সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন
বেতাগী প্রতিনিধি॥ বেতাগী-কচুয়া খেয়াঘাটে বিষখালী নদী পারাপারে পাঁচ টাকার ভাড়া ২০ টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও যাত্রী হয়রানি, যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচারণ, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, অদক্ষ চালক, অপর্যাপ্ত ও ত্রুটিযুক্ত ট্রলার দিয়ে নদী পারাপারসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছে যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইজারাদার সরকারের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামতো খেয়া পরিচালনা করছেন। খেয়া পারাপারের জন্য যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়া দিতে চাইলে টোল আদায়কারীরা খারাপ ব্যবহার করছেন এবং লাঞ্ছিত করছেন। চলতি বছরের শুরুতে ইজারা বন্দোবস্ত নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ সময় স্থানীয় কাঠালিয়া উপজেলার প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশে দৈনিক ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে আগের ইজারাদার হিসেবে অবৈধভাবে দুই সপ্তাহ ধরে যাত্রী পারাপার করে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে বরগুনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নাহিদ মাহমুদ লিটু গত ৪ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন এর নিকট লিখিত অভিযোগ তুলে ধরেন।
স্থানীয়রা জানান, সাধারণ যাত্রী পারাপারে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পাঁচ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা, ছাত্রছাত্রীদের ফ্রি পারাপারের নিয়ম থাকলেও একই পরিমাণে টাকা আদায় করা হয়। মোটরসাইকেল পারাপারে ১০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, বাইসাইকেল ১০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া পাঁচ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা, আসবাবপত্র ১০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা ও হালকা যানবাহনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়। ভোর ৫ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পারাপারের নিয়ম, কিন্তু সন্ধ্যা ৭টার পরেই নদী পার হতে হলে রিজার্ভ ৪০০ টাকা আদায় করা হয়। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন, মাত্র দুইটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার যাত্রী পারাপার করে। এতে বেশির ভাগ সময় চাকরিজীবী অফিসে আসতে বিলম্ব হচ্ছে।
ঘাট ইজারাদার রুস্তুম আলী হাওলাদার ও নুরুল হক কচুয়ার স্থানীয় লোক হওয়ায় যাত্রীদের জিম্মি করে বিষখালী নদীর কচুয়ার পাড় থেকে ভাড়া আদায় করছেন। এতেও ভোগান্তি ও হয়রানি বাড়ছে। এ বিষয় জানতে চাইলে টোল আদায়কারী মো. রুস্তুম আলী জানান, ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়া হয় এবং অনেকে ভাড়াও দেয় না। মোটরসাইকেলে ৪০ থেকে ৫০ টাকা আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, বেশি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিকারের জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উত্থাপন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি করেছি।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি শুনেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply