শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ বিশেষায়িত হাসপাতাল হওয়া সত্তেও প্রতিষ্ঠার ৫১ বছর পর আজ (২ ফেব্রুয়ারী) বুধবার চালু হলো ভাস্কুলার সার্জারী, কার্ডিওলজি, ইউরোলজি ও গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোরোলজি বহিঃ বিভাগের কার্যক্রম। এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ ডাঃ মনিরুজ্জামান।
হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, ১৯৭০ সালের ২০ নভেম্বর দেশের দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বিশেষায়িত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার সময় এই হাসপাতালের সাথে যুক্ত ছিলো জেনারেল হাসপাতালটিও। ৬শ শয্যার নিয়ে গঠিত এই বিশেষায়িত এই হাসপাতালটি। তবে ২০২০ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেনারেল হাসপাতালটিকে সিভিল সার্জনের অধিনে পৃথক করার পূর্বে শুধু মাত্র এই হাসপাতালটি ৫শ শয্যা থেকে এক হাজার শয্যায় উন্নতি করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে সব ধরনের রোগের চিকিৎসার ইনডোর আউটডোর সেবা থাকতে হবে। কিন্তু শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসক ও স্থান সল্পতা থাকায় একাধিক রোগের ইনডোর আউটডোর সেবা কার্যক্রম চালু ছিলো না। বিশেষ করে কার্ডিওলজি (হৃদ রোগ) চিকিৎসার বহিঃ বিভাগ চালু না থাকায় গরিব ও সাধারণ রোগীরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পরবর্তিতে বড় ধরনের ঝুকির মুখে পরেন তারা।
এর অবস্থায় ২০১৫ জানুয়ারী মাসে স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন কমিটির এক সভায় সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ্ এমপি জরুরী ভিত্তিতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদ রোগ বহিঃ বিভাগ চালুর নির্দেশ দেন। সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ্ এমপি এরই নির্দেশনা বিগত ৭ বছর ধরেই ফাইল বন্ধি ছিলো। এ বিষয়ে বিগত দিনে হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব নেয়া ডাঃ মুঃ কামরুল হাসান সেলিম, ডাঃ নিজাম উদ্দিন ফারুক, ডাঃ সিরাজুল ইসলাম, ডাঃ আবদুল কাদির (ভারপ্রাপ্ত), ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন ও ডাঃ মুঃ আবদুল রাজ্জাক (ভারপ্রাপ্ত) পরিচালক উদ্যোগ গ্রহন করেন নি।
অতঃপর গেলো বছরের ১৩ এপ্রিল ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম পরিচালকের দায়িত্ব নেয়ার পর ফাইল বন্ধি স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদার আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ্ এমপি’র সহায়তায় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব (স্বাস্থ্য সেবা) লোকমান হোসেন মিয়া’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে অত্র হাসপাতালে হৃদ রোগ (কার্ডিওলজি) বহিঃ বিভাগের পাশাপাশি গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোরোলজি, ইউরোলজি ও ভাস্কুলার সার্জারী বহিঃ বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করেন। এখন থেকে হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে প্রতিদিনই ডাঃ মোঃ শাহ আলম ইউরোলজি বহিঃ বিভাগ খোলা থাকলেও স্থান সল্পতার কারনে প্রতি রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার হৃদ রোগ বহিঃ বিভাগে রোগী দেখনে সহকারি রেহিজষ্টার ডাঃ মুসফিকুর রহমান ও ডাঃ একে চৌধুরি দেখবেন ভাস্কুলার সার্জারী বহিঃ বিভাগ। এছাড়া প্রতি শনি, সোম ও বুধবার গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোরোলজি ইনডোর থেকে প্রেরিত একজন চিকিৎসক এই রোগের রোগীর দেখবেন।
পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম যোগদানের সল্প সময়ের মধ্যে ভাস্কুলার সার্জারী, কার্ডিওলজি, ইউরোলজি ও গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোরোলজি বহিঃ বিভাগ চালুর পাশাপাশি এন্ড্রোক্রাইনোলজি (ডায়াবেটিস), বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ও নিউরোসার্জরী ইনডোর চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করার সকল প্রক্রিয়া শেষ করেছেন। এছাড়া তিনি দীঘদিন বন্ধ থাকা সিটিস্ক্যান, চোখের লেসিক ও এনজিওগ্রাম মেশিন চালু করা এবং নতুন এমআরআই মেশিন সরবারের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছেন। এর পাশাপাশি সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর থেকে আরো ৪টি অত্যাধুনিক আল্ট্রাসোনগ্রাম মেশিন সরবরাহ করেছেন। পাশাপাশি তার সময়েই হাসপাতালে প্রথমবারের মতো ভারত সরকার প্রদত্ত আইসিইউ এ্যাম্বুলেন্স পেয়েছেন।
পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার মুল উদেশ্য হলো এই হাসপাতালে সবধরনের সেবা নিশ্চিত করা। অন্য হাসপাতালে রেফাড শদ্ধটি বিলুপ্ত ঘটানো। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন রোগের অন্তঃ ও বহিঃ বিভাগ চালু করতে পারায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে বরিশালবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
Leave a Reply