বরগুনায় বাম্পার ফলনের তরমুজ নিয়ে বিপাকে চাষি Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫২ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




বরগুনায় বাম্পার ফলনের তরমুজ নিয়ে বিপাকে চাষি

বরগুনায় বাম্পার ফলনের তরমুজ নিয়ে বিপাকে চাষি

বরগুনায় বাম্পার ফলনের তরমুজ নিয়ে বিপাকে চাষি




বরগুনা প্রতিনিধি॥ তরমুজের বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষক, তরমুজ ফলেছে ক্ষেত জুড়ে। বিক্রির জন্য ক্ষেত থেকে তুলেছেন। কিন্তু ক্রেতা নেই। আর এতেই বিপাকে পড়েছেন তরমুজ চাষিরা।

 

 

মৌসুমি ঋণ নিয়ে কৃষকেরা বরগুনায় কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করেন। কিন্তু করোনার কারণে পাইকার না আসায় বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় তরমুজ বিক্রির উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান তরমুজ চাষিরা।

 

 

চলতি রবি মৌসুমে বরগুনায় চার হাজার ৪৩ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে গেন্ডারি, টকটেন, ড্রাগন, কালো জাম্বু জাগুয়া, ওয়ার্ল্ড কুইনসহ বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে।

 

 

এবারো সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষ হয়েছে বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নে। ওই এলাকার দু’হাজার ২০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। এরপর আমতলি উপজেলার চাওড়া ও হলদিয়া এই দুই ইউনিয়নে এক হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। গত বছরে লোকসান কাটাতে এ বছর বরগুনায় তরমুজের আবাদ বেশি হয়েছিল।

 

 

জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ বেশি হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর তরমুজ চাষিরা লাভের আশা করছেন। কিন্তু করোনার কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ বছর ক্রেতা না আশায় বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন কৃষক।

 

 

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে তরমুজ বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়াও এ অঞ্চলের তরমুজ, গাজীপুর, বগুড়া, কুমিল্লা, গাইবান্ধা টাঙ্গাইলেও বিক্রি হয়। কিন্তু এ বছরও ঠিক বিক্রির সময়ে করোনার কারণে ওইসব এলাকা থেকে পাইকার না আসায় তরমুজ বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।

 

 

পচনশীল এই কৃষিপণ্য যথাসময়ে বিক্রি না করতে পারলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের আশঙ্কা, এবারো ক্রেতার অভাবে লোকসান গুনতে হবে তাদের।

 

 

বরগুনা সদর উপেজলার এম বালিয়াতলী ইউপির কয়েকজন তরমুজ চাষি জানান, রবি মৌসুমে তারা স্থানীয় আরতাদার, বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন ও ব্যংক থেকে ঋণ নিয়ে তরমুজ চাষ করে থাকেন।

 

 

ওই ইউপির চালিতাতলী এলাকার তরমুজ চাষি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে দেড় একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। ফলনও আশানুরূপ হয়েছে। কিন্ত পাইকার না আসছে না। যে কারণে তরমুজ বিক্রি করতে পারছিনা।

 

 

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় বাজারে কিছু তরমুজ বিক্রি করেছি, এ অবস্থা চলতে থাকলে অধিকাংশ তরমুজ নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের লাভ তো দূরে থাক, লোকসান গুনতে ভিটেমাটি বিক্রির উপক্রম হবে।

 

 

লতাকাটা এলাকার মন্টু মিয়া বলেন, গতবছরও একই সময়ে করোনার প্রকোপে পাইকার আসেনি। ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে বেশীরভাগ তরমুজ। এ বছরও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

 

 

তিনি বলেন, সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকার আমাগো তরমুজ বিক্রি ব্যবস্থা করুক, নয়ত আমরা বড় লোকসানের মুখে পড়ব।

 

 

আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউপির পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের তরমুজ চাষিরা বলেন, এ বছর আশা করেছিলাম ভালো দামে তরমুজ বিক্রি করবো, কিন্তু লকডাউনে গাড়ি আসে না, এরই মধ্যে তরমুজ নষ্ট হওয়া শুরু হয়েছে। তরমুজ বিক্রিতে আমরা সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করি।

 

 

একই উপজেলার কুকুয়া ইউপির চুনাখালী গ্রামের ওহাব মৃধা, বাহাউদ্দিন হাওলাদার ও রাজ্জাক মৃধা বলেন, গত বছর লকডাউনের কারণে পাইকার এসেও তরমুজ ক্রয় করেনি। তাই কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। এ বছরও লকডাউন থাকলে তরমুজ নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।

 

 

আমতলীর স্থানীয় পাইকার সোহেল রানা বলেন, বরগুনার উৎপাদিত তরমুজের দুই তৃতীয়াংশ দেশে বিভিন্ন স্থানের পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। লকডাউন শুরু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকাররা এ বছর তরমুজ ক্রয়ে অনিহা দেখাচ্ছেন। ফলে তরমুজ বিক্রি নিয়ে একপ্রকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সরকারি উদ্যোগ নেয়া জরুরি।

 

 

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাজার অনুসন্ধানকারী টিএম মাহবুবুল হাসান বলেন, তরমুজ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে আমরা এরই মধ্যেই ডিসি ও এসপির সঙ্গে বৈঠক করেছি।

 

 

তরমুজ চাষি ও স্থানীয় পাইকার আড়তদাররা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের তরমুজ পরিবহনের ব্যাপারে সহায়তা দেব। তরমুজ পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার বাধার সৃষ্টি যাতে না হয় সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসন ও এসপির মাধ্যমে বিশেষ ছাড় দেয়ার ব্যবস্থা করতে প্রস্তত।

 

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) কৃষিবিদ আবদুল ওয়াদুদ বলেন, কৃষি বিভাগের সহায়তায় এ বছর বরগুনায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক যাতে বিক্রি নিয়ে কোনো বিপাকে না পড়ে তাদের সে ব্যাপারে সম্ভব সব সহায়তা দিতে প্রস্তত।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD