মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
লালমোহন প্রতিনিধি॥ ইয়াবা বিক্রি ও অসামাজিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দুই শিশু সন্তানের সামনে বাবাকে নগ্ন করে অমানসিক নির্যাতনকারী হাসানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৭ অক্টোবর) তাকে গ্রেফতার করা হয়।রবিবার (২৭ অক্টোবর) রাতে দুই কন্যা সন্তানের সামনে এক অসহায় পিতাকে রশি দিয়ে বেঁধে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে নির্যাতন করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা গেছে, শত শত মানুষের সামনেই জসীমকে নির্যাতন করা হচ্ছে। তার দুই সন্তানের আত্মচিৎকারেও কারও মন গলেনি।
নির্যাতিত জসীম উপজেলার ডাওরী বাজারে একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবদুল মুন্নাফের ছেলে। তিনি পেশায় মোটরসাইকেল চালক। আর ওই পাষণ্ড নির্যাতনকারীর নাম হাসান। হাসান একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিস্ত্রী বাড়ির আবু ড্রাইভারের ছেলে। তিনি চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি। তার বিরুদ্ধে থানায় চুরি, ডাকাতি, মানবপাচার, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নির্যাতনের ঘটনাটি ভোলার লালমোহন উপজেলার ডাওরী বাজারের। সেখানে অসংখ্য মানুষের সামনে ওই বাবাকে নির্যাতন করা হয়। দুই মেয়ের কান্নায় বাতাস ভারি হলেও নির্যাতন থামেনি। বরং বাবাকে নির্যাতন করতে দেখে কান্না করায় মেয়েদেরও মারের ভয় দেখায়। উপস্থিত লোকজন কেউই এর প্রতিবাদ করেনি।
স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেল চালক জসীমকে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা বিক্রির জন্য নানাভাবে প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন হাসান। জসিম ওই প্রস্তাবে রাজি না হলে ডাওরী বাজারে জনসম্মুখে উলঙ্গ করে তার দুটি শিশুসন্তানের সামনে বিএনপি ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন করেন।
তবে এই ঘটনার জন্য পুলিশ পাষণ্ড হাসানকে গ্রেফতার করেনি। হাসানের বিরুদ্ধে দায়ের করা পুরাতন একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খাইরুল কবির বলেন, ‘হাসান এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি। হাসানের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি, মানবপাচার ও চুরির মামলা রয়েছে। তাকে এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখিত বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘নির্যাতনের ঘটনাটি ২০১৮ সালের। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আরও দেখা যায়, বাবাকে নির্যাতনের দৃশ্য সইতে না পেরে তার সন্তানরা কান্নাকাটি করে। বাবা মরে গেছে ভেবে সন্তানরা আর নির্যাতন না করার আকুতি জানায়। এ সময় হাসান আরও রেগে যায়। সে বলে, কাঁদলে তার বাবাকে আরও মারবে। এ সময় সন্তানরা কিছু সময়ের জন্য চুপ থাকে। পরে তারা কান্না শুরু করলে হাসান আবার মারধর শুরু করে।
Leave a Reply