রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুলে কোচিং বাণিজ্য ও অনিয়ম বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচয়ে চিঠি দিয়েছে অজ্ঞাতরা।আর অজ্ঞাতদের দেয়া এই চিঠি পাওয়া স্কুলগুলোর শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিভাগীয় কার্যালয়ের নামে ইস্যু করা এই চিঠির বিষয়ে জানে না দুদক কর্তৃপক্ষ।সূত্র জানায়, দুদক পরিচয়ে বরিশাল নগরের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি স্কুলেই ডাকের মাধ্যমে এই চিঠি পৌছে দেয়া হচ্ছে। চিঠি গুলোতে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ, ভর্তির সময় বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
চিঠিগুলো পাওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ কোচিংবাজ শিক্ষকরা দুদক পরিচয়ে পাওয়া ওই চিঠি নিয়ে ছুটছেন দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ে। দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্মরনাপন্ন হচ্ছেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, সরকারি জেলা স্কুল, বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকগণ দুদকের নামে দেয়া ওই চিঠি পেয়েছেন।
এর মধ্যে বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর দেয়া একটি চিঠিতে দেখা যায়, চিঠি প্রেরক হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধ করা ও সরকার নির্ধারিত টাকার অধিক বার্ষিক ভর্তি ফি গ্রহণ প্রসঙ্গে দেয়া চিঠিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি স্মারকও রয়েছে।
দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) কর্মকর্তা নামের একজনের স্বাক্ষরও রয়েছে ওই চিঠিতে। এর অনুলিপি দেয়া রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও শিক্ষা অফিসসহ ছয়টি দপ্তরে।
উদয়ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার শ্যামুয়েল সবুজ বালা সাংবাদিকদের জানান, দুদক পরিচয়ে যে চিঠি আমাদের কাছে এসেছে তা নিয়ে দুদক বরিশাল বিভাগীয় পরিচালকের সাথে দেখা করেছি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন এ ধরনের কোন চিঠি তারা দেননি। তাই ভুয়া চিঠি দিয়ে আমাদের হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাদের স্কুলের পক্ষ থেকে দুদককে লিখিত আবেদন করেছি। তারাই এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
অপরদিকে বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন জানান, এ ধরনের একটি চিঠি আমরাও পেয়েছি। চিঠিতে বিশেষ ক্লাস বন্ধ ও সরকারি আয়-ব্যয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে যে চিঠি আমরা পেয়েছি সেটা ভিত্তিহীন ও হয়রানিমুলক বলে মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারাই বিষয়টি দেখছেন।
এ প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. জুলফিকার আলী জানান, বিভিন্ন স্কুলে দুদকের নাম ব্যবহার করে চিঠি দুদক থেকে দেয়া হয়নি। কারা দিয়েছে তাও বলা যাচ্ছে না। এটি সম্পূর্ণ ভূয়া বিষয়। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন দুদকের এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply