মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি॥ বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের নির্যাতনের শিকার হয়ে চোখ হারানোর শঙ্কায় রয়েছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আবদুল্লাহ আল জিদান (১৩)। আহত জিদান চোখের ব্যথা ও যন্ত্রণায় শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চকউ বিভাগের বেডে কাতরাছে। জিদান উপজেলা আলিমাবাদ ইউনিয়নের গারুরিয়া এলাকার মামুনুর-অর-রশিদের ছেলে ও স্থানীয় আলীমবাদ ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
শেবাচিম হাসপাতালে চক্ষা বিভাগের কর্মরত চিকিৎসকরা জানিয়েছে, ছেলেটির চোখের অবস্থা তেমন একটা ভালো না। হাসপাতালে ভর্তির পরে ছেলেটির চোখের কিছু পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে চোখের অবস্থা বোঝা যাবে।
আহতের বাবা মামুনুর-অর-রশিদ অভিযোগ করে বলেন, গত মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে আজিম নামে এক শিশু কিছু বিস্কুট নিয়ে স্থানীয়দের কাছে ধরা পরে। তখন ওই শিশুটি বিস্কুটগুলো গ্রামের বান্দেরপাড় (বাধেরপাড়)এলাকায় ইউসুফ ও ফারুক সিকদারের দোকান থেকে নিয়েছে বলে জানায়। তখন তাকে বেঁধে রাখে এবং মারধরের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক চুরির সঙ্গে আমার ছেলে জিদান জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায়। কিন্তু সে চুরির সঙ্গে জড়িত নয়।
তিনি বলেন, এ ঘটনার পর বাসা থেকে জিদানকে লোক পাঠিয়ে ডেকে নিয়ে যায় ইউসুফ সিকদার। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকেও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে চুরির বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আজিজুল হক আমাকে মুঠোফোনে জানালে আমি তাকে দুই দিন পরে বাড়িতে এসে বিচার করার আশ্বাস দেই। এর আগেই পূর্ব শত্রুতার জ্বের ধরে নুরুল আলম টগন নামে এক ব্যক্তি তাকে মারধর করে এবং চোখের ওপরে চর মারে। এতে আমার ছেলের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দোকান মালিক ইউসুফ সিকদার জানান, গত মাসখানেক ধরে দোকান থেকে বিস্কুট চুরি হচ্ছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আজিম নামে এক শিশুকে ১০ টাকা দামের ৬ প্যাকেট বিস্কুটসহ স্থানীয়রাই আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জিদানের কথা জানায়।
এ সময়ে জিদানকে মন্দ বলা হলেও মারধর করা হয়নি। তবে নুরুল আলমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলে সে তাকে থাপ্পর দেয়। কিন্তু সেই সময়ে স্বাভাবিক ছিল। ঘটনার পর মাদরাসাতেও গেছে, আর এখন শুনছি তার চোখে সমস্যার কথা।
গরুরিয়া ইউপি সদস্য (মেম্বার) আজিজুল হক জানান, ঘটনাটির বিচার অভিভাবকরা করবে এমনটা চেয়ে তিনি জিদানের বাবাকে তাৎক্ষণিক বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তবে সে ঢাকায় থাকায় দুদিন পরে এসে বিচার করবেন বলে জানান। এ ঘটনা জানাতে অভিযুক্ত নুরুল আলম টগনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয়দের কাছে শুনে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শিশু নির্যাতনের ঘটনায় যেই হোক না কেন তাতে বিন্দুপরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply