মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ অপরাহ্ন
শাকিব বিপ্লব ।। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম শুধু বরিশালের নদী নয়, গ্রাম উন্নয়নের ভাবনায় নিয়েছেন নতুন উদ্যোগ। নদীবেষ্টিত একটি চরাঞ্চলে পল্লীবিদ্যুতের সহায়তায় আধুনিকতার আলো জ্বালিয়ে গ্রামবাসীদের অন্ধকার থেকে আলোকিত করার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ২০ হাজার মানুষ অধ্যুষিত চরাঞ্চলের সেই গ্রামটির নাম ‘নলচর’। বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়ন অর্ন্তগত এই গ্রামে পৌঁছাতে নদীপথে প্রায় এক ঘণ্টা দূরত্ব হলেও গত ৪৮ বছরেও বিদ্যুতের দেখা মেলেনি।
আড়িয়াল খাঁ ও কালাবদর নদীবেষ্টিত ছোট্ট এই চরে বিদ্যুৎতায়িত হচ্ছে, এমন খবরে সেখানকার মানুষ যেমন অপেক্ষায়, তেমন পুলকিতও বটে। এতদিন সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে সেখানকার ৭০ শতাংশ মানুষ আলোর সহায়তা নিয়েছিল। এবার পল্লীবিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়- বরিশালের প্রায় সব এলাকায় বিদ্যুতায়িত হলেও কিছু কিছু নদীতীর বর্তী এলাকা নানান জটিলতায় আলোকিত করা যায়নি। এবার পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম সেই অন্ধকার গ্রামের দিকে দৃষ্টি ফেলেছেন অনেকটা কাকতালীয়ভাবে। বলা বাহুল্য যে স্বাধীনতা উত্তর জনপ্রতিনিধি বা মন্ত্রী পদমর্যদার ব্যক্তি হিসেবে জাহিদ ফারুক শামীমই একমাত্র জন যে কী না অঞ্চলে প্রথম পা ফেললেন, সাথে উন্নয়নের উদ্যোগও নিলেন।
ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে- প্রতিমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় প্রায় সফরে আসলে নদীভাঙন প্রতিরোধে নানান উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙন আগ্রাসন দেখতে সম্প্রতি স্পিডবোটযোগে মন্ত্রী সরেজমিনে গেলে নলচরবাসী বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন তাদের বসবাসের কথা জানিয়ে একটি আর্জি রাখেন। তাৎক্ষণিক মন্ত্রী বিষয়টির গুরুত্ব অনুধান করেন এবং সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মধুকে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে অতিদ্রুত সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছানোর সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। প্রায় তিন মাসকাল প্রাণান্তকর চেষ্টায় ভাইস চেয়ারম্যান মধু পল্লী বিদ্যুতের সাথে সমন্বয় করে সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন।
জানা গেছে- বিদ্যুৎ সংযোগের তার এবং খুঁটি বসানোর অধিকাংশ কাজ প্রায় সম্পন্নের পথে। বরিশাল পল্লীবিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার শঙ্কর কুমার কর আশা করছেন- আগামী মাসের যেকোন সময় সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তবে কবে নাগাদ আনুষ্ঠানিকতা হবে তা এখনও এই কর্মকর্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। তিনি জানান- অবশ্য ঘটা করেই সেখানে বিদ্যুৎতায়িত প্রক্রিয়ার শেষ আনুষ্ঠানিকতা হবে ৪৮ বছরের ফাড়া কাটার কারণে। প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম সুইচ চেপে পুরো চরাঞ্চল আলোকিত করার সূচনা করবেন বলে তিনি নিজেই আশাবাদ ব্যক্ত করায় গ্রামবাসী এখন তার আগনের অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছেন।
নলচর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে- সেখানকার মানুষের মাঝে বিদ্যুৎ আসা নিয়ে এক ধরনের আগ্রহের ব্যকুলতায় চোখেমুখে আনন্দের ছাপ। প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মিলন অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে নলচরবাসী কখন জ্বলবে আধুনিকতার আলো। সেই আলো প্রাপ্তির প্রতিদান হিসেবে প্রতিমন্ত্রীকে বরণে ছোট্ট এই গ্রামের বাসিন্দা পল্লীবিদ্যুতের আনুষ্ঠানিকতার অংশিদার হতে চায়। এমন অভিব্যক্তি শোনা গেল অন্ধকারে ডুবে থাকা দীর্ঘকালের মানুষের উচ্ছ্বাসে-কণ্ঠে।
Leave a Reply