সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১২ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দলীয় কোন্দল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বরিশাল আওয়ামী লীগের কোন্দল মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। মনোনয়ন বঞ্চিত মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর সমর্থকদের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামাতে নানা কৌশল করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কাউন্সিলর পদে প্রতিটি ওয়ার্ডে সাদেকপন্থিরা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সমঝোতার চেষ্টা হলেও এই প্রার্থীদের বসিয়ে দেয়ার কোনো উপায় পাচ্ছে না স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আবার এদের নির্বাচনে রেখে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতকে জিতিয়ে আনাটা দুঃসাধ্য মনে করছেন তার সমর্থকরা। এক কথায় শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা বরিশাল আওয়ামী লীগের। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের চাবিকাঠি পুরোটাই সাদিক আব্দুল্লাহর হাতে। তিনি মহানগরের সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি তারই মতাদর্শী এডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর। দলটি নিজের মতো করে সাজিয়েছেন বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
শুধু মহানগর নয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগেও তার কর্মীদের বসিয়েছেন শীর্ষপদে। বছরখানেক আগেই তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। তারা তখন থেকেই এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে মেয়র পদপ্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বরিশালের রাজনীতিতে একেবারেই নতুন। দলীয় কোনো পদও নেই তার। তার সমর্থনে রয়েছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বরিশাল-৫ আসনের এমপি কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম। মন্ত্রীর অনুসারীরাই মূলত খোকন সেরনিয়াবাতের মূলশক্তি। যখনই মেয়র পদে সাদিক আব্দুল্লাহকে বঞ্চিত করে খোকন সেরনিয়াবাতকে মনোনয়ন দেয়া হয়, তখন থেকেই দলে কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে বিশাল মিছিল করে সাদিকপন্থিরা তাদের শক্তিমত্তার জানান দেন।
এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অতিদ্রুত মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে একটি আহ্বায়ক কমিট গঠনের চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন। এটি বরিশালে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর পরপরই প্রতিটি ওয়ার্ডে সাদিকপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করে নিজেদের জানান দেন। অপরদিকে মন্ত্রী সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ১নং সদস্য এডভোকেট কেবিএস আহমেদ কবির বলেন, আমরা সমঝোতার চেষ্টা একাধিকবার করেও ব্যর্থ হয়েছি। আমরা বুঝতে পারছি, কমিটি ভেঙে দিলে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য মনোনয়ন ফরম ক্রয়ের পর হিসাব করবো কি করতে হবে। তবে তিনি স্পষ্ট জানান, কোন্দল মেটানোর দায়িত্ব বরিশাল আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে নেই। যা করার কেন্দ্রীয় নেতারাই করবেন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অপর সদস্য এডভোকেট লস্কর নুরুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত সাদিক সমর্থিত আওয়ামী লীগের ৮০ভাগ নেতাকর্মী নৌকার পক্ষে রাস্তায় নামেনি। এরা স্বতন্ত্র হিসাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণসংযোগ করছেন, কিন্তু মেয়র পদে ভোট চাচ্ছেন না। এটি একটি অশনি সংকেত বলে তিনি মনে করেন। তিনিও দ্রুত কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Leave a Reply