মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের সুমন নামের এক কলেজছাত্রকে হত্যা করেছে একই এলাকার বন্ধু মিঠু। পরে তার লাশ দূরবর্তী স্থানে টেনে নিয়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখে। মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে এ সব কথা জানায় মিঠু।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোরহানউদ্দিন থানার এসআই স্বপন কুমারের আদালতে মিঠুসহ অপর দুই আসামি মিঠুর ভাই রাশেদ ও রাজুকে হাজির করে। পরে মিঠু ১৬৪ ধারায় ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি ম. এনামুল হক জানান।
ওসি এনামুল হক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিঠু সুমনকে মেরে তার সিমকার্ড ব্যবহার করে মুক্তিপণ আদায়ের কথা বলেছে। মিঠুর পরিকল্পনা ছিল সুমনের প্রবাসী বাবা, অন্য চাকরিজীবী দুই ভাইয়ের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খসানো যাবে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, মিঠু এর আগেও মাদকদ্রব্যসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সুমন ওই এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী মফিজুল ইসলামের ছেলে। সে উপজেলার সরকারি আবদুল জব্বার কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
গ্রেফতার হওয়া মিঠু পক্ষিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিমউদ্দিনের ছেলে। সে স্থানীয় বোরহানগঞ্জ বাজারে ওয়ার্কশপের দোকান করে। স্থানীয়রা জানায়, মিঠুর বিরুদ্ধে মানুষকে মারধর, মাথা ফাটিয়ে ফেলাসহ একাধিক চুরির অভিযোগ আছে।
এর আগে সোমবার দুপুরে সুমনকে অপহরণের দুইদিন পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত মিঠুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে সুমনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। একই সময় মিঠু জানায়, সে আর সুমন দীর্ঘ সময় ধরে গাঁজা সেবন করে। সুমন নেশায় বুঁদ হয়ে গেলে তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়া হয়।
সোমবার বিকালে সুমনের মা মমতাজ বেগম সুমনের দুই ভাই রাশেদ ও রাজুর নাম উল্লেখ করে ও ৩ জনের নাম উল্লেখ না করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সুমনের মা মমতাজ বেগম ও মামী জান্নাত বেগম জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে সুমন তার খালাত ভাই সজিব ও সোহেলের সঙ্গে স্থানীয় বোরহানগঞ্জ বাজারে যায়। ওই সময় সুমনের ফোনে একটি কল আসে। সজিব ও সোহেলকে অপেক্ষা করতে বলে সুমন কোথায় যেন যায়। ১ ঘণ্টা পর সুমনকে কল করে সজিব। তখনও সুমন অপেক্ষা করতে বলে। রাত ১০টার দিকে সজিব ফের ফোন করলে তার ফোন বন্ধ পায়। এক সময় তারা বাড়ি ফিরে এসে সবাইকে জানায়।
সুমনকে না পাওয়ায় তারা মিঠুসহ তার বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজ করেন। কেউ সন্ধান দিতে না পারায় রোববার বোরহানউদ্দিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
সোমবার উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মোশারেফ মোল্লার সুপারি বাগান থেকে মাটি খুঁড়ে সুমনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালমোহন সার্কেল) মো. রাসেলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বোরহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হক আরও জানান, মামলাটি সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। যদি আরও কেউ জড়িত থাকে তা তদন্তে বেড়িয়ে আসবে।
Leave a Reply