মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলাধীন শ্রীপুরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ-ধর্ষকদের হাতেনাতে আটক পূর্বক স্হানীয় মেম্বার হুমায়ূন গাজীর কাছে সোপর্দ করলেও লাখ টাকা ঘুষ বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে এলাকায় আলোচনার ঝড় ওঠেছে।
স্হানীয় বাসিন্দা-পুলিশ,ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের সুত্রে জানা গেছে,শ্রীপুর ইউনিয়নের দারুল উলুম মাদ্রাসার সংলগ্ন গতকাল শুক্রবার(২৪মে ২০১৯) রাত পৌনে ১০ টায় মিয়ারচর গ্রামের মৃত: শাজাহান গাজীর ছেলে বর্তমান মেম্বার হুমায়ূন গাজীর ছোট ভাই রাসেল গাজী(২৮) এবং তার দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই শাজাহান হাওলাদার(শাজাহান বয়াতী) ছেলের ঘরের নাতিন কবির হাওলাদার(২৬)লম্পটরা মাদ্রাসার উত্তর পাশে মৃত: কাদের হাওলাদারের মেয়ে শ্রীপুর মহিষা ওয়াহেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রীর ঘরের বেঁড়া কেটে ঘরের মধ্যে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ঘরে থাকা তার মা জহুরাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ছদ্মনাম পাখি(১৪)কে তুলে পাশের বাগানে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে।
ভিকটিম ও ভিকটিমের মায়ের ডাক-চিৎকার শুনে পূর্ব শ্রীপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র-মসজিদের মুসুল্লিরা গিয়ে উপস্থিত হলে ধর্ষকরা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা সময়ে স্হানীয়রা ধাওয়া করে ধর্ষক রাসেল,কবিরকে আটক করে স্হানীয় মেম্বার হাফেজ খানের পরামর্শে মেম্বার হুমায়ূন গাজীর কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।মিয়ারচর গ্রামের মেম্বার হুমায়ূন গাজী কবীর হাওলাদারের অভিভাবক শাজাহান হাওলাদারের কাছে নগদ ২লাখ টাকা দাবি করে।শাজাহান হাওলাদার তার ছেলের ঘরের নাতিন মুক্ত করতে তার আত্নীয়-স্বজন,জামাতা রুবেল দেওয়ানের কাছ থেকে ধার-কর্য করে টাকা দিলে রাত পৌনে ১২টায় পুলিশ ধর্ষকদের ছেড়ে দিয়েছে।
ভিকটিমের মা জহুরাকে বেগম(৬০)সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানিয়েছে,আমার স্বামীর মৃত্যুর পরে আমার এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে না খেয়ে, কখনো আবার খেয়ে কোনমতে সংসার চলছে।আমার ছেলে দিনমজুরী ও জেলে হিসেবে কাজ করে আমাদের ভরণ-পোষণ যোগায়।আমার মেয়ে শ্রীপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেনীর ছাত্রী।আমার মেয়ে শেষ সম্বল ইজ্জতটুকু ওরা কেড়ে নিয়েছে।গরীব বলে আমার মেয়ে ইজ্জতের মূল্য নেই।আমি ধর্ষকদের গ্রেফতার পূর্বক কঠোর বিচার দাবি করলেও পুলিশ আমার কথা কর্নপাত করেনি।গ্রামের মানুষ পুলিশের কাছে দিয়েছে।পুলিশ লম্পটের ছেড়ে দেন।গরীবের বিচার উপর আল্লাহ কাছে দিলাম।
প্রত্যাক্ষদর্শী স্বাক্ষী মোঃ রুবেল হাওলাদার বলেন-আমি একজন মুসলমান আমারও মেয়ে বড় হয়েছে।সেও শ্রীপুর হাইস্কুলের ছাত্রী একই বয়সের পাখির ক্লাসমেন্ট।রোযার অবস্হায় কোনো মিথ্যা বলবো না।শুক্রবার রাতে তারবীর নামায না পড়ে চোট্টা ধরেছি।নারী লোভী বেল্লাল বেপারীর ভাগ্নে একই অসৎ চরিত্রের ৩/৪ বিয়ে করেছে।এর আগেও অনেক মেয়ে সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছে।কবির হাওলাদার অর্ধশতাধিক নারীর জীবন-সংসার নষ্ট করেছে।পাখি আমার চাচাতো বোন।লম্পট কবিরকে ধরে,মেম্বার হাফেজ খানকে খবর দিলে,সে আসেনি।মিয়ারচর গ্রামের মেম্বার মোঃ হুমায়ূন গাজী এসে দুটি চড়-থাপ্পর মেরেছে।শ্রীপুর ক্যাম্পের এসআই নুর উদ্দিন মামলা দিয়ে চালান দিতে বলেছেন।তবে রুলামিন ভূইয়া,হুমায়ূন গাজী পরামর্শ করে মেয়ের আত্মসম্মান রক্ষার্থে মানুষ জড়ো না করে,কৌশলে পুলিশ ক্যাম্পের কথা বলে নিয়ে যায়।পরেরদিন শোনা যায়,ভূইয়া বাড়ীর মানুষ ২৫ হাজার টাকা রেখেছে।ক্যাম্পের পুলিশ,চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নাম ভাঙিয়ে ঘুষ লেনদেনের খবর পাওয়া গেছে।
অপর এক প্রত্যাক্ষদর্শী স্বাক্ষী মোঃ কাবুল ভূইয়া রুবেল হাওলাদারের সঙ্গে সহমত পোষণ করে জানিয়েছে,আমরা একটাকা হারাম গ্রহণ করিনি।আমরা সাংবাদিকদের কাছে করজোরে বিনতী করছি,আমাদের কোন বিপদে ফেলবেন না।সমাজের অপরাধমুক্ত করতে প্রকৃত অপরাধীরা সাজা পেলে,সমাজের অপরাধ প্রবনতা কমে যাবে।আর এই ধরনের অপরাধীর সাজা না হলে,আরোও অপরাধী বাড়তে থাকবে।
মোঃ ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন,মেম্বার-চেয়ারম্যান সরকারী কোনো বেতন-ভাতা পায়না।তাদের পেট আছে।ঘর-সংসার,সন্তান-সন্তাদি,পকেট খরচের টাকা যোগাতে টুকিটাকি বিচার-শালিসীর জরিমানা আদায় করেন।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন,নারী জনিত কোনো ঘটনার আদালত ব্যতিত কেউ বিচার করতে পারেনা।শ্রীপুর পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ কোর্ট বসিয়ে বিচার-শালিসীর করে।সমাজে বাঁচতে হলে,কিছু কিছু বিষয় ছাড় দিতে হয়।এই বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের বিরুদ্ধে না লিখলেই ভালো হবে।মিয়ারচর গ্রামের হুমায়ূন গাজী সহ ওরা ১১ জনের বিশাল গ্রুপ আছে।সমাজের যে কাউকে ক্ষতিসাধন করতে দ্বিধা করে না।আমার অনুরোধ রইলো,হুমায়ূন গাজী সহ মেম্বারদের বাদ দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করুন।
বিজিপির থেকে আ.লীগে যোগদানকারী নেতা মোঃ রুলামিন ভূইয়া,লোকমান হাওলাদার,নাসির ফকির,মোঃ দুলাল মিয়া,মোঃ ইউনুস রাড়ী এদের সঙ্গে আলাপকালে জানায়,গনি বয়াতির পুত্রের ঘরে নাতি এই ধর্ষক।ধর্ষকের ৪ সন্তান ২ স্ত্রী রয়েছে।একারনেই হুমায়ূন গাজী উত্তম মাধ্যম দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়াছে।
এব্যাপারে শ্রীপুর ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা ও মেম্বার মোঃ হাফেজ খানের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে,তিনি বলেছেন-পুলিশ কিসের ভিত্তিতে ছেড়েছেন অবগত নেই।মিয়ারচর গ্রামের মেম্বার হুমায়ূন গাজী অভিযুক্তদের বেধর মার দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়াছে।
মিয়ারচর গ্রামের মেম্বার হুমায়ূন গাজীকে কৌশলে জিজ্ঞাসা করলে,সে সাংবাদিকদের বলেন,নারী নির্যাতন ঘটনা হলে,পুলিশের লাখ লাখ টাকা চাহিদা।শ্রীপুর ক্যাম্পের পুলিশ,থানার পুলিশ ম্যানেজ করে অভিযুক্তকে মুক্ত করতে হলে,কিছু টাকা দেয়া লাগছে।পরে অবশ্যই কতটাকা স্বীকার করেনি।
এব্যাপারে সাবেক মেম্বার মোঃ মাহমুদ বেপারী সাংবাদিকদের জানায়,এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা।
শ্রীপুর ইউনিয়নের আ.লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লার কাছে জানতে চাওয়া হলে,তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।
শ্রীপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই নুর উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,এই বিষয়টা গ্রামের মেম্বার-চেয়ারম্যান ফয়সালা করেছে।আমরা তাদের ব্যাপারে কথা বলতে পারিনি।
এব্যাপারে মেহেন্দিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ মজিবর রহমান সাংবাদিক বলেন-অভিযোগ পাইনি।অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।
এবিষয়ে বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার(এসপি) সাংবাদিকদের জানান,বিষয়টি বহু খটকা আছে।পুলিশর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় তদন্ত চলছে।তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার পূর্বক সকলের মোবাইলের কললিস্ট ট্রাকিং কথাবার্তার রেকর্ড সংগ্রহ পূর্বক প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘটন করা হবে।ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্হা করা হবে।এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার সঙ্গে জড়িতদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।সাংবাদিকরা কখনো ভূয়া সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না।সত্য ঘটনা ধামাচাপা দেয়া যায় না।সবকিছুই রাজনৈতিকভাবে দেখার সুযোগ নেই।এর আগেও শ্রীপুরের ইদ্রিস মোল্লার মেয়ে নির্যাতনের ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়া চেষ্টা করা হয়েছিল।এক মাস পরেও সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় মামলা হয়েছে।আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।সে সময়ে স্বাক্ষীদের জিম্মি করেছিল।
বিস্তারিত আসছে—–
Leave a Reply