পেটের তাগিদে ছেলে করেন আকুতি, বাবা পাতেন হাত Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




পেটের তাগিদে ছেলে করেন আকুতি, বাবা পাতেন হাত

পেটের তাগিদে ছেলে করেন আকুতি, বাবা পাতেন হাত

পেটের তাগিদে ছেলে করেন আকুতি, বাবা পাতেন হাত
ছবি: সংগৃহীত




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ উজ্জ্বল হোসেন (২৬)। সকাল হলেই ভাঙাচোরা হুইলচেয়ার নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ভিক্ষা করতে। হাতে-পায়ে শক্তি না থাকায় তার সারথী হিসেবে যোগ দেন বৃদ্ধ বাবা আনসার আলী (৬৯)। অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে তরতাজা এই যুবককে। বাড়ি থেকে দীর্ঘপথ হুইলচেয়ারে বসা ছেলেকে হেঁটে হেঁটে নিয়ে আসেন বিভিন্ন হাটবাজারে।

 

 

পেটের তাগিদে ছেলে করেন আকুতি, বাবা পাতেন হাত। কখনও ভিক্ষা মেলে আবার কখনও বা দূর দূর ছাই ছাই! দিনশেষে যা উপার্জন হয়, তাই দিয়ে কোনোমতে সংসার চালান তারা। কিন্তু কয়েক বছর আগেও পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের লাউতিয়া মৎস্যজীবীপাড়ার এই বাবা-ছেলের জীবন এমন ছিল না।

 

 

প্রতিদিন বাজারে মাছ বিক্রি করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। সংসারে অভাব থাকলেও ভিক্ষুকের তকমা ছিল না। ভাগ্য দোষে ছেলের পঙ্গুত্বে বাবাও হয়েছেন ভিক্ষুক! জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে পৌর শহরের পুরনো বাজারে বসে মাছ বিক্রি করতেন উজ্জ্বল হোসেন ও আনসার আলী। মাছ বিক্রির টাকায় কোনোমতে চলত সংসার।

 

 

চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে উজ্জ্বল সবার ছোট। বড় দুই ভাই অনেক আগেই সংসার থেকে পৃথক হয়েছেন। বোনের বিয়ের পর কপালে সুখ জোটেনি। স্বামী ফেলে চলে যান বাবার বাড়িতে। সেজ ভাই আমিরুল মানসিক প্রতিবন্ধী। বছর সাতেক আগে হঠাৎ করেই পুরো শরীরজুড়ে ব্যথা অনুভব করেন উজ্জ্বল। ক্রমশই ব্যথা বাড়তে থাকে।

 

 

এর পর জমানো অর্থ ব্যয় এবং ধারদেনা করে পাবনা, রাজশাহীর পর ঢাকার আয়ুর্বেদিক হাসপাতালে গেলে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর নিউরোলজি সমস্যার কথা বলেন চিকিৎসক। এর পর ধানমণ্ডিতে আমিনুল ইসলাম নামে এক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে থাকেন টানা কয়েক বছর।

 

 

তবে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে বললেও টাকার অভাবে ফিরে আসেন বাড়িতে। এখন হাত-পা শুকিয়ে গেছে উজ্জ্বলের। কোনো শক্তি নেই শরীরে। এদিকে বাবার শরীরেও বার্ধক্য জেঁকে বসেছে। বাধ্য হয়ে ছেড়ে দেন মাছ বিক্রির ব্যবসা। সংসারে জেঁকে বসে অভাব। বাধ্য হয়ে বাবা-ছেলে নেমে পড়েন ভিক্ষাবৃত্তিতে। দিনশেষে ভিক্ষা করে আয় হয় ৩০০-৪০০ টাকা।

 

 

এর মধ্যে সংসার চালানোর পাশাপাশি ওষুধ খাওয়ার জন্য টাকা জোগাড় করতে হয় উজ্জ্বলকে। ভিক্ষা কম পেলে মাঝে মধ্যেই ওষুধ খাওয়া হয় না তার। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকেই দূর দূর ছাই ছাই করেন। তবে বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে উজ্জ্বল আবারও চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে ফের কর্মজীবনে ফিরতে চান।

 

 

উজ্জ্বল হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, যে বয়সে বাবা (আনসার আলী) বাড়িতে বিশ্রামে থাকার কথা, সেই বয়সে তিনি আমার গাড়ির হাতল ধরে হেঁটে হেঁটে বাজার ঘোরান। বাবার কষ্ট দেখে খারাপ লাগে। কিন্তু কী করব উপায় নেই আমাদের। ভিক্ষা না করলে না খেয়ে মরতে হবে। তবে বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে আবারও চিকিৎসা করাতে পারতাম। সুস্থ হয়ে কর্মজীবনে ফিরতে পারতেন বলে জানান তিনি।

 

 

এ ব্যাপারে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বলেন, একজন বৃদ্ধ মানুষ হয়ে ছেলেকে হুইলচেয়ার বসিয়ে যেভাবে হেঁটে হেঁটে বাজার ঘুরেন, তা দেখে খুব কষ্ট লাগে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা দিয়ে এসেছি এবং তাদের কষ্ট দেখে দুজনকেই ভাতার কার্ড করে দিয়েছি।

 

 

তবে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে উজ্জ্বলের চিকিৎসার বাধা দূর হতো বলে জানান তিনি। উজ্জ্বলের সঙ্গে এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন- ০১৯৬৪-২৪৮৯২১।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD