বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ ছোট বেলা থেকেই নাম তার ‘ইয়াছিইন্যা চোর’। তাই প্রকাশ্যে এলেও শীত-গরম সব সময় মাফলার পেঁচিয়ে রাখতেন নাকে মুখে। যেন কেউ তাকে চিনতে না পারে। পরিবারে বংশাণুক্রমেই আয় রোজগারের পথ ছিল দিনমজুরি ও রিকশা চালানো। কিন্তু হঠাৎ সেই পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে জড়িয়ে পড়েন গরু চুরিতে। গরু চুরিতে ‘সফলতা’ পেয়ে নামেন অটোরিকশা চুরিতে। চালককে অচেতন করে এমনকি হত্যা করেও হাতিয়ে নেন অটোরিকশা।
পরিবারের প্রায় সকলেই কোনো না কোনোভাবে চুরি পেশার সঙ্গে জড়িত। বারবার ধরা খেলেও বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে বেড়িয়ে পড়েন। ফের দাপটের সঙ্গে চুরি কর্মে নেমে পড়েন। দীর্ঘদিন পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে ধরা পড়েছেন ইয়াছিন। তবে তাকে আদালতে না পাঠিয়ে অভিযানের নামে এখনো থানায় আটক রাখা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কিশোরগঞ্জ শহর থেকে অটোরিকশাসহ তাকে আটক করা হয়। এরপর তাকে থানায় রাখা হয়েছে। তাকে নিয়ে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। সে আন্তঃজেলা অটোরিকশা এবং গরু চুরির সঙ্গে জড়িত।
নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযান অব্যাহত আছে। তাকে নিয়ে পূর্বের চুরির মালামালসহ তার সাঙ্গদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।
থানা সুত্রে জানা গেছে, নান্দাইল থানা ছাড়াও আশপাশের বেশ কয়েকটি থানায় তার নামে রয়েছে একাধিক চুরির মামলা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার পুরো নাম মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে ইয়াছিন মিয়া (৪৫)। বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের আতকাপড়া গ্রামে। বাবা ফরিদ মিয়াসহ দুই ভাই রোমান মিয়া ও জামান মিয়া এবং পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের ধনিয়াকান্দি গ্রামের শ্বশুর আবু ছায়েদের ছেলে শ্যালক তোফাজ্জল হোসেনসহ (৩০) পরিবারের সকলেই এখন চুরির সঙ্গে জড়িত।
পৈত্রিক ঘরটির জরাজীর্ণ থাকলেও পাশেই কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করা হয়েছে পাকাঘর। যা দেখে প্রতিবেশীরা ছাড়াও এলাকার লোকজন হতবাক হয়ে যায়। অনেকেই বলেন, আগে শুনতেন চোরের বাড়িতে বিল্ডিং হয় না। এখন শুধু বিল্ডিং না বিভিন্ন সড়কে চলমান বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস ছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা রয়েছে তাদের। রয়েছে পাশের গফরগাঁও উপজেলায় একটি অটোরিকশা শো-রুমের শেয়ার। সব মিলিয়ে আনুমানিক কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক ইয়াছিন চোর।
নান্দাইল থানার পুলিশ কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, তার নামে নান্দাইল থানাতেই চারটি মামলা রয়েছে। সবগুলোই অটোরিকশা চুরির।
Leave a Reply