বরিশাল নগরীতে গ্রীস্ম মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্নঅংশে তীব্র পানির সঙ্কট Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশাল নগরীতে গ্রীস্ম মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্নঅংশে তীব্র পানির সঙ্কট

বরিশাল নগরীতে গ্রীস্ম মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্নঅংশে তীব্র পানির সঙ্কট




 

ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক।। গ্রীস্ম মৌসুমের শুরুতেই বরিশাল নগরীর বিভিন্নঅংশে তীব্র পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। চাহিদার বিপরীতে অর্ধেকেরও কম পানি সরবরাহ করতে পারছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। অন্যদিকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ থেকেও পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না নগরবাসী। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগ পর্যন্ত নগরবাসীর দুর্ভোগ আরও প্রকট হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পানি শাখার দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে দৈনিক পানির চাহিদা ছয় কোটি গ্যালন। যার বিপরীতে সরবরাহ করা যাচ্ছে মাত্র দুই কোটি ৭০ লাখ গ্যালন। যা চাহিদার বিপরীতে অর্ধেকেরও কম। সরবরাহ করা ওই পানিও নগরীর সব বাসিন্দারা পাচ্ছেন না। কারন নগরীর প্রায় ৫৫ শতাংশ এলাকায় এখনও কর্পোরেশনের পানি সরবরাহ লাইন স্থাপিত হয়নি।

নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলামিন বলেন, গত ১৯ মার্চ সকালে কর্পোরেশন থেকে তাদের এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয়নি। একই অভিযোগ করেছেন, পার্শ¦বর্তী ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। আব্দুল মতিন ও রবিউল ইসলামের অভিযোগ, গ্রীস্ম মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে ২-৩ দিন পর পরই কর্পোরেশনের পানি সরবরাহ কোন ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ থাকে। এতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ থাকেনা।

কর্পোরেশনের কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা শামীম আহমেদ বলেন, পলাশপুরের আটটি গুচ্ছগ্রামের প্রায় তিন হাজার পরিবার প্রতিদিন পানি সঙ্কটে ভুগছেন। গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের না আছে সুপেয় পানির সংস্থান, না আছে নিত্য ব্যবহার্য পানির ব্যবস্থা। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় গুচ্ছ গ্রামের নলকূপগুলোতে এখন আর পানি পাওয়া যাচ্ছেনা।

নগরীর ৭ নম্বর গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা নুরজাহান বেগম বলেন, আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের পানি নেই। খাবার পানি পেতে এক কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। গরমের দিনে পানি কষ্টের আর শেষ থাকেনা। ৫নম্বর ব্লকের বাসিন্দা মোঃ জিয়া জানান, সিটি কর্পোরেশন প্রতিদিন সকালে দুটি গাড়িতে করে পলাশপুরের আটটি গুচ্ছগ্রামে পানি সরবরাহ করে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি বলেন, গুচ্ছগ্রামগুলোতে প্রতিদিন দুইবার ৩০ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। গভীর নলকূপগুলো থেকে যাতে পানি পাওয়া যায় সে ব্যবস্থাও নেবার চেষ্টা চলছে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পানি শাখার চলতি দায়িত্বের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ওমর ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, নগরীতে পানির গ্রাহক ২৯ হাজার। প্রতিদিন ওই গ্রাহকদের জন্য দুই কোটি ৭০ লাখ গ্যালন পানি সরবরাহ করা হয়। যাদের পানির লাইন আছে তাদের পানির সঙ্কট হচ্ছেনা। যেসব এলাকায় এখনও সরবরাহ লাইন পৌঁছেনি তারা পানি সঙ্কটে ভুগছেন। কারণ গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পুরানো গভীর নলকূপগুলোতে পানি ওঠেনা। যাদের নিজস্ব উদ্যোগে বসানো গভীর নলকূপ রয়েছে তারা পানি সঙ্কটে ভুগছেন না।

অব্যবহৃত দুই পানি শোধনাগার ॥ নগরবাসীর বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট দূর করতে ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৯-১০ অর্থবছরে নগরীর বেলতলা ও রূপাতলীতে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (পানি শোধনাগার) স্থাপন করা হয়। কিন্ত নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও ত্রুটি থাকায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ওই প্লান্ট দুটি এখনও গ্রহণ করেনি। বেলতলার প্লান্টটির একাংশ ইতোমধ্যে কীর্তনখোলায় বিলীন হয়ে গেছে। আর রূপাতলীর প্লান্টটিতে বড় ধরনের নির্মাণ ত্রুটির কারনে সেটিও চালু করা যাচ্ছেনা। বেলতলা ও রূপাতলীতে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট দুটি নির্মানের দায়িত্বে ছিলো বরিশাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। ২০১৬ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষের পর পরই কীর্তনখোলার ভাঙ্গনের কবলে পরে বেলতলার প্লান্টটি। ভাঙ্গনে প্লান্টের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ চলে যায় নদীতে। ফলে চালু হওয়ার আগেই অনেকটা সক্ষমতা হারিয়েছে ওই প্লান্টটি। রূপাতলীর প্লান্টটিতে বিদ্যুতের যে সাব স্টেশন বসানো হয়েছে তার ক্ষমতা ২৫০ কেভিএ। অথচ প্লান্টের তিন স্তর একসাথে চালাতে দরকার ৪৫০ কেভি বিদ্যুত। ফলে রূপাতলী প্লান্টটি চালু করাও সম্ভব হচ্ছেনা।

পানি শোধনাগার দুটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সিটি কর্পোরেশনের পানি শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, প্লান্ট দুটিতে বড় ধরনের অনিয়ম ও ত্রুটি ধরা পরেছে। এ অবস্থায় কর্পোরেশনের পক্ষে ওই প্লান্ট দুটি গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাই নগরবাসীর বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট দূর করতে ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি শোধনাগারের ওই প্লান্ট দুটি অব্যবহৃত অবস্থায় পরে রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD