক্ত করে দেন।

কলাপাড়ার সবজি ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত নীলগঞ্জ ইউনিয়নে ধান চাষের পাশাপাশি সারা বছরই বিভিন্ন ধরণের সবজির চাষাবাদ হয়। কিন্তু এ চাষের জমির পানি নিস্কাশনের পাখিমারা খালের বিভিন্ন পয়েন্টে মাছ চাষের জন্য বাঁধ দিয়ে আটকে রাখায় ১০টি গ্রামে বর্ষা হলেই দেখা দেয় স্থায়ী জলাবদ্ধতা। পানিতে মরে যায় শতশত একর জমির ফষল।

প্রতিবছর বর্ষা শুরুর সাথে সাথে এ দূর্ভোগ শুরু হলেও প্রভাবশালীরা খালটি আটকে মাছ চাষ করায় গ্রামবাসীর দূর্ভোগে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ভূমি প্রশাসন ছিল নীরব।

পাখিমারা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ্য সুজন রায়, মিঠুন হাওলাদার বলেন,বাড়ির উঠান থেকে শুরু করে মাছ চাষের পুকুর ডুবে রয়েছে কয়েক ফুট পানিতে। এ দূর্ভোগ তাদের নিত্যদিনের। স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েদের গোটা বর্ষা মৌসুমে এভাবে কাঁদা,পানি ভেঙ্গে স্কুলে যেতে হয়। ডুবে রয়েছে ফষলের ক্ষেত। এ দূর্ভোগ থেকে রক্ষার জন্য গ্রামবাসীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করলে তিঁনি সরেজমিনে পরিদর্শণ করে তাৎক্ষণিক বাঁধ কাটার নির্দেশ দেন। ক্ষতিগ্রস্থ্য গ্রামবাসীরা প্রশাসনের উপস্থিতিতে বাঁধগুলো কেটে দেয়। এ বাঁধ কেটে দেয়ায় খুশি হাজারো মানুষ উল্লাস প্রকাশ করেন।

এছাড়া প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ কুমির মারা গ্রামের যুগীরখালের বিভিন্ন পয়েন্টে ও স্লুইজের মুখে মাছ ধরার জন্য পাঁচজন প্রভাবশালী জাম্বো জাল পেতে রেখে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করায় জাল আটক করে জনসম্মুখে পুড়িয়ে ফেলা হয।

স্থানীয় কৃষক জাকির হোসেন, সুলতান আহম্মেদ ও আবু বকর মৃধা বলেন, য়ুগীর খালের শাখা খালগুলো বাঁধ দিয়ে অনেক অংশে ভরাট করে এখন চাষাবাদ করা হচ্ছে। তারা এ খালটি উদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করেছেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউএনও সরেজমিনে ঘুরে দেখে কুমিরমারা ও মজিদপুর গ্রামের পানি নিস্কাশনের প্রধান ভাঙ্গা স্লুইজগেটটি মেরামত ও প্রবাহমান খালের বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে খালটি ভরাট করে ফেলায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে খালের সকল বাঁধ অপসারণের নির্দেশ প্রদান করেন।
একইদিন সন্ধায় চাকামইয়া ইউনিয়নের দিত্তা বাজার এলাকায় স্লুইজের মুখ আটকে পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মাছ শিকারের জাল পাতায় রাক্ষুসী বেহুন্দী জাল আটক করে পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং স্লইজ গেটটি উম্মুক্ত করে দেয়া হয়।

উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ্য গ্রামবাসী ও কৃষকদের অভিযোগ, কলাপাড়া উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার মধ্য দিয়ে বহমান শতাধিক খালের প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঁধ দিয়ে দখল করে নিয়েছে খাল সংলগ্ন প্রভাবশালীরা।

এ কারণে বর্ষা মেীসুৃম শুরু হলেই চাষাবাদের জমির পানি নিস্কাশন হতে না পারায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয। একাধিক খালের মধ্যে পাকা স্থাপনা নির্মান করে যুগ যুগ ধরে বসবাস করছে প্রভাবশালীরা। মাছ চাষের জন্য দখল করা হয়েছে অর্ধশত স্লুইজ। এ খাল দখল উচ্ছেদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেতে দশ দিন আগে মাইকিং করা হলেও বাঁধ অপসারণ না করায় সোমবার বিকাল থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে উপজেলা প্রশাসন।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া ভূমি অফিসের তহশীলদার জব্বার হোসেন বলেন, যেসব খালে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ প্রতিবন্ধকতা করা হচ্ছে তালিকা করে সবগুলো বাঁধ কেটে ফেলা হবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বলেন, কলাপাড়া উপজেলার সকল প্রবাহমান খালের বাঁধ অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছিলো নিজ উদ্যোগে বাঁধ অপসারণের। কিন্তু খালের বাঁধ অপসারণ না করায় সোমবার থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে এ বাঁধ অপসারণ ও পানি নিস্কাশনের স্লুইজগুলো উম্মুক্ত করে দেয়া হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD