শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:০১ অপরাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধি॥ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রশাসন যখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠিক তখনই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাদের সহযোগিদের নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূর্ব পুরুষদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে ব্যক্তি সুবিধার্থে জোরপূর্বক হুমকি দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। পরবর্তীতে বাঁধার মুখে রাস্তা নির্মান কাজ বন্ধ করা হলেও প্রভাবশালীরা রাতের আঁধারে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তিতে থাকা গাছ কর্তনের জন্য লাল রং দিয়ে চিহ্ন দিয়েছেন। এনিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পরেছে। যেকোন সময় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বরাকোঠা ইউনিয়নের মালিকান্দা গ্রামের। সরেজমিনে ওই গ্রামের কমল কান্ত রায়, বিধান রায় ও লিটন বাড়ৈসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, তাদের বসতবাড়ির পাশদিয়ে দীর্ঘদিন যাবত যাতায়াত করে আসছিলেন মালিকান্দা গ্রামের কয়েকটি পরিবার।
অতিসম্প্রতি সেখানে দিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ওই গ্রামের মিন্টু রাঢ়ী, জুয়েল রাঢ়ী ও বাবুল বেপারীর সহায়তায় জমির মালিকদের না জানিয়ে স্থায়ীভাবে রাস্তা নির্মানের জন্য ৪০দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে মাটি খোড়ার কাজ শুরু করেন। এ সময় তাদের বাঁধা প্রদান করায় জমির মালিকদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করা হয়।
একপর্যায়ে রাস্তা নির্মান কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলেও প্রভাবশালীরা রাতের আঁধারে হিন্দু সম্প্রদায়ের জমির উপরে থাকা অসংখ্য গাছ কর্তনের জন্য রং দিয়ে লাল চিহ্ন দিয়েছে। ফলে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় ও কয়েকটি মুসলমান পরিবারের লোকজন রাস্তা নির্মানের পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান করায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের আশংকার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় লিটন বাড়ৈ জানান, নদী ভাঙ্গণে তাদের ঘরবাড়ি বিলিন হয়ে যাবার পর বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সম্প্রতি সময়ে মালিকান্দা গ্রামে চার শতক জমি ক্রয় করে ঘর নির্মান করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। সেই চার শতক জমির মধ্যদিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মানের জন্য কাজ শুরু করা হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তির মধ্যদিয়ে নির্মানাধীন রাস্তাটি সরকারী রেকর্ডিয় নয় দাবি করে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোসেন বেপারী জানান, মালিকান্দা গ্রামের প্রায় ২০টি পরিবারের সদস্যরা চারফুট গলিপথ দিয়ে যাতায়াত করতো। রাস্তাটি প্রশস্ত করার কাজ শুরু করলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনে বাঁধা প্রদান করেন। ফলে রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আতঙ্ক বা আশংকার কিছু নেই।
এমনকি কাউকে ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছেনা। তিনি আরও জানান, বিষয়টির সমাধানের জন্য উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জমির মালিকদের সাথে সমঝোতা হলে ৪০দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে।
Leave a Reply