রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ অপরাহ্ন
এস.এম তুষারের কলাম ॥
২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলা রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কময় অধ্যয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা সংঘটিত করা হয়েছিলো। বহুল আলোচিত এবং প্রতিক্ষীত এই মামলার রায়ে বিএনপির সিনিয়ার যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। এতে আওয়ামী লীগ সন্তুষ্ট নয়। দলের সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের অসন্তুষ্ট’র বিষয়টা প্রকাশ্যেই বলেছেন। কিসে সন্তুষ্ট হতো ? তারেক রহমানের ফাঁসির রায় দিলে সন্তুষ্ট হতো। মহামান্য আদালত যে রায় দেয় সেটা বুঝে শুনেই দেয়। এই বোঝা শোনাটা অবশ্যই বিচারকের মন গড়া নয়।
সাক্ষ্য-প্রমান ভিত্তি করে। সেখানে তারেক রহমানের ফাঁসি হলে সন্তুষ্ট হতাম – প্রচ্ছন্ন এমন ধারনা ব্যক্ত করা মানে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ব্যক্ত করা। অর্থাৎ রায় যাই হোক তার ফাসিঁ হলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পথটা মসৃন হবে। কোন সন্দেহ ছাড়াই ২১ আগষ্টের হত্যাযজ্ঞ অপরাধ না একটা পাপ ! জাতির প্রয়োজন এই পাপ থেকে মুক্ত হওয়া। শুরুতেই পর্যবেক্ষক মহল মনে করেছিলো সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর বিএনপিরই দাবার ঘুটিঁ। এরপর যা থাকে তা হলো, ২১ আগষ্ট কি পাকিস্তানের নীল নকশা ? যা বাস্তবায়নের জন্য হরকাতুল জিহাদ এবং বিএনপি মাঠে নামে ? নাকি এটা বিএনপির নীল নকশা যাতে ইন্ধন জোগায় পাকিস্তান এবং হরকাতুল জিহাদ ? বিষয়টা আমরা সোজা বাংলায় জানিনা। রাশিয়ানদের একটা প্রবাদ আছে, কম জানলে ঘুমটা জমে। তাই কম জানি। তবে তারেক রহমানের ফাঁসির আদেশ দিলে তা কার্যকর করা সরকারের কাছে অসম্ভববের পর্যায়ে কঠিন হতো। কারন তিনি আছেন কানাডা-ইংল্যান্ড নিয়ে অর্থাৎ ইউরোপ- আমেরিকার জনকল্যানমূলক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক আশ্রয়ে যারা মৃত্যূদন্ডের বিরোধী।
এখন যেহেতু তাকে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে সেহেতু তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার এখন ইংল্যান্ড-কানাডার সাথে নেগোসিয়েশনের পর্যায়ে আছে। খুন কেস যেহেতু কোন সময়ে কোন অবস্থাতেই তামাদি হয়না সেহেতু কোনরকমে দেশে আনতে পারলে তারেক রহমানের মামলা পূনর্মূল্যায়নে এনে তার বিরুদ্ধে ফাঁিসর রায় দেয়া অসম্ভববের পর্যায়ে পড়ে না। ২১ শে আগষ্টের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের আলামত শুধু গায়েব না ধুয়ে মুছে সাফ করা হয়েছে। তাই এ মামলায় সারকামস্ট্যানসিয়াল এভিডেন্স বা ধারনাকৃত আলামত একটা বড় তথ্য-উপাত্ত। ভৌগলিক রাজনীতিতে চীন বাংলাদেশের জন্য যে কোন সময়ে মারাত্মক বিপদের কারন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সামরিক রাজনীতির দ্বারা দিল্লিকে ব্যস্ত রাখতে বাংলাদেশ একটা নিরাপদ ট্রানজিট। এক্ষেত্রে বেজিং ভরসা করে বিএনপির উপর।
কিন্তু বিগত ক্ষমতার আমলে বেজিং’র দশ ট্রাক অস্ত্র বিএনপি জায়গামত পৌছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যার দরুন বেজিং এখন এতদ্অঞ্চলের মাওবাদীদেরকে হাত করতে চাইছে অর্থÑঅস্ত্র দিয়ে। কিন্তু পূর্বাঞ্চলের মাওবাদীরা বেজিংকে বিরোধীতা করে এই মর্মে যেÑ মাও এবং চীন দুইটা আলাদা বিষয়, দেং জিয়াও পেং থেকে চলমান সময় চীন একটা সামাজিক সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র। যথার্থ মাওবাদীদের অন্যমত করনীয় বেজিংকে বিরোধীতা করা।
এমতবস্থায় বেজিং এখন কোন লাইনে ভৌগলিক-সামরিক-রাজনৈতিক দিকে অগ্রসর হবে সেটাই এখন দেখবার বিষয়। দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে চীন বাংলাদেশকে অকাতরে সাহায্য দিয়ে আসছে শুধুমাত্র আসাম-মেঘালয়-মিজোরাম-মনিপুরÑত্রিপুরাÑনাগাল্যান্ডÑঝাড়খন্ড’র রুটটা মসৃন রাখার জন্য। কিন্তু এই বাংলাদেশতো আর সেই বাংলাদেশ না, অর্থ, অস্ত্র, দক্ষ জনশক্তিতে বলীয়ান! চাইলেই যে কারো বন্দুক ঘাড়ে রাখতে দিবেনা। প্রয়োজন শুধু যথেষ্ট বিপ্লবী চেতনা এবং দেশপ্রেম। বাংলাদেশের চারিদিকে এখন রুশ-ভারতÑমার্কীন-চীন..
Leave a Reply