রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ অপরাহ্ন
জেলা প্রতিনিধি, ঝালকাঠি : বরিশালের বাকেরগঞ্জে রাতের আধারে আল্লাহর নামে ছেড়ে দেয়া ষাড় (গরু) জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে উপজেলার বাখরকাঠি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বাকেরগঞ্জ থানার এক এসআইয়ের (উপপরিদর্শক) সহযোগিতায় ষাড়টি জবাই করেন মো. শহিদুল ইসলাম খান নামের এক স্কুলশিক্ষক ও স্থানীয় রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের মেম্বার মো. বেল্লাল শিকদার।
শহিদুল ইসলাম খান সরকারি নলছিটি মার্চেন্টস্ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক ও বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার আসমা আক্তারের স্বামী।
রোববার বিকেলে ষাড় জবাইয়ের ঘটনায় নলছিটি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন মো. আমির আলী তালুকদার নামে এক ব্যক্তি। ষাড়টিকে নলছিটির চৌদ্দবুড়িয়া এলাকা থেকে তাড়িয়ে নিয়ে রাতে আধারে পার্শ্ববর্তী বাখরকাঠি বাজারে জবাই করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
নলছিটি থানার ডিউটি অফিসার এএসআই শহিদুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নলছিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের চৌদ্দবুড়িয়া জামে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে প্রায় ১২ বছর আগে আল্লাহর নামে একটি ষাড় ছেড়ে দেয়া হয়। শনিবার রাতে বাকেরগঞ্জের তবিরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা মো.বশির শিকদার, স্কুলশিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খান, তার স্ত্রী রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার আসমা আক্তার, পুরুষ মেম্বার বেল্লাল শিকদারসহ ৩৫-৪০ জন ব্যক্তি আনুমানিক ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ষাড়টিকে তাড়া করে চৌদ্দবুড়িয়া এলাকা থেকে বাখরকাঠি বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে তারা রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে ষাড়টিকে জবাই করে।
বাখরকাঠি বাজারের একাধিক ব্যবসায়ি জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বখরকাঠি বাজার সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালি মহাসড়কে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে কালো রংয়ের একটি ষাড় এক পায়ে চোট পায়।
এর কিছু সময় পরে বাকেরগঞ্জ থানার এসআই মো. মাজারুল ইসলাম, স্থানীয় ইউপি মেম্বার আসমা আক্তার, বেল্লাল শিকদার, বাকেরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে আসেন।
তারা ষাড়টির চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে মহাসড়কের পাশে ফেলে জবাই করেন। এমনকি ঘটনাটি সম্পর্কে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়নি। ভোর হওয়ার আগেই অর্ধেক মাংস ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায় তারা। বাকি অর্ধেক বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা স্কুলশিক্ষক শহিদুল ইসলামের কাছে জমা রাখেন।
তারা অভিযোগ করেন, এসআই মাজারুল ইসলাম ষাড়টি জবাইয়ের ব্যাপারে অতি উৎসাহী ছিলেন। তিনি ও বাকেরগঞ্জ থানার দুই কনস্টেবল ১৫ কেজি মাংসও নিয়েছেন।
তবে এসআই মাজারুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নাইট ডিউটি থাকার কারণে আমরা ওখানে গিয়েছিলাম। আর আমরা কোন মাংস নেইনি।
অভিযোগের ব্যাপারে স্কুলশিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, বাজার কমিটির সভাপতি হিসেবে আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। তবে ষাড় জবাইয়ের ঘটনায় আমি জড়িত নই।
Leave a Reply