সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ০৪:৪০ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালী জেলায় গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাত ও নদীভাঙনে ভয়াবহ দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। গতকাল বিকেল থেকে উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে বইছে দমকা হাওয়া, আর থেমে থেমে হচ্ছে ভারী বৃষ্টিপাত। শুক্রবার (৩০ মে) পর্যন্ত জেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল পানির নিচে চলে গেছে। এতে হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গলাচিপা উপজেলার পানপট্রি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে আশপাশের তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে রাঙ্গাবালীর চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্য অংশের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পুরো ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। চরআন্ডা গ্রামেও নদীর পানি ঢুকে পড়ায় সেখানে বেড়েছে দুর্ভোগ। দুই দফা জোয়ারে নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের বাইরে থাকা ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, কৃষিজমি—সবই পানির নিচে।
বিশেষ করে কুয়াকাটা সী-বিচ সংলগ্ন নতুন নির্মিত সড়ক ঢেউয়ের আঘাতে ধসে পড়েছে। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, ভেঙে পড়েছে গাছ, কিছু ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। বাউফল উপজেলায় এক বৃদ্ধ গাছ চাপা পড়ে আহত হয়েছেন, তার হাত ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল-ড্রেন দখল ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। অনেক দোকানে পানি ঢুকে লক্ষাধিক টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্কতা হিসেবে পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি রেখেছে। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারও দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, আট উপজেলায় ৮৪ মেট্রিক টন চাল, প্রতিটিতে তিন লাখ টাকা করে শুকনো খাবারের জন্য, এবং ঢেউটিন বিতরণের জন্য নয় লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্লাবিত এলাকাগুলোতে সহায়তা কার্যক্রম চলছে এবং যেকোনো দুর্যোগে জনগণের পাশে থাকবে প্রশাসন।
Leave a Reply