বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
আমজাদ হোসেন, বাউফল প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে বিচার থেকে বঞ্চিত করার জন্য মোঃ ফিরোজ হাওলাদার(৪০) নামে এক ব্যাক্তির দুই পা ভেঙ্গে দুই মাস পর্যন্ত আটকে রাখেন তারই আপন চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা। বৃহস্পতিবার রাতে চাচা ও চাচাতো ভাইদের তৈরী সেই বন্দিশালা থেকে কৌশলে পালিয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে খুলে বলেন তাঁর সাথে ঘটে যাওয়া সেই নির্মম ঘটনা। বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা গ্রামে ওই অমানবিক ঘটনা ঘটে।
ফিরোজ হাওলাদার জানান, তাঁর পিতা চান মিয়া হাওলাদার দশ বছর পূর্বে অর্থাভাবে তাঁদের বসত ঘরের জমি তাঁর চাচা শহিদ হাওলাদারের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর ওই জমি ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য সে তাঁর চাচা শহিদ হাওলাদারকে ৪০হাজার টাকা পরিশোধ করেন। শহিদ হাওলাদার তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরালেও ওই জমি রেজিষ্ট্রি করে দেননি। গত ১৩ই মে ফিরোজ হাওলাদার বাড়ি ফিরে দেখেন সেই জমিতে তাঁর অপর চাচা মান্নান হাওলাদারকে কবর দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সে তাঁর চাচা শহিদ হাওলাদারের কাছ জানতে চায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে শহিদ হাওলাদার ও মান্নান হাওলাদারের দুই ছেলে আনিস(২২) ও শামীম(২০) ক্ষুব্দ হয়ে তাঁকে বেধড়ক পিটিয়ে তাঁর দুই পা ভেঙ্গে দেন।
পরে স্হানীয়দের চাপে পরে ফিরোজ হাওলাদারের চিকিৎসা করালেও যাতে সে আইনের আশ্রয় নিতে না পারে এ জন্য তাঁর অপর চাচা নাসির হাওলাদারের ঘরে তাঁকে আটক রাখা হয়। ফিরোজ হাওলাদার তার চাচা ও চাচাতো ভাইদের হাত থেকে মুক্তি পেতে একাধিকবার পালানোর চেষ্টা করলেও পালাতে পারেননি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি সবার অজান্তে হামাগুড়ি দিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরোজ হাওলাদার থানার সামনের সড়ক পড়ে থাকলেও ভিক্ষুক মনে করে কেউ তাঁর দিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি । পরে সন্ধ্যার দিক বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান থানা থেকে বের হওয়ার সময় রাস্তার পাশে ফিরোজ হাওলাদারকে পড়ে থাকতে দেখে তাঁর কাছে বিস্তারিত জানতে চান।
এরপর ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন ফিরোজ হাওলাদার। ঘটনা শুনে ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান তাৎক্ষনিক ভাবে ফিরোজ হাওলাদারের চিকিৎসা ও আইনী সহযোগীতার ব্যবস্হা করেন। ফিরোজ হাওলাদার বর্তমানে বাউফল উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত অমানবিক। ফিরোজ হাওলাদার এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply