সুদের যন্ত্রণায় দক্ষিণাঞ্চলের নৌকার কারিগর Latest Update News of Bangladesh

শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫১ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আব্দুল গফুরের ওপর হামলা, উত্তাল তজুমদ্দিন সড়ক চিন্ময়-ইসকন ইস্যু: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিয়ে ভারতের কড়া বার্তা বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : চরমোনাই পীর আত্মা পরিশুদ্ধ না হলে মানুষ ভালো ও পুণ্যের কাজ করতে পারে না: ছারছীনার পীর ছাহেব ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ঝালকাঠিতে বিক্ষোভ দীর্ঘ বিরতির পর শাবনূরের পর্দায় ফেরা, রূপে নতুন পরিবর্তন দেশে পরিকল্পিত নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চলছে: তারেক রহমান চলমান সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য গড়ার বিকল্প নেই: বিএনপি মহাসচিব চরমোনাই বার্ষিক মাহফিল শুরু: আধ্যাত্মিক মিলনমেলায় লাখো মুসল্লির সমাগম চট্টগ্রামে আইনজীবী নিহতের ঘটনায় ঝালকাঠিতে বিক্ষোভ




সুদের যন্ত্রণায় দক্ষিণাঞ্চলের নৌকার কারিগর

সুদের যন্ত্রণায় দক্ষিণাঞ্চলের নৌকার কারিগর

সুদের যন্ত্রণায় দক্ষিণাঞ্চলের নৌকার কারিগর




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ গ্রীষ্মের তাপ প্রবাহের পরে আসে বর্ষাকাল। বর্ষায় দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামগুলো সেজেছে প্রকৃতির নতুন সাজে।তবে গ্রামের মানুষদের কারো কাছে বর্ষা আশির্বাদ আবার কারো কাছে ভোগান্তির। বিশেষ করে বর্ষায় নদ-নদী, খাল-বিলের পানি বাড়ায় গ্রামীণ মানুষের চলাচল ব্যাহত হয়। সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও গ্রামীণ প্রত্যন্ত জনপদে চলাচল ও জীবন-জীবিকা নির্বাহ এবং পণ্য পরিবহনের জন্য এখনো নৌকার ওপর নির্ভরশীল বেশিরভাগ মানুষ। আর বর্ষায় নৌকার কদর বেড়ে যায় গ্রামীণ জনপদে। যতো পানি বাড়ে ততই যেন নৌকার কদর বাড়ে। ফলে গ্রামীণ জীবন-যাপনকে ঘিরে নৌকা তৈরির কারিগরদেরও ব্যস্ততা, কর্মচাঞ্চল্যতা বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

 

 

বরিশাল বিভাগের মধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলা ও পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার কাঠের তৈরি নৌকা বেশ জনপ্রিয়। আর এ জনপ্রিয়তার কারণে এসব অঞ্চলের নৌকার কারিগরদের কদরও বেশি। আবার তাদের দেখে এ পেশায় জড়িয়ে পরেছেন আশপাশের বানারীপাড়া, উজিরপুর উপজেলার মানুষও। তবে দ্রব্যমূল্য বাড়ায় ও নৌকা তৈরি মালামাল বিক্রি করে লাভ বেশি না হওয়ায় হতাশায় দিন পার করছেন কারিগররা। তারপরও করোনা ভাইরাস মহামারিতেও সাধ্যমত দক্ষিণাঞ্চলের নৌকার কারিগররা তৈরি করেছেন পেনিস ও গলুই নৌকা।

 

 

নৌকা তৈরি করছেন এক কারিগর।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের ছয়মাস নৌকার চাহিদা থাকে। এ সময়টাতে প্রত্যেক কারিগররা চান নৌকা তৈরি করে পুরো বছরের জীবিকা নির্বাহ করতে। এজন্য দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন এসব কারিগররা। তবে যারা সাড়া বছরের উপার্জন মেটাতে পারেন না তাদের বছরের বাকি ছয়মাস সংসার চালানোর নেপথ্যে কাজ করে থাকে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম। কারণ অধিকাংশ নৌকার কারিগর নির্ভরশীল ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের ওপর।

 

 

ফরিয়া চাইলে নৌকার কারিগরকে ভালো রাখতে পারেন আবার তিনি চাইলে পথের ফকিরেরও রূপ দিতে পারেন। যদিও যেসব কারিগর ঘর নির্মাণসহ বিকল্প কাজ জানেন তাদের জীবনের চিত্রটা কিছুটা ভিন্ন।আর মাত্র এক বছরের সময়ের ব্যবধানে এমন উত্থান বা পতন হতে পারে বলে জানান নেছারাবাদ উপজেলার ডুবি গ্রামের নৌকার কারিগর হাসান।

 

 

তিনি বলেন, ডুবি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের পেশা নৌকা তৈরি করা। কিন্তু এসব কারিগরদের যন্ত্রাদি ছাড়া আর কিছুই নেই। এমনকি সরঞ্জাম কিনে নৌকা তৈরি করবেন সে অর্থ তাদের নেই। এ সুযোগে ফরিয়ারা ও দাদনদারা কৌশলে মূলধন খাটায়। মৌসুমের শুরুতে তারা ঘরে ঘরে গিয়ে টাকা কর্জ দেন। কর্জের এ টাকা দিয়ে নৌকা তৈরির জন্য গাছ ক্রয় থেকে শুরু করে স-মিলে নিয়ে কাঠ তৈরি করে বাড়িতে আনেন কারিগররাই। এরপর কারিগররা শ্রম ও মেধা দিয়ে নৌকা তৈরি করেন। কর্জ দেওয়া নির্ধারিত ফরিয়াদের হাত ধরেই চলে যায় এসব কারিগরদের তৈরি নৌকা মোকাম ও হাটে। আর কর্জের সুদের টাকা শোধ, নিজের সংসার চালানোর খরচ গুছিয়ে রাখতে হয় কারিগরদের।

 

 

তৈরি করা নৌকা।ফরিয়াদের কাছে যে টাকায় নৌকা বিক্রি করতে হয়, তাতে শ্রমের মূল্যই উঠাতেই হিমশিত খেতে হয় জানিয়ে নৌকার কারিগর আজাহার বলেন, আমরাতো দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে নৌকা পাইকার বা ফরিয়ার কাছে তুলে দেই। সেই নৌকাই মোকামে বিক্রি হয় তিন থেকে সাত হাজার টাকায়। এতে আমাদের ঝুলিতে কিছু না জমলেও ফরিয়াদের ঝুলি ঠিকই ফুলছে।

 

 

যদিও মোকামে সরাসরি নৌকা বিক্রিতে অনীহা আছে খোদ কারিগরদের। নৌকার কারিগর সাইদুল বলেন, নৌকা মোকামে নিতে বেশ ঝক্কি-ঝামেলার ব্যাপার। পুরো একদিন নষ্ট হয়ে যায় হাট-বাজারে আসা-যাওয়া করতেই। তার ওপর নৌকা বিক্রি হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় থেকে যায়। তার চেয়ে ভালো পাইকার বা ফরিয়া এসে নৌকা নিয়ে যাওয়া। তাতে হাট-বাজারে আসা-যাওয়া করতে যে সময়টা বাঁচে তাতে নতুন দু’টো নৌকা বানানো যায়।

 

 

আগৈলঝাড়া উপজেলার বাশাইল গ্রামের বাসিন্দা ও কারিগর সুশীল দাস জানান, স্থানীয়রা ছাড়াও নেছারাবাদ, বানারীপাড়া, উজিরপুর, মাদারীপুর থেকে নৌকা কিনতে পাইকাররা আসেন। এসব পাইকাররা বাড়িতে-বাড়িতে গিয়ে নৌকা কিনে নিয়ে যান অন্যত্র বিক্রির জন্য। এক্ষেত্রে ঝক্কি-ঝামেলা তাদেরও কম হয়।

 

 

তবে করোনায় এবারের মৌসুমের শুরুতে নৌকার বাজার মন্দা হওয়ায় হতাশায় রয়েছেন এ অঞ্চলের নৌকা তৈরির কারিগররা। তাদের মতে মধ্যস্বত্বভোগী ও দাদনদারদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে পেশা টিকিয়ে রাখতে হয়। এসব নৌকা তৈরির কারিগদের সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসা করা অনেক কঠিন। তাদের দাবি সরকারি উদ্যোগে নৌকা তৈরির ওপর সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পেলে এসব কারিগরদের দিন ভালো কাটবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD