সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া প্রথম মামলার রায় ঘোষণা করেছে পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দেওয়া রায়ে ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে।
ট্রাইব্যুনাল জানায়, উক্ত তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল, যার সবগুলোতেই মানবতাবিরোধী অপরাধের উপাদান পাওয়া যায়। অভিযোগগুলো হলো—উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা, রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা। রাষ্ট্রপক্ষের শতভাগ সাক্ষ্য–প্রমাণের ভিত্তিতে এ অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রমাণিত হয়।
রাজসাক্ষী হিসেবে ভূমিকার কারণে সাবেক আইজিপি মামুনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে কম সাজা দেয়। এ মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছিলেন—প্রত্যক্ষদর্শী, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, আহত ব্যক্তি, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। এছাড়া উপস্থাপন করা হয় শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও–ভিডিও, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও জব্দকৃত গুলি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হয়। নতুন কাঠামোয় ১৭ অক্টোবর শুনানি শুরু হয় এবং একইদিন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে মার্চে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক আইজিপিকে আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয়। ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয় এবং ১২ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্কে বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত সব অপরাধের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন শেখ হাসিনা।” আদালতের রায়েও এ বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে।
Leave a Reply