সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি ॥ ভোলায় লীজ নেওয়া জমিতে রোপন করা গাছ উপড়ে ফেলে ভোগদখলীয় মালিককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে প্রতিপক্ষরা। পুলিশ ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শিপ্রা রানী রায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী নির্মূল চন্দ্র ঘরামী গংরা। শনিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে ভোলা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের চরনোয়াবাদ এলাকার এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের চরনোয়াবাদ এলাকার মৃত অনিল চন্দ্র ঘরামীর ছেলে শ্যামল চন্দ্র ঘরামী ও নির্মল চন্দ্র ঘরামী তাদের বাড়ীর সংলগ্ন সরকারী ৬ শতাংশ ভিপি (ডিসিআরপ্রাপ্ত) জমি ২৯-৬-২০ইং তারিখে ১৪২৬-১৪২৭ বাংলা সনের জন্য লীজ নেয়। লীজ নেওয়ার পর থেকে শ্যামল চন্দ্র ঘরামী গংরা উক্ত জমি ভোগদখল করে আসছে। কিছুদিন পূর্বে বনবিভাগের মাধ্যমে শ্যামল ও নির্মল চন্দ্র ঘরামী ওই জমিতে গাছের চারা রোপন করে।
হঠাৎ করে স্থানীয় পার্থ সারথী রায় ও তার স্ত্রী শিপ্রা রানী রায় উক্ত জমি জোরপূর্বক দখলের পায়তারা চালায়। এ নিয়ে শ্যামল গংদের সাথে শিপ্রা রানী গংদের বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার জেরধরে শিপ্রা রানী রায় একটি অভিযোগ করলে ৮ আগস্ট এসআই মোঃ সোহাগ ও বনবিভাগের রেঞ্জার কামরুল ইসলাম সরজমিনে পরিদর্শনে যায়। তাদের উপস্থিতিতে শিপ্রা রানী রায় রোপন করা গাছগুলো উপড়ে ফেলে দেয় এবং বনবিভাগেও সেখান থেকে কিছু গাছ উঠিয়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর শিপ্রা রানী রায় বাদী হয়ে শ্যামল চন্দ্র ঘরামী ও নির্মল চন্দ্র ঘরামী গংদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে।
জমির লীজ মালিক শ্যামল ও নির্মল চন্দ্র বলেন, আমরা সরকার থেকে জমি লীজ নিয়ে বনবিভাগের সহযোগিতায় এই জমিতে গাছ রোপন করে ভোগদখল করে আসছি। স্থানীয় প্রভাবশালী পার্থ সারথী রায় গংরা আমাদেরকে সেই জমি থেকে উৎখাত করে ভোগদখলের পায়তারা করে। পার্থ সারথী রায় আমাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিলে পুলিশ ও বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে।
তাদের উপস্থিতিতে পার্থ সারথী রায়ের স্ত্রী শিপ্রা রানী রায় রোপন করা গাছগুলো উপড়ে ফেলে দেয়। এসময় বনবিভাগের লোকজনও কিছু গাছ নিয়ে যায়। আমরা বাধা দিতে আসলে এসআই সোহাগ আমাদের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকারী জায়গা পড়ে থাকবে। এখানে কেউ কোন কিছু করতে পারবে না। এই জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে। যারা গাছ লাগিয়েছে তারা সেই গাছ উঠিয়ে নিয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পার্থ সারথী রায় বলেন, এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এই জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকা অবস্থায় কিভাবে তারা এই জমিতে প্রবেশ করে গাছ লাগায়। আদালতে নিস্পত্তির ছাড়া ওই জমিতে কিছু করা যাবে না।
এসআই মোঃ সোহাগ বলেন, ডিসি অফিসের লোকজন এসে ওই জমিতে লাল ফ্লাগ টানিয়ে ১৪৪ ধারা জারী করে। অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সত্যতা জানতে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গিয়েছি। কিন্তু কাউকে গাছ উঠানোর জন্য বলিনি। বন বিভাগের লোকজন এসে সরকরী খাস জমিতে রোপনকৃত গাছ উঠিয়ে নিয়ে যায় শুনেছি। কিন্তু ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না।
বনবিভাগের রেঞ্জার কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে এক পুলিশ সদস্য একটি নিষেধাজ্ঞার কাগজ নিয়ে আসলে আমরা সেখানে রোপনকৃত গাছগুলো উঠিয়ে নিয়ে এসেছি। শিপ্রা রানী রায় কিংবা কেউ আমাদের সামনে কোন গাছ উঠিয়ে ফেলে দেয়নি। যেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে এখানে লাল ফ্লাগ টানানো হয়েছে তাই আমাদের রোপনকৃত গাছ আমরাই উঠিয়ে নিয়ে এসেছি।
ভোলা সদর থানার ওসি মোঃ এনায়েত হোসেন বলেন, এই জমিতে বন বিভাগ গাছ লাগিয়েছে, তাদের গাছ তারা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এসআই সোহাগের উপস্থিতি কোন বিষয় নয়। যেহেতু জমিজমার বিষয় এটা আদালতে মামলা হয়েছে, আদালতে এটির সমাধান হবে।
Leave a Reply