মাদক প্রতিরোধ কমিটির লোকেরাই মাদক কারবারে জড়িত,পেছনে পুলিশ, নেতা Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি: মাঠ প্রশাসনে ডিসি পদে রদবদল শুরু ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে মহোৎসব: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশে ভূমিকম্প, বাংলাদেশ কাঁপল নির্বাচিত হলে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে – মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ জাকসুতে শিবিরের চমকপ্রদ উত্থান, ছাত্রদলের ভরাডুবি! পটুয়াখালী নয়, বরিশাল পর্যন্ত রেলওয়ের প্ল্যান : নৌ-উপদেষ্টা জামায়াত মুসলিম ব্রাদারহুড নেটওয়ার্কের অংশ: হর্ষ বর্ধন ডাকসু নির্বাচনে নতুন রাজনৈতিক ম্যাট্রিক্স: ব্যারিষ্টার ফুয়াদ অবরুদ্ধ গাজায় দুর্ভিক্ষ-হামলা মিলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের বিকল্প নেই: প্রধান উপদেষ্টা




মাদক প্রতিরোধ কমিটির লোকেরাই মাদক কারবারে জড়িত,পেছনে পুলিশ, নেতা

মাদক প্রতিরোধ কমিটির লোকেরাই মাদক কারবারে জড়িত,পেছনে পুলিশ, নেতা

মাদক প্রতিরোধ কমিটির লোকেরাই মাদক কারবারে জড়িত,পেছনে পুলিশ, নেতা




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বৃহত্তর মিরপুরের শাহ আলী, দারুস সালাম, রূপনগর, মিরপুর, পল্লবী, কাফরুল ও ভাসানটেক এই সাত থানার আড়াই শ স্পটে অবাধে চলছে মাদক কারবার। প্রতিটি স্পটে মাদক বেচাকেনায় জড়িত অন্তত পাঁচজন নারী-পুরুষ। এই হিসাবে মিরপুরের আড়াই শ স্পটে রয়েছে অন্তত এক হাজার ২৫০ জন মাদক কারবারি। সম্প্রতি মাদক কারবারে বেশি জড়াচ্ছে নারীরা। তাদের কাছে সহজে মিলছে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, দেশি-বিদেশি মদ ও বিয়ার। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভারত থেকে যৌন উদ্দীপক নানা ধরনের চুইংগাম এনে বিক্রি করছে। এই চক্রের নেপথ্যে আছেন কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা। দু-একজন রাজনৈতিক নেতার নিকটাত্মীয় ও ক্যাডাররাও জড়িত এই মাদকচক্রে। এদিকে মাদক প্রতিরোধ কমিটি করে ওই কমিটির সদস্যরাই জড়িয়ে পড়ছেন মাদক কারবারে। এ পরিস্থিতিতে এলাকার সাধারণ মানুষ রীতিমতো অসহায়। অনুসন্ধানে মিলেছে এসব তথ্য।

 

 

বাউনিয়াবাঁধ এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই এলাকায় ভিড় জমায় শত শত মোটরসাইকেল। আসে দামি গাড়িও। কেউ কেউ নেশা দ্রব্য কিনে নিয়ে যায়। আবার অনেকে এখানে বসেই নেশা করে। একবার প্রতিবাদ করে জীবননাশের হুমকি পেয়েছি। এখন আর ভয়ে কিছু বলি না। দেখে সহ্যও করা যায় না।

 

 

মিরপুর-১২ নম্বর ‘মিল্লাত ক্যাম্পে’ রয়েছে একটি মাদক প্রতিরোধ কমিটি। ওই কমিটির নেতা বিহারি মোস্তাক। মোস্তাকের দুই ছেলে মিস্টার ও ইমতিয়াজ বিহারি ক্যাম্পসহ পুরো মিরপুরের বেশির ভাগ স্পটে পাইকারি মাদক সরবরাহ করেন। বিহারি মোস্তাকের মাদক প্রতিরোধ কমিটিতে রয়েছে ১৫০ জন সদস্য। তারা সবাই মাদক কারবারে জড়িত। মোস্তাকের ছেলে মিস্টার ও ইমতিয়াজের মাদক কারবারের প্রতিবাদ করায় ওই এলাকার বিপ্লব হাওলাদার নামের এক তরুণকে গত ২৩ জুলাই নির্মমভাবে নির্যাতন চালায় মিস্টার, ইমতিয়াজ ও তাঁদের সহযোগীরা। পরে ২৫ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিপ্লব।

 

 

বিপ্লব হত্যাকাণ্ডে তাঁর স্ত্রী ইসমত আরা বাদী হয়ে গত ২৬ জুলাই পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ইসমত আরা অভিযোগ করেন, গত সোমবার বিহারি মোস্তাকের আরেক ছেলে ইমরান তাঁর বাসায় গিয়ে মিস্টারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে বলে, ‘আমার বাবা মোস্তাকের ক্ষমতা জানিস? মামলা তুলে না নিলে তোকেও গুলি করে হত্যা করব। সাত দিন সময় দিলাম।

 

 

বিপ্লব হত্যার পর বিহারি মোস্তাককে আটক করে পল্লবী থানার পুলিশ। পরে আবার ছেড়েও দেয়। মাদক প্রতিরোধ কমিটির লোকেরাই মাদক কারবারে জড়িত এমন প্রশ্নের জবাবে বিহারি মোস্তাক তা অস্বীকার করে বলেন, ‘এ অভিযোগ সঠিক নয়। মাদকের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে আমি মাদক প্রতিরোধ কমিটি করেছি।’ তাঁর ছেলে ইমরান মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।

 

 

মিল্লাত ক্যাম্প এলাকার আরেক বড় মাদক কারবারি বিহারি আনোয়ারী। ওই এলাকায় মাদক কারবার করা ছাড়াও মিরপুরের আরো অনেক মহল্লায় তিনি পাইকারি মাদক সরবরাহ করেন। আনোয়ারীর রয়েছে বিশাল বাহিনী। তারা বিভিন্ন স্পটে মাদক সরবরাহ করে। গত মাসে দুই কোটি টাকার ইয়াবাসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন আনোয়ারী। এতে বন্ধ হয়নি তাঁর মাদক কারবার। বর্তমানে আনোয়ারীর মাদক কারবার পরিচালনা করছেন তাঁর ছেলে ওয়াহিদ, মেয়ের জামাই কামরান, ক্যাশিয়ার রাজেশ ও মেহতাব এবং বোনের ছেলে রাব্বি।

 

 

রূপনগরের চলন্তিকা বস্তির মাদকসম্রাট নজরুল ইসলাম নজু মাদক কারবারের অপরাধে ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর ওই এলাকার মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন হাজি ফরিদ আলম। ফরিদ আলম ছিলেন নিহত নজুর প্রধান সহযোগী। হাজি ফরিদ আলমের এক সহযোগী জানান, নজু নিহত হওয়ার কিছুদিন আগে টেকনাফের এক রাজনৈতিক নেতা পাঁচ কোটি টাকার ইয়াবা পাঠান নজুর কাছে। ওই টাকা গচ্ছিত ছিল ফরিদ আলমের কাছে। নজু নিহত হলে ফরিদ ওই টাকা মেরে দেন। ফরিদ আলম রূপনগর থানা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নিকট আত্মীয়।

 

 

মিরপুরের মুসলিম বাজার এলাকায় ইয়াবা ও হেরোইনের দাপুটে কারবারি আলাউদ্দিন। তাঁর রয়েছে ১৫ থেকে ২০ জন বিক্রেতা। এলাকাবাসী জানায়, খুচরা বিক্রির চেয়ে পাইকারি বিক্রি বেশি করেন আলাউদ্দিন। এই মাদক কারবারির শ্বশুর স্থানীয় একটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। আপন ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, চাচাতো ভাই ওয়ার্ড বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। পল্লবী থানায় মাদক বেচাকেনার অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে তাঁর নামে।

 

 

মুসলিম বাজারের আরেক মাদক কারবারি সবজি মনির। ওই এলাকায় রয়েছে তাঁর সবজির দোকান। এই সবজি ব্যবসার আড়ালে তিনি চালান মাদক কারবার। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে সবজি আনার নামে এর মধ্যে ভরে নিয়ে আসেন মাদক। পরে মিরপুরের বিভিন্ন স্পটে পাইকারি বিক্রি করেন। ইয়াবা-হেরোইনসহ একাধিকবার র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন সবজি মনির।

 

 

মুসলিম বাজার এলাকায় খোলা জায়গায় প্রকাশ্যে মাদকের কারবার করেন শাকিল। এলাকায় তিনি হেরোইন শাকিল নামে পরিচিত। এলাকায় রয়েছে তাঁর সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। রাজধানীর পল্লবী থানায় চুরি, ডাকাতিসহ একাধিক মাদক মামলার আসামি তিনি। মুসলিম বাজার এলাকার একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সারা দিন দোকানে বেচাকেনার পর ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরি। এর পরও সংসারের খরচ জোগাতে পারি না। আর শাকিল নবাবের মতো বসে বসে কোটি কোটি টাকা কামায়।

 

 

বাউনিয়াবাঁধ এলাকার মাদকসম্রাট আবদুল মান্নান। তাঁকে এলাকার মানুষ চেনে মাদকের পাইকারি বিক্রেতা হিসেবে। মিরপুরের একাধিক থানায় রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে মাদকের মামলা। এই এলাকার আরেক পাইকারি মাদক কারবারি মিল্লাত ক্যাম্পের ডলার।

 

 

মিরপুর জোনে গত দুই মাসে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন। নতুন যোগ দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকেই মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন। এর পরও থেমে নেই মাদক বেচাকেনা। দুয়ারীপাড়ার সালেহা মাদক স্পটের সালেহা, বিপাশা, সুজন, ফয়সাল, বাবু, আকলিমা, সাজ্জাদ অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি করছেন মাদক।

 

 

রূপনগরের ইস্টার্ন হাইজিং আবাসিক এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে মাদক। মাদক বিক্রি করেন আলম, খোকন, মিন্টু, মনিরা, নাতা শফিক, সুমন, সবুজ, তাসলিম, শামীম ও মিম। মিরপুরে এ ধরনের আড়াই শ স্পটে বিক্রি হচ্ছে মাদক।

 

 

মিরপুরে মাদকের ছড়াছড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ বলেন, ‘এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাস দুটোই রয়েছে। কিছু রাজনৈতিক নেতা এদের সমর্থন জোগান, এটাও ঠিক। তবে বর্তমানে মিরপুরে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ বেশ সোচ্চার। আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে চলন্তিকা মোড়ের মাদক স্পট গুঁড়িয়ে দিয়েছি। আমার সঙ্গে যাঁরা রাজনীতি করেন তাঁদের স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি, মাদকের কারবার যাঁরা করেন, দয়া করে আপনারা দল ছাড়ুন। একা হলেও আমি মাদকের বিরুদ্ধে লড়ব।

 

 

মিরপুর জোনের উপপুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন হলো মিরপুর জোনে যোগ দিয়েছি। মিরপুরে এখন মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। আমরা মাদক নির্মূলের চেষ্টা করব। এটা পুলিশের অঙ্গীকার। তবে এর জন্য সামাজিক আন্দোলনও প্রয়োজন।সুত্র,কালের কণ্ঠ

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD