রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত ও জোয়ারে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বরগুনার বেশ কিছু অঞ্চল। জোয়ারের সময় নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দুই থেকে তিন ফুট বেড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপকূলের হাজারো পরিবার। পানিতে ডুবে গেছে শতাধিক মাছের ঘের।
অতি বর্ষণের সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ায় সৃষ্ট ঢেউয়ে জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা ও বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলার বাইনচটকি ফেরিঘাটের মাঝি নাসির মিয়া বলেন, জোয়ারে নদের পানি এলাকায় প্রবেশ করেছে। অনেকের ঘরের ভেতর পানি ওঠে গেছে। চুলাও ডুবে গেছে। অনেক বাড়িতে এখন রান্না বন্ধ।
সদর উপজেলার মাছ চাষি সাকিব ফরাজি বলেন, ‘আমার ঘেরের অনেক মাছ বেরিয়ে গেছে। জাল দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করছি। বৃষ্টি না কমলে মাছ রক্ষা করার কোনো উপায় নেই।’
পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়নের বাসিন্দা সেলিম মিয়া বলেন, আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি না নামলে এবার বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তিনি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মাহতাব হোসেন জানান, অতি বর্ষণে বরগুনার পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এবার জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। এসব জমিতে আমন আবাদের জন্য ১৫ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলা করা হয়। প্রবল বর্ষণের কারণে অধিকাংশ এলাকার বীজতলা এখন ডুবে আছে। এতে বীজতলার চারাগুলোতে পচন ধরার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী কায়সার আহমেদ বলেন, ২২টি পোল্ডারের ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বেশকিছু এলাকা ভাঙন কবলিত। জরুরি ভিত্তিতে সে সব এলাকার বাঁধ রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) এলাকার খোঁজ খবর রাখার জন্য বলেছি। অতি বর্ষণের কারণে সৃষ্ট প্লাবনের শিকার বাসিন্দাদের সরকারের পক্ষ থেকে আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।
Leave a Reply