ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে রাতের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ‘বাল্কহেড’ Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৩ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে রাতের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ‘বাল্কহেড’

ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে রাতের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ‘বাল্কহেড’

ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে রাতের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ‘বাল্কহেড’




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ ঢাকা-বরিশাল নৌরুট নদীপথে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম বালুবাহী নৌযান ‘বাল্কহেড’। রাতে এই বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না অসাধু বাল্কহেড চালক ও মালিকরা। কোনো কোনো স্থানে নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে ম্যানেজ করে চলাচল করছে এই জলযানটি। ফলে একের পর এক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানী ঘটছে। সর্বশেষ গত বুধবার রাতে মুন্সীগঞ্জের কাছে গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে ঢাকা থেকে বরিশালে আসার পথে যাত্রীবাহী সুরভি-৭ লঞ্চের ধাক্কায় একটি বাল্কহেড ডুবে যায়। এতে বাল্কহেডের একজন নিখোঁজ হন। লঞ্চটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 

 

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ-স্টিমার ও জাহাজের যাত্রা নিরাপদ করতে যাত্রীবাহী নৌরুটে রাতে বাল্কহেডসহ পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। তবে রাতে বাল্কহেডসহ পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়নি বলে দাবি করেছেন লঞ্চের মাস্টাররা। লঞ্চচালক ও মাস্টারদের দাবি, নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার মোড়ে অধিকাংশ সময় তিনটি ট্যাঙ্কার নোঙর করে রাখা হয়।

 

 

ফলে এই স্থানেরও নৌপথ সরু হয়ে গেছে। সম্প্রতি সঙ্কুচিত পথ অতিক্রমকালে লঞ্চের আঘাতে ৪টি ট্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পৃথক এই দুর্ঘটনায় বিপুল অঙ্কের টাকা জরিমানা দিয়েছেন লঞ্চমালিকরা। মুন্সীগঞ্জ মোড় থেকে মোহনপুর পর্যন্ত দিনে-রাতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন লঞ্চচালকরা।

 

 

জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অভিযানের পর ৪-৫ দিন বন্ধ থাকলেও ফের নদীতে নামে বাল্কহেড। নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে অর্থ দিয়ে রাতের বেলায় এই বাল্কহেড চলাচল করছে। যার কারণে ঘটছে এই দুর্ঘটনা।

 

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি হিসাবে ৪ হাজার ৭০০টি নিবন্ধিত বাল্কহেডের কথা বলা হলেও সারা দেশের নদীতে চলছে প্রায় ১১ হাজার বাল্কহেড। আর এসব অবৈধ বাল্কহেড চলছে দক্ষ মাস্টারের পরিবর্তে অদক্ষ সুকানি দিয়ে। যে নৌযানের ফিটনেসের বালাই নেই। চালকরা স্বীকারও করছেন প্রশিক্ষণ না থাকার কথা। বুড়িগঙ্গা, মেঘনা, ধলেশ্বরী, কীর্তনখোলা, আড়িয়ালখাসহ বিভিন্ন নদীতে বেপরোয়া গতিতে চলা বাল্কহেডের ধাক্কায় প্রতিনিয়ত ডুবছে যাত্রীবাহী নৌযান, প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। গত ১ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ৫ জন নিহত হয়েছেন।

 

 

এর আগে গত বছর ৩ মে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের কাঁঠালবাড়ী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় বাল্কহেডের ধাক্কায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। গত বছর ২১ মে রাতে ঢাকা থেকে লালমোহনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এমভি গ্লোরি অব শ্রীনগর-২ লঞ্চটির সঙ্গে বালুবাহী বাল্কহেডের সংঘর্ষ হয়। মেঘনায় ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় লঞ্চটির ডানদিক পানিতে নিমজ্জিত হলেও প্রায় আড়াইশ যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়। তিন দিন পর ২৪ মে রাতে কয়েকশ যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে এমভি মানামী। মধ্যরাতে ঝড়ের কবলে যখন মেঘনায় লঞ্চটি নিরাপদ আশ্রয়ে যায় তখন হঠাৎ কোনো বাল্কহেড লঞ্চটির মাঝ বরাবর ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চের নিচতলা ও দ্বিতীয়তলার কেবিনসহ বেশকিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এক যাত্রী গুরুতর আহত হন।

 

 

একই রাতে পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় তিনশ যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে প্রথমে ঝড়ে ও পরে ভাটার কারণে আটকে পড়ে এমভি যুবরাজ-৭ লঞ্চ। সব প্রতিকূলতা এড়িয়ে সকালে যখন লঞ্চটি যাত্রা শুরু করে তখন মেঘনা নদীর মিয়ারচরে পৌঁছলে একটি বাল্কহেড সেটিকে ধাক্কা দেয়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তলা ফেটে গেলে লঞ্চটিকে চরে তুলে দিয়ে যাত্রীদের প্রাণ বাঁচানো হয়।

 

 

অপরদিকে বাল্কহেডটি ডুবে গিয়ে মিয়ারচরে নৌযান চলাচলের চ্যানেলটি আটকে যায়। এর পরের রাতেই ঢাকা-বরিশাল রুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলো কালীগঞ্জ রুট থেকে ঘুরে চলাচল করেছে। এমভি সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মো. আলম বলেন, রাতে অবৈধভাবে নদীতে যারা বালু উত্তোলন করে তাদের যেমন ঠেকাতে হবে, তেমনি যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের রুটে রাতে বাল্কহেড-কার্গোসহ ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি মাছ শিকারের জাল ফেলাও বন্ধ করতে হবে। নয়তো দুর্ঘটনার শঙ্কা থেকেই যাবে।

 

 

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ এর বন্দর ও পরিবহণ বিভাগের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাল্কহেড নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নৌপুলিশের। এ বিষয়ে বারবার আমরা চিঠি দিচ্ছি। রাতে বাল্কহেড না চলার বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। রাতের আঁধারে নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও বেশির ভাগ নদীতে তা মানা হচ্ছে না বলেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD