করোনা দুর্যোগের মধ্যে হিজড়াদের তাণ্ডব Latest Update News of Bangladesh

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




করোনা দুর্যোগের মধ্যে হিজড়াদের তাণ্ডব

করোনা দুর্যোগের মধ্যে হিজড়াদের তাণ্ডব

করোনা দুর্যোগের মধ্যে হিজড়াদের তাণ্ডব




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বাচ্চা লাচাইতে (নাচাতে) দে, নইলে তোরা বিপদে পড়বি! বাচ্চা পানিতে পড়বো, করোনায় মরবো। এমন সব ভয়ঙ্কর অভিসাপ দিয়ে নবজাতকের পরিবারে ভীতির সৃষ্টি করে হাজার হাজার টাকা, কাপড়চোপড়, চাল-ডালসহ বিভিন্ন মালামাল হাতিয়ে নিচ্ছে হিজড়ার দল। গত এক মাস ধরে করোনার এই দুর্যোগের মধ্যে বাগেরহাটের শরণখোলার গ্রামাঞ্চলে তান্ডব চালাচ্ছে এই নপুংসক জাতি। এ পর্যন্ত ৫০বাড়িতে হানা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

চাহিদা পূরণ না করলে বাচ্চা ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হাতে-পায়ে ধরে এমনকি বাচ্চা লুকিয়ে রেখেও রেহাই পাচ্ছে না সন্তানের মা-বাবারা। কমিশনে রাখা খোঁজারুরা কোনো বাড়ি সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে তার সন্ধান দিয়ে দিচ্ছে হিজড়াদের। করোনায় কর্মহীন, দিনমজুর ও অসহায় অনেক পরিবারকে হিজড়াদের অনৈতিক দাবি মেটাতে গিয়ে পড়েছে চরম সংকটে। তাদের অত্যাচারে গ্রামের মানুষ ও নবজাতকের পরিবার অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

আগে হিজড়ারা শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারের দোকানদারদের কাছ থেকে তোলা ওঠাতো। পাশাপাশি বাচ্চাদের নাচিয়েও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিত। কিন্তু বর্তমানে করোনার কারণে তাদেরকে আর হাটবাজারে দেখা যায় না। এখন তারা গ্রামেগঞ্জে ঘুরে নবজাতকের বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর ভোলার পাড় গ্রামের ভ্যানচালক আলামিন হাওলাদার জানান, তার একমাত্র মেয়ে মরিয়মের বয়স দুই মাস। গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে তিন হিজড়া তার বাড়িতে হাজির হয়ে তিন হাজার টাকা দাবি করে। একদিন ভ্যানের চাকা না ঘুরলে যার সংসারের চাকাও অচল হয়ে পড়ে, তার কাছে তিন হাজার টাকা দাবি করায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। পরে হাতে-পায়ে ধরে এক হাজার টাকা দিয়ে কোনোমতে রক্ষা পান আলামিন।

ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক মো. জাকারিয়া আকন জানান, এক সপ্তাহ আগে হিজড়ার দল বাড়িতে ঢুকে তার এক মাস বয়সের ছেলে জারিফকে জোর করে তুলে নিয়ে ঝাকিয়ে নৃত্য শুরু করে। এতে তার বাচ্চা ভয়ে চিল্লাতে থাকে। তারা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করলে দুই হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে রেহাই পান।

ভোলার পাড় গ্রামের চায়ের দোকানী মনি সংকর হালদার জানান, করোনার মধ্যে তার দোকানে তেমন বেচাবিক্রি নেই। সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। এরই মধ্যে হিজড়ার দল তার বাড়িতে গিয়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। এতো টাকা কোথায় পাবেন বলতেই তার আট মাসের পুত্র সন্তান সূর্যকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে অনেক কষ্টে তিন হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে বাচ্চাকে ছাড়িয়ে রাখেন।

মাসখানেক আগে ধানসাগর গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মী সুমী রাণীর একমাত্র কন্যা সন্তান ছয় মাসের শ্রেয়সীকে নানা রকম অভিসাপ দিয়ে ১২ হাজার টাকা দাবি করে থাকে তিন হিজড়া। তারা সুমীকে বলে, মেয়ে লাচাইতে দে, নইলে তুই বিপদে পড়বি। করোনায় ধরবো। তোর মেইয়ে পানিতে পড়বো। হিজড়াদের এমন অভিসাপে ভীত হয়ে পড়েন সুমী ও তার পরিবার। বাচ্চা নাচাতে না দেওয়ায় এবং তাদের দাবি পূরণ না করায় শরীরের কাপড় খুলে উদ্দাম নৃত্য করতে থাকে হিজড়ারা। পরে চার হাজার টাকা ও সাত কেজি চাল দিয়ে বিদায় করা হয়।

এ ছাড়া রাজাপুর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রুহুল আমীন শিকারীর বাড়ি থেকে এক হাজার টাকা ও আড়াই হাজার টাকা দামের একটি শাড়ি, ভোলার পাড়ের পান-সিগারেটের দোকানি কবির বয়াতীর বাড়ি থেকে ৫০০ টাকা, পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের দিনমজুর নজরুল হাওলাদারের বাড়ি থেকে এক হাজার টাকা, রাজাপুর গ্রামের দিনমজুর মো. রাজা হাওলাদারের বাড়ি থেকে ৬০০ টাকা, চাল-ডাল এবং ধানসাগর গ্রামের দিনমজুর আলমগীর হাওলাদারের বাড়ি থেকে ৫০০ টাকা এবং সাত কেজি চাল হাতিয়ে নেয়।

রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর উত্তর রাজাপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাকির খান ও ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সাজেদুর রহমান আজাদা জানান, গত এক মাসে তাদের দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কমপক্ষে ৫০ বাড়িতে হানা দিয়েছে হিজড়ারা। করোনর এই মুহূর্তে অনেক গরিব মানুষের সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের অস্বাভাবিক আচরণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মানুষ। এদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ওই দুই জনপ্রতিনিধি।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। বতুও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। তবে, এ ব্যাপারে হিজড়া দলের কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD