বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশাল নগরীতে জনপ্রিয় টেইলারিং ব্র্যান্ড টপটেনের শোরুমে দুর্র্ধষ ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে।রোববার সন্ধ্যায় ৫০ থেকে ৬০ জন কিশোর-যুবক দলবেঁধে ওই শোরুমে ঢুকে মালামাল লুট করে বলে দাবি করেন শাখা ব্যবস্থাপক মো. মিরাজ।
এ সময় প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১০ জন কর্মচারীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও জানান তিনি।আটকরা হলেন ব্রজমোহন কলেজের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও সিটি করপোরেশনের যানবাহন লাইসেন্স শাখার কর্মচারী মো. রাকিব, মো. নোহান, শুভ্র, শাহাদাৎ ও সজীব।
রাকিব ছাড়া সবার বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলায়।ব্যবস্থাপক মো. মিরাজ বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে অর্ধশতেরও বেশি যুবক ক্রেতা সেজে দলবেঁধে শোরুমে প্রবেশ করে। এ সময় তারা বরিশালের এক রাজনৈতিক নেতার লোক বলে নিজেদের পরিচয় দেয়।‘কিছু সময় পর নতুন জামা, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ঘড়ি, কসমেটিকসসহ মূল্যবান সব পণ্য লুট করে দোকানের গ্লাস ভেঙে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। এ সময় স্টাফদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
একপর্যায়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়।এদিকে বরিশালের স্থানীয় অনলাইন পত্রিকা বরিশাল ক্রাইম নিউজে মহানগর ছাত্রলিগ সভাপতি জসিম উদ্দিনের নাম জড়িয়ে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে উক্ত সংবাদের প্রতিবাদে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রকাশিত সংবাদের নিন্দা প্রদান করা হয়।
এব্যাপারে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন বলেন,‘যারা লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কেউ আমার অনুসারী না।আমাকে একটি মহল রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই চক্রান্তের পথ তারা বেছে নিয়েছে।
তিনি বলেন,কিছুদিন পূর্বেও আমাকে নিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছিলো একটি চক্র।আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে এই ঘটনায় আমার নাম জড়ানো হচ্ছে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে শো-রুমের হামলা ও লুঠপাটকারীদের কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এদিকে ছাত্রলিগ সভাপতি জসিম উদ্দিনকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে বরিশাল মহানগরী এলাকায় টপ অফ দ্যা টাউনে পরিনত হয়।
এমনকি স্থানীয় একাধিক ছাত্রলীগ নেতার ফেইসবুকে নিন্দা এবং সত্য ঘটনা উন্মোচন করার স্ট্যাটাস দেয়া হয়। অন্যদিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় যাদের আটক করা হয়েছে, তারা মুলত বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের পদধারী এক নেতার অনুসারী বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশকিছু ছবি ভাইরাল হয়।
তাতে দেখা যায় বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার সাথে আটক হওয়া রাকিবের বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে এবং একান্ত অনুসারী হিসেবেও তার ছবি ফেইসবুকে দেখা যায়।আটক হওয়া মো. রাকিব বলেন, ‘আমরা কেনাকাটার জন্য এসেছিলাম।
কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের মারধর করা হয়েছে।’একই দাবি করে আরেক কিশোর শুভ্র। তিনি বলেন,জসিম উদ্দিন ভাইয়ের নাম শুনেছি কিন্তু আমরা কখোনোই তার সাথে রাজনীতি করিনি।কিন্তু এখানকার স্টাফরা আমাদের জসিম ভাইয়ের লোক বলে মারধর করে।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার ‘বোনকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছি বরিশালে। শার্ট কিনতে এই শোরুমে আসি। কিন্তু স্টাফদের সঙ্গে কয়েকজন ক্রেতার মারামারি হয়। তখন আমাকে ধরে মারধরের পর পুলিশে দেয়া হয়।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের তদন্ত অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, আটকদের থানা হাজতে রাখা হয়েছে।সন্ধ্যায় লুটপাটের ঘটনার খবর শুনে আমাদের টহল পুলিশ ফোরস পাঠালে তারা ৫জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
Leave a Reply