সাদিক আব্দুল্লাহকে দুরচিন্তায় রেখে গেলেন শাহে আলম মুরাদ! Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




সাদিক আব্দুল্লাহকে দুরচিন্তায় রেখে গেলেন শাহে আলম মুরাদ!

সাদিক আব্দুল্লাহকে দুরচিন্তায় রেখে গেলেন শাহে আলম মুরাদ!




স্টাফ রিপোর্টার:বরিশালে দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় এসে ঘটনাচক্রে পুলিশ কমিশনারের ওপর চড়াও হলেন দক্ষিন ঢাকা আওয়ামী লী নেতা শাহ আলম মুরাদ। একটি যাত্রীবাহি লঞ্চের কেবিনে এই নেতা প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার মর্যাদার এক কর্মকর্তাসহ তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন। এমনকি ওই সময় পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজুর রহমান ছুটে গেলে তাকেও শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মামলায় ১ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ থেকে ২৫ অজ্ঞাত আসামি করে ২৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ওদিকে এই ঘটনা গণমাধ্যম মারফত ও লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে নগরীতে। একইসাথে অস্ত্রধারীদের নেতৃত্বদানকারী ঢাকা দক্ষিণ আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদের নামযোগে উঠে আসে চলমান সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গ। অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর পক্ষে প্রচারণা চালাতে এসে বরংছ ক্ষতি করে গেছেন প্রভাবশালী এই নেতা। সমালোচকদের ভাষ্য, নির্বাচনের প্রাক্কালে পুলিশের সাথে অস্ত্রবাজী করায় আ.লীগ নেতাকর্মীরা চাপে থাকবেন। এদিকে সমালোচনায় পরেছেন বরিশাল মেট্রােপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারাও।শুধুমাত্র ক্ষমতাশীনদের প্রভাব খাটিয়ে আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীর সাথে মাস্তানি করে যাওয়ার পরও পুলিশ তাৎক্ষণিক কিছু না করতে পারায় ইমেজ সংকট দেখা দিচ্ছে।

টক অব দ্য টাউন ওই ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার সন্ধ্যারাতে বরিশাল লঞ্চ টার্মিনালে নোঙরকারী সুন্দরবন ১১ লঞ্চের ভিআইপি কেবিনে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঢাকা দক্ষিন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ সুন্দরবন ১১লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের সম্মুখে অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান করছিলেন। প্রায় একই সময় ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মেদ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান লঞ্চঘাটে যান। সরকারী এই কর্মকর্তাদের প্রটোকল দিতে সেখানে গিয়েছিলেন ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম ও পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজুর রহমান। কিন্তু ঘটনাচক্রে সচিবকে পিছু ফেলে পুলিশের এই দুই কর্মকর্তা চলে যান লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের লাউঞ্জে।

সেখানে গিয়ে দেখতে পান অর্ধশতাধিক লোকের মধ্যে বসেছিলেন আ’লীগ নেতা শাহ আলম মুরাদ। এই নেতার সাথে থাকা অপরাপর বেশ কয়েক ব্যক্তি পিস্তল হাতে নিয়ে নানা অঙ্গভঙ্গি করছিলেন। সেই দৃশ্য দেখে কমিশনারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি জানতে চান এবং পিস্তলের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য কাগজপত্র চান।

কিন্তু আ’লীগ নেতা শাহ আলম মুরাদ ও তার সাথে থাকা লোকজন পুলিশকে কোন ধরনের কর্ণপাত না করে উল্টো বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরেন। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ কমিশনারের দেহরক্ষী ছুটে গিয়ে তাদের দ্রুত স্থান ত্যাগের অনুরোধ করেন। তুমুল বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে শাহ আলম মুরাদের সাথে থাকা সৈকত ইমরানসহ ২০ থেকে ২৫জন একত্রিত হয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম ও দেহরক্ষী হাসিবকে এলোপাতারি মারধর করেন। উদ্বুদ্ব পরিস্থিতিতে পুলিশ কমিশনার চেয়েছিলেন সকলকে বের করে দিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার। কিন্তু ক্ষুব্ধ শাহ আলম ও তার বাহিনী পুলিশ কমিশনারকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে শাহ আলম কমিশনারকে লাঞ্চিত করেন বলে প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান এই চিত্র ক্যামেরায় ধারন করতে গেলে কমিশনারের সঙ্গি ওবায়েদকেও মারধর করে তারা। একপর্যায়ে তার সাথে থাকা ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে শাহ আলমের লোকজন। আ’লীগ নেতার পুরো সন্ত্রাসের চিত্র লঞ্চের অনেক যাত্রীকে হতাশ-বাকরুদ্ধ করেছে।

পরিস্থিতি বেগতিক অনুমানে নিয়ে পুলিশ কমিশনার বিএমপি কন্ট্রোল রুমে দ্রুত ফোন করে ঘটনাস্থলে আরও পুলিশ ডেকে নেয়। কিন্তু বরিশাল পুলিশ চাইছিল না সরকারের দুই জন সচিবের উপস্থিতিতে এই ধরনের বিষয় প্রকাশ্যে আসুক। যে কারণে ঘটনার পর সকলকে গ্রেফতারের প্রস্তুতি নিতে লঞ্চটি থামিয়ে রাখা হলেও পরবর্তীতে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তবে একটি সূত্র দাবি করছে, এই ঘটনার পর বিষয়টি তাৎক্ষণিক শাহ আলম মুরাদ কেন্দ্রীয় আ’লীগের প্রভাবশালী একনেতাকে মুঠোফোনে অবহিত করেন। এর পরেই কমিশনারের মোবাইল ফোনে কোন ব্যক্তি বিশেষ ফোন করে কথা বলেন। মূলত মুঠোফোনে আলাপচারিতার পরই বরিশাল পুলিশ গ্রেফতারের মতো কোন ঘটনার দিকে না গিয়ে লঞ্চটি ছেড়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা লঞ্চের যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এই লঞ্চে ঢাকার যাত্রা নিরাপদ নয় মনে করে টার্মিনালেই নেমে যান। যদিও লঞ্চটি ছেড়ে দেওয়ার আগেই পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান পুরো ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র সিসিটিভি থেকে সংগ্রহ করে রাখেন বলে শোনা গেছে।

এই বিষয়টি নিয়ে রোববার দিনভর বরিশাল পুলিশে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইলেও দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা মুখ খোলেন নি। এমনকি সংশ্লিষ্ট কোতয়ালি থানা পুলিশও বিষয়টি স্বীকার করছে না। তবে গভীর রাতে পুলিশের একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে- এই ঘটনায় শাহ আলম মুরাদের নাম উল্লেখ না করে সৈকত ইমরানের নাম উল্লেখ করে ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নাম্বার ৩৩/১৮। তারিখ ১৫ জুলাই। মামলায় তাদের ১৪২/১৪৩/১৮৬/৩৫৩/৩৩২/৩৩৩/৩০৭ ও ৩৪ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার অনুঘটক শাহ আলম মুরাদকে কেন নামধারী আসামি করা হচ্ছে না সেই সম্পর্কে বরিশাল পুলিশের পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য আসেনি। তাছাড়া অভিযুক্তদের সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।

তবে এই ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা এক আ’লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবি করেন- পুলিশ কমিশনার শাহ আলম মুরাদকে সঙ্গীদের নিয়ে বসে থাকতে দেখতে পান। ওই সময় তাকে দেখে কেন আ’লীগ নেতারা উঠে দাড়ালেন না এই বিষয়টিতে তিনি ক্ষুব্ধ হন। মূলত এই কারণেই তর্কাতর্কির একপর্যায়ে এই উদ্বুদ্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় সুন্দরবন-১১ লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে। তবে তারা ভিআইপি লাউঞ্জে কিছু একটা হয়েছে বলে জানালেও কি হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে দাবী করেছেন।

তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ঢাকা থেকে আসা কতিপয় বাজে ছেলেপান তাদের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

দায়েকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয়, জন প্রশাসন মন্ত্রনায়লের সচিব ফয়েজ আহম্মেদ ও প্রাধনমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসানকে বিদায় জানানোর জন্য বরিশাল কেন্দ্রীয় লঞ্চঘাটে অস্থান রত সুন্দরবন ১১ লঞ্চে যায় বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি শফিকুল ইসলাম (বিপিএম পিপিএম) ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মহফুর রহমান। এসময় তারা লঞ্চের ভিআইপ লাউঞ্জে প্রবেশ করেই দেখতে পায় দাড়িওয়ালা মধ্য বয়সী এক ব্যাক্তি একটি বড় অস্ত্র হাতে নিয়ে সোফার উপরে বসে আছে। এসময় ডিআইজি ও পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) তাদের নিজেদের পরিচয় দিয়ে ভিআইপ লাউঞ্জে উপস্থি ভিআইপ যাত্রী ব্যতীত অতিরিক্ত লোকজনেক সংরক্ষিত এলাকাছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে এবং ভিআইপি লাউঞ্জে দুই সচিব আসার বিষয়ে অবহিত করেন।

এসময় পুলিশ কমিশনারের স্টাফ অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম নির্বাচন ও দুই সচিবের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অস্ত্রধারী ওই ব্যাক্তিকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি তার অস্ত্রের লাইসেন্স না দেখাতে চাইলে পুলিশ কমিশনারের দেহরক্ষী কনস্টেবল হাসিব ওই ব্যক্তিকে ভিআইপি লাউঞ্জথেকে বাহিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। অনুরোধে ক্ষিপ্ত হয়ে অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তির সাথে থাকা সৈকত ইমরান নামের এক ব্যাক্তি কমিশনারের দেহরক্ষীর সাথে তর্ক-বিতর্কে জড়ায়। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে অস্ত্রধারী ব্যাক্তি ও সৈকত ইমরান উত্তেজিত হয়ে তাহাদের সাথে থাকা সঙ্গীদের নিয়ে পুলিশ কনস্টেবল হাসিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে পথরোধ করে এলোপাথারী মারপিট করে। এসময় পুলিশ কমিশনারের স্টাফ অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম তাহাদের থামাতে চেষ্টা করলে কনস্টেবলসহ তার উপর এলোপাথারীভাবে মারপিট করতে থাকে। মারপিটে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলা, ফুলা জখম কলে। এসময় তারা তাদের পরিচয় দিয়ে বলে, আমরা পুলিশে লোক, আমারা এখানে সরকারী নিরাপত্তার কাজে এসেছি। পরিচয় দেয়ার পরেও অস্ত্রধারী ব্যক্তি ও তাহার সাথে থাকা সৈকত ইমরানসহ আরো ২০থেকে ২৫ জনে মিলে তাদের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে অস্ত্রধারী ব্যক্তি তাহার অস্ত্র দিয়ে পুলিশ কমিশনারে স্টাফ অফিসার ও বডিগার্ড মোঃ হাসিবকে হত্যার উদ্ধেশ্যে গুলি করারচেষ্টা করে। পাশাপাশি পুলিশ কমিশনারের স্টাফ অফিসাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরন করারচেষ্টা করে। এসময় বিএমপি মিডিয়া বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল ওবায়েদ ঘটনার ছবি তুলতে চাইলে তাকে মারপিট করে ক্যামেরা ছিনিয়েনেয়ার চেষ্টা করে এবং তাকে কগুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।

এক পর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ কমিশনার বিএমপি কন্ট্রোল রুমে জানালে মামলার বাদি এসআই রিয়াজসহ কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার দক্ষিন, কোতয়ালী মডেল থানার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার অতিরিক্তফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রন করে। এসময় উল্লেখিত দুই সচিব লঞ্চে অবস্থান করলেও ভিআইপি লাউঞ্জে ঢুকতে পারছিলোনা। পরে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা উভয় সচিবকে ভিআইপ লাউঞ্জে নিয়ে যায়।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD