রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ অপরাহ্ন
মুলাদী প্রতিনিধি॥ ছাত্রলীগের পদ-পদবী দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীদের বিরুদ্ধে। উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা ইউনিয়ন কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছেন। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের টাকার প্রয়োজন হলেই ডাকা হয় কর্মী সভা। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে থাকা নেতারা তাদের খেয়ালখুশি মতো সংগঠনটি পরিচালনা করছেন।
নিজেদের ইচ্ছেমতো দল পরিচালনার জন্যই উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করছে না শীর্ষ নেতারা। এতে ছাত্রলীগের চেইন অফ কমা- ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এনিয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
উপজেলা ছাত্রলীগের ৭ সদস্য কমিটি ঘোষণার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও পূণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ না দেখায় অধিকাংশ নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে সাত সদস্য থাকলেও মূলত কার্য পরিচালনা করছে মাত্র দুই জনে। ফলে কমিটির বাকী পাঁচ সদস্যের মধ্যেও শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
তারা ইতোমধ্যে বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের উর্ধ্বতন মহলে অভিযোগ করেছেন বলে জানান। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের জুয়েল ইতোমধ্যে ছাত্রত্ব হারিয়ে বিয়ে করে ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি ছাত্রলীগের কমিটিতে বহাল থাকায় নেতাকর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ কাজীর বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার ছাত্রলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান ছাত্রলীগের ইউনিয়ন কমিটিতে অছাত্র-ভিন্ন মতাদর্শী ও ছাত্রদলের কর্মীদের থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ছাত্রলীগের কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোনো নেতাকর্মীদের মতামত না নিয়েই এসব কমিটি গঠন করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক কর্মী জানান অর্থের বিনিময়ে উপজেলার সফিপুর ও নাজিরপুর ইউনিয়নের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সুযোগ সন্ধানী জামায়াত-শিবির পরিবারের সদস্যদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছে তারা ইউনিয়ন কমিটির পদ-পদবী থেকেও বঞ্চিত হয়েছে। ফলে তৃনমূল মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল ছাত্রলীগ। এছাড়াও গতকাল শনিবার গাছুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্মেলনকে ঘিরে ঐ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নিজেও জানেন না যে গাছুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্মেলনের কথা। অভিযোগ উঠেছে মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের আহম্মেদ জুয়েল ও সাধারন সম্পাদক কাজী মুরাদ হোসেনের অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় গাছুয়া ইউনিয়নে ছাত্রলীগের সম্মেলনের ডাকা হয়েছে। এ ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের বহি:প্রকাশ হিসেবে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ আকন, সাইফুল মৃধা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ইমাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ ও সুজন নলী দক্ষিন বঙ্গের আওয়ামীলীগের অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লার হস্তক্ষেপ কামনা করে গত শুক্রবার আগৈলঝাড়া উপজেলায় তার সাথে সাক্ষাত করে এ অভিযোগের কথা জানান।
এব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক কাজী মুরাদ হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেয়া হচ্ছে না এবং গাছুয়া ইউনিয়নের কমিটি পূর্বেই ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল।
এব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুর রাজ্জাক জানান, মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply