রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২৯ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দড়িচরের শিশু সিয়াম (৮) নিখোঁজ হয় গত ২ জুন। এর ১১ দিন পর শুক্রবার সকালে বরিশালের হিজলা উপজেলার আবুপুর চরাঞ্চলের আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে নরসংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করার পরও শিশুটিকে লঞ্চ থেকে ফেলে হত্যা করে সম্পর্কে তারই মামা সাফায়াত হোসেন। পুলিশ সাফায়াতকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, সিফাত শিবপুর উপজেলার কারারচর (বিসিক শিল্পনগরী) এলাকার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী হাফেজ নুর উদ্দিনের ছেলে। সে পার্শ্ববর্তী পলাশ উপজেলার একটি কিন্ডারগার্টেনের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত ২ জুন সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের সড়ক থেকে নিখোঁজ হয় সিয়াম। ওই রাতেই অপহরণকারীরা তার মা লাকি আক্তারের মোবাইলে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চায়। কিন্তু তারা কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা বিকাশ নম্বর না দেওয়ায় সে সময় টাকা পাঠানো সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় সিয়ামের বাবা শিবপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগও দেন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ তাৎক্ষণিক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। এরই মধ্যে ঘটনার দু’দিন পর অপহরণকারীরা বিকাশ নম্বর দিলে মুক্তিপণ বাবদ ৩০ হাজার টাকা পাঠায় সিয়ামের পরিবার।
এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রুপন কুমার সরকার তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৩ জুন সিয়ামের চাচাতো মামা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালিনগর এলাকার হাবিব মিয়ার ছেলে সাফায়াত হোসেনকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বরিশালের হিজলা উপজেলার আবুপুরের দুর্গম চরাঞ্চল এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে সিয়ামের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এসআই রুপন কুমার সরকার বলেন, শিশু সিয়ামের চাচাতো মামা সাফায়াত হোসেন তাকে অপহরণ করে। এরই মধ্যে সে তার পরিবারের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। পরে সিয়ামকে নিয়ে সাফায়াত গত ৯ জুন সদরঘাট থেকে দ্বীপরাজ-৪ নামের একটি লঞ্চে করে বরিশাল যাওয়ার পথে লঞ্চ থেকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় সাফায়েতকে আটক করার পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বরিশালের হিজলা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল আবুপুর এলাকা থেকে সিয়ামের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply