পিরোজপুরে ৭ সন্তান মিলেও দিতে পারেনি ভরণপোষণ Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি আগ্রহ নেই শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন ব্রিঃজেঃ একেএম মশিউল মুনীর ‘সংস্কারের পাশাপাশি অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি’ : তারেক রহমান পিরোজপুরে ২৪ বছরেও সম্পন্ন হয়নি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ, জনদূর্ভোগ চরমে বরিশালে তথ্য মেলা: দুর্নীতি প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ মমতার বাঁধায় বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি ! কাউখালী উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কমিটি গঠন বিএনপির শোক মিছিলে হামলা: রিমান্ডে হাসানাতপুত্র মঈন আব্দুল্লাহ খুনি হাসিনার পুনর্বাসন, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করবে শহীদ ফাউন্ডেশন: সারজিস আলম নতুন কমিশনের দায়িত্ব ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদ




পিরোজপুরে ৭ সন্তান মিলেও দিতে পারেনি ভরণপোষণ

পিরোজপুরে ৭ সন্তান মিলেও দিতে পারেনি ভরণপোষণ

পিরোজপুরে ৭ সন্তান মিলেও দিতে পারেনি ভরণপোষণ




পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ প্রতিবন্ধী ফজলুল হক হাওলাদার ওরফে ফজলু। বয়স ৬০-এর কাছাকাছি। পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার কলারন গ্রামের এসবিআই ইটভাটা সংলগ্ন পানগুছি নদীর পারে একটি ঝুপড়িঘরে বসবাস তাঁর। স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে আর দুই ছেলে নিয়েই ফজলু মিয়ার জীবন-সংসার। একে একে মেয়েদের সবার বিয়ে হয়ে গেছে। আর দুই ছেলে তাঁদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা থাকছেন। তাঁরা দুজনই পেশায় জেলে। সংসারের টানাপড়েনের কারণে পিতা-মাতার ভরণপোষণ করাতে পারছেন না তাঁরা। এ জন্য জীবিকার টানে নিজের পুরনো বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী আলেয়া বেগমকে (৪০) নিয়েই বছর তিনেক আগে নদীর পারে কোনোমতে বসতি গড়েছেন ফজলুল হক।

 

 

তবে ১৬ বছর আগে গ্যাংগ্রিন রোগে বাঁ পায়ে পচন ধরে ফজলু হাওলাদারের। আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে সে সময় নিজের ভালো চিকিৎসা করাতে পারেননি তিনি। যার কারণে একসময় কেটে ফেলতে হয় তার এ পা। সেই থেকেই এক পা হারানো এ মানুষটিকে চলতে হচ্ছে ক্রাচে ভর করে। আর এ অবস্থায় একে একে কেটে গেছে তাঁর প্রায় ১৬ বছর। তাঁর দুই ছেলে আলমগীর (২৫) এবং এমদাদুল হক (২৩) নদীতে মাছ ধরে কোনোমতে জীবন চালাচ্ছেন। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে তাঁর দুই ছেলে থাকছেন পুরনো বাড়িতে।

 

 

এদিকে নিজের ভরণপোষণ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ায় কোনো উপায় না পেয়ে সংসার চালাতে তিন বছর আগে ফজলু মিয়া নিজেই বেছে নেন নদীতে মাছ ধরার পেশা। তাই কচা আর পানগুছি নদীর মোহনায় প্রতিদিন জাল ফেলে জীবিকা নির্বাহ করে চলে আসছে তাঁর এ সংসার। রোদ আর ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে মাছ ধরেন তিনি। নৌকা আর জালই তাঁর জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। নদীতে সব সময় মাছ না পাওয়ায় খেয়ে না খেয়ে চলে স্ত্রী আলেয়া বেগম (৪০) আর তাঁর নিজের পেট।

 

 

তাঁর বসতির আশপাশে আধা কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোনো বাড়িঘর। তাই স্বাভাবিকভাবে কোনো জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি কোনো সংস্থা- কারো নজর পড়েনি এ অসহায় পরিবারটির দিকে। জীবিকার প্রয়োজনে জনবিচ্ছিন্ন এলাকায় বসতি গড়ায় সরকারি-বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ মানুষটি। দীর্ঘ ১৬ বছর আগে পা হারিয়ে তার কপালে এখন পর্যন্ত জোটেনি কোনো প্রতিবন্ধীভাতা।

 

 

নিজের অসহায় জীবনের কথা তুলে ধরে ফজলু হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, মোর একটা পা-ও নাই। এ অবস্থায় নদীতে মাছ ধইররা জীবন চালাতে আছি। হের উপর একটা ভাঙ্গাচোরা ঝুপড়িঘরে থাহি। মাইয়া-পোলাগো সোংসারেও টানাটানি। হেরাও ঠিকমতো খাইতে পারে না। সরকার মোরে প্রতিবন্ধীভাতা আর থাহার পিন্নে যদি একটা ঘর এবং চলাফেরা করার পিন্নে একটা হুইলেচয়ার দেতে হেইলে মুই খুব খুশি হইতাম।

 

 

খোকন নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, এই ফজলু চাচায় খুব অসহায় অবস্থায় জীবন কাটাইতে আছে। এই জায়গায় সচরাচর কেউ আয় না। তাই তেমন কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাইতে আছে না হে।

 

 

ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হাই জোমাদ্দার জানান, প্রতিবন্ধী ঐ অসহায় জেলে একটি বিচ্ছিন্ন এলাকায় বসবাস করেন। তাঁর নামে শুধু জেলে কার্ড রয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে তালিকাভুক্ত করে প্রতিবন্ধীভাতা দেওয়ার বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু সম্প্রতি সরকারিভাবে ঘর দেওয়ার যে তালিকা করা হয়েছে, তাতে সম্ভবত তার নাম নেই। তবে সুপারিশ করে তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান।

 

 

এ ব্যাপারে ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মাদ আল মুজাহিদ জানান, অসহায় ঐ জেলে আবেদন করলে তাঁকে প্রতিবন্ধীভাতার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া অসহায় ব্যক্তিদের সরকারিভাবে ঘর দেওয়ার যে তালিকা করা হচ্ছে, তাতে তার নাম না থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD