রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন
রাজাপুর প্রতিনিধি॥ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় চোর আখ্যা দিয়ে ইমরান (২৮) নামে এক যুবককে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। একই সময় ভাইকে মারধরের খবর পেয়ে এগিয়ে আসলে বোন ফাতেমাকেও মারধরসহ শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শনিবার (২ অক্টোবর) রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, রাজাপুর উপজেলার নিজামিয়া গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেনকে চোর আখ্যা দেয় একই এলাকার সিদ্দিক বিশ্বাস। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে শুক্রবার (১ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে ইমরানের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় সিদ্দিক বিশ্বাস, তার স্ত্রী, দুই ছেলে গিয়াস বিশ্বাস ও রিফাত বিশ্বাসসহ ৫ থেকে ৬ জন। ওই সময় ইমরানকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়।
পরে ভাইকে মারধরের সংবাদ পেয়ে ফাতেমা ছুটে গেলে তাকেও মারধর করে পরিহিত কাপড় ছিঁড়ে শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়। একপর্যায়ে ইমরানকে গুরুতর আহতাবস্থায় রাজাপুর হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানেও প্রতিপক্ষ হামলাকারীরা প্রভাব খাটিয়ে একদিনের মধ্যে ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তীকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হলে সেখানেও ঘটে একই ঘটনা। একপর্যায়ে কোনো উপায় না পেয়ে বর্তমানে ইমরান ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আর তার বোন ফাতেমা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতেই বিশ্রামে আছেন।
ফাতেমা জানান, ভাইকে মারধরের খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে ছাড়িয়ে দিতে চাইলে সিদ্দিক বিশ্বাসের ছেলে গিয়াস আমাকে মারধর করে। একই সাথে পড়নের ওড়না ও জামা টেনে ছিঁড়ে ফেলে।
ফাতেমা আশঙ্কা প্রকাশ করে আরও জানান, আমার ভাই মৃত্যুশয্যায়। তারা গলা টিপে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমি ছাড়াতে গেলে আমাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করে পরিধেয় কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে। আমরা যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি তার সঠিক বিচারের দাবি জানাই।
স্থানীয় বাসিন্দা শামীম জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হলে সিদ্দিক বিশ্বাসের স্ত্রী এসে তাকে জড়িয়ে ধরে। এ সময় ফাতেমা এলে সিদ্দিকের ছেলে দুটি ঘুষি দেয়।
অন্যদিকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জানান, আমরা উভয়পক্ষ নিয়ে শালিস-মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টায় আছি।
এ বিষয়ে বড়ইয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন সুরুমিয়া জানান, ঘটনার পরে স্থানীয় দুইজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। তারা সমাধানের চেষ্টা করছেন। আশা করছি, দ্রুতই এর সমাধান করা সম্ভব হবে। তবে রাজাপুর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, নিজামিয়া গ্রামে হামলার ঘটনায় একটি অভিযোগ এসেছে। পুলিশ ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply