কেউ কথা রাখেনি ! Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




কেউ কথা রাখেনি !

কেউ কথা রাখেনি !

কেউ কথা রাখেনি !




বেতাগী প্রতিনিধি॥ ঘুরে ফিরে পৌরবাসীর সামনে আবারও নির্বাচন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বেতাগী পৌরসভার পঞ্চম নির্বাচন।

 

এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থীসহ তিন জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাছাড়া কাউন্সিলর পদে ২৬ জন এবং মহিলা কাউন্সিলর পদে আরও ৯ জনসহ মোট ৩৮ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে আছেন। প্রচার প্রচারণায় প্রার্থীরা পুরনো সেই প্রতিশ্রুতিই নতুনভাবে তুলে ধরে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। তবে নির্বাচনের পর প্রতিশ্রুতির কতটুকু বাস্তবায়ন হবে সেই প্রশ্ন এখন ভোটারদের মাঝে।

 

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস থেকে বেতাগী পৌরশহরকে রক্ষার জন্য ২০০১ সালে বিষখালী নদীতে ব্লক ফেলার কাজের উদ্ভধন করেন এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তারপর আর তেমন কোন কাজ হয়নি। এরপর ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলায় ভেঙে যাওয়া শহররক্ষা বাঁধ স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য ২০১১ সালে পুনরায় উদ্যোগ নেয়া হয়।

 

কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শুধু ব্লক তৈরি করে বাঁশ, বালি ও বস্তার চট রেখে লাপাত্তা হয়ে যায়।

 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ বাঁধ মেরামতের নামে লাখ লাখ টাকা লুট হয়েছে। পরবর্তীতে ছয় বছর পর ২০১৭ সালের ২০ মে বিষখালী নদীর তীব্র ভাঙন থেকে বেতাগী উপজেলাকে রক্ষা করতে বেতাগী পৌর শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তৎকালীন স্থানীয় সরকার বিভাগের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক একটি প্রকল্প অনুমোদন করে এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

 

একটানা ৩ বছর অতিক্রম হলেও প্রকল্পটি এখন কেবল শুধুই কাগজে-কলমে দেখা যায় এবং জনপ্রতিনিধিদের মুখে শোনা যায়। বাস্তবে এ প্রকল্পের কোনো দেখাই নেই। প্রকল্পের দৃশ্যমান যেটুকু ছিল তা শুধু শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর। এখন সেটিও ভাঙনের মুখে পড়ে বিষখালী নদীগর্ভে বিলীনের পথে।

 

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় তিন কিলোমিটার ব্যাপী শহররক্ষা বাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ায় পাল্টে যাচ্ছে বেতাগী পৌরসভার মানচিত্র।

 

বেতাগীর বন্দর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী কাঠবাজার, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছরের পুরনো কালীমন্দির ও শ্মশানঘাট, পুরাতন ডাকবাংলো,পুরনো থানাপাড়া, কেওড়াবুনিয়া,ছোট মোকামিয়া, ঝোপখালী গ্রামসহ বিষখালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে ১০ হাজার পরিবার।

 

 

এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে পুরো বেতাগী বন্দরসহ বেতাগী বাজার পানিতে তলিয়ে যায়।

 

এসময় পৌরসভার পার্শ্ববর্তী ঝোপখালী গ্রামের শতাধিক পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছিল । তাছাড়া বেতাগীর ঐতিহ্যবাহী একমাত্র কাঠবাজারের অর্ধেকের বেশি দোকান ও স’ মিল বিষখালী নদীর করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে।

 

 

আকাশে মেঘ আর বিষখালী নদীর পানি একটু ফুঁসলেই নির্ঘুম রাত কাটে নদী তীরবর্তী মানুষের। নদী সংলগ্ন হলেও ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য বরগুনার বেতাগী পৌরসভায় নেই কোন টেকসই শহররক্ষাবাঁধ।

 

ফলে দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে পৌরসভাসহ আশেপাশের কয়েক গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ । পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি।

 

এসব এলাকার বেশিরভাগ মানুষকে বসবাস করতে হয় জোয়ার ভাটার নিয়ম মেনে। এ নদীর স্রোত আর ভাঙ্গন কেঁড়ে নিচ্ছে জনবসতি, মাথা গোজার ঠাঁই বসতভিটাও। জোয়ার-ভাটার হলি খেলায় সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অসংখ্য পরিবার। পৌরসভায় কত মেয়র আসে কত মেয়র যায়। কিন্তু ভাগ্য বদলায় না পৌরবাসীর।

 

 

জানা যায়, ১৯৯৯ সালে বেতাগী পৌরসভা গঠন করার পর এ পর্যন্ত ৪টি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবার পৌরসভায় নির্বাচনের সময় মেয়র প্রার্থীদের প্রধান প্রতিশ্রুতিই থাকে টেকসই শহররক্ষাবাঁধ নির্মাণ এবং শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন।

 

গত ২১ বছরে ভোটের মাধ্যমে বেতাগী পৌরসভায় মেয়র বদল হয়েছে চারবার। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি একটুও। ফলে মানুষের দুর্ভোগও কমেনি।

 

 

এ অবস্থায় বিষখালী নদী তীরবর্তী পৌরবাসীসহ আশেপাশের এলাকার মানুষের দুঃখ দূর্দশার যেন শেষ নেই। প্রায় প্রতিবছরই উপকূলে আঘাত হানে কোনো না কোনো ঘূর্ণিঝড়।

 

নড়বড়ে শহররক্ষা বাঁধ এবং বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় সহস্র একর ফসলি জমি। জলোচ্ছ্বাসের স্রোতে ভেসে যায় শত শত মাছের ঘের। মুখ থুবড়ে পড়ে উপজেলার কৃষি ও মৎস্য খাত। নিঃস্ব হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। যুগ যুগ ধরে চলা প্রকৃতির এমন নিষ্ঠুরতার পরও মজবুত ও টেকসই শহররক্ষাবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এ জনপদের মানুষ।

 

 

কাঠবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, শিগগিরই পৌরশহররক্ষা তথা কাঠবাজার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া দরকার। তা না হলে বিষখালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে কয়েক বছরের মধ্যে কাঠবাজারের অস্তিত্ব কিছুই থাকবে না।

 

 

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র এবিএম গোলাম কবির বলেন, নানা জটিলতায় বেতাগী শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পটি আটকে ছিল। ইতোমধ্যে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই তারা একটি প্রকল্প তৈরি করবেন। আমি পুনরায় নির্বাচিত হতে পারলে চেষ্টা করব শহর রক্ষা বাঁধের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে।

 

 

বেতাগী পৌরসভার শহররক্ষা বাঁধের বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আহমেদ বলেন, সদর উপজেলা এবং বেতাগী উপজেলার মোট চারটি ভ্রমণ স্থানের বাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছি। ওই প্রকল্পে বেতাগী শহর রক্ষা বাঁধ রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রকল্প অনুমোদন করলে আমরা বেতাগী শহররক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করবো। চারটি ভাঙ্গন কবলিত স্থানকে একটি প্রকল্প করার সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি গত জুন মাসে মন্ত্রনালয় পাঠানো হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD