রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ ঝালকাঠির রাজাপুরে আব্দুল খালেকের স্ত্রী হোসনেআরা বেগম বকুল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তার শরীরে থাকা স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন আসামি শাকিল ভূঁইয়া। রিমান্ডে পুলিশের কাছে হত্যার কারণ ও দায় স্বীকার করেছেন শাকিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজাপুর থানার এসআই শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেতারকৃত শাকিল ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জের গোগনগর মশিনাবান্ধ গ্রামের বড় মসজিদ এলাকার শাহিন ভূঁইয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, রিমান্ডে শাকিলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধাড়ালো চাকু, পরিত্যক্ত ঘরের চাবি, নিহত বকুলের হাতের বালা ও একটি আংটির গলানো সোনার পিণ্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের পাশেই মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় চাকু এবং একটি পরিত্যক্ত জমির ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে চাবি উদ্ধার করা হয় বলে এসআই শাহ আলম জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ১৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ ভূঁইয়াপাড়ায়র চাচাতো ভাই লিটনের বাসা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়। ২০ আগস্ট ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। বুধবার (২৫ আগস্ট) রিমান্ড শেষে শাকিলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসআই শাহ আলম জানান, নারায়ণগঞ্জের শাকিল ও ঝালকাঠির দক্ষিণ রাজাপুরের বলাইবাড়ি এলাকার কাঞ্চন ফরাজির মেয়ে মনিকা একই গার্মেন্টসে চাকরির সুবাদে প্রেম করে বিয়ে করেন। বিয়ের পর শাকিল স্ত্রী নিয়ে রাজাপুর বাইপাস এলাকায় ভাড়া থাকাকালীন হোসনেআরা বেগম বকুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়লে শাকিল ঝালকাঠিতে বাসা ভাড়া নেয় এবং সেখানেও ঋণগ্রস্ত হলে ৭ আগস্ট রাজাপুর টিঅ্যান্ডটি সড়কের একটি বাসায় ভাড়া ওঠে। একই এলাকায় থাকার সুবাদে শাকিল ও বকুলের একে অপরের বাসায় যাতায়াত ছিল।
তিনি আরো জানান, শাকিল ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য বকুলের স্বর্ণালঙ্কারের লোভে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় বকুলকে তার পরিত্যক্ত ঘর ভাড়া দেওয়ার জন্য দেখানোর নামে সেই ঘরে নিয়ে যায়। বকুল তালা খুলে ঘরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই শাকিল তার গলা চেপে ধরে এবং চাকু দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর বকুলের শরীরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ঘরে তালা দিয়ে রাতেই নারায়ণগঞ্জে পালিয়ে যায়। পথে লঞ্চে বসে বকুলের মোবাইল নদীতে ফেলে দেয় সে। নারায়ণগঞ্জ গিয়ে ছদ্মবেশ ধরতে মাথা ন্যাড়া করে ফেলে। পরদিন (১৪ আগস্ট) পুলিশ ওই পরিত্যক্ত ঘর থেকে বকুলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। ওই রাতেই বকুলের ছেলে শফিকুল ইসলাম লিটন অজ্ঞাতদের আসামি করে রাজাপুর থানায় মামলা করেন। এর চারদিন পর গ্রেফতার হয় শাকিল ভূঁইয়া।
Leave a Reply