শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বিভিন্ন অনিয়ম ও অপকর্মের দায়ে অভিযুক্ত পলাতক আসামি রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদ করিমের ঘনিষ্ঠদের তালিকা করছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। শাহেদের সাথে যাদের ছবি গণমাধ্যমগুলোতে এসেছে তার উত্থানের পেছনে ওইসব ব্যক্তিদের কার কী ভূমিকা ছিলো, শাহেদের কাছ থেকে তারা কী ধরনের সুবিধা নিয়েছে সেসব বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শাহেদের সঙ্গে কার কার যোগাযোগ ছিল, কারা তার অপকর্মের সহযোগিতা করতেন তারও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এতে শাহেদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা ও ঘনিষ্ঠদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শাহেদের অন্যতম সহযোগী তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে শাহেদ সম্পর্কে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে।
টেস্ট না করেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে নিয়ে তোলপাড় চলছে সারাদেশে। মুখরোচক গল্প এখন শুধু এক শাহেদে সীমাবদ্ধ নেই, আলোচনায় এসেছে আরো কয়েকজনের নাম। বিভিন্ন ভিআইপিতে সাথে তোলা ছবিও হয়েছে ভাইরাল।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নায়েব আলী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, জনৈক ‘মোহাম্মদ শাহেদ’ কখনও নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর, কখনও লে. কর্নেল আবার মাঝে মাঝে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের সাবেক ছাত্র এবং ১৪তম বিএমএ লং কোর্সের অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন ভয়ঙ্কর প্রকৃতির লোক। প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ৪২০ ধারায় ঢাকার বিভিন্ন থানায় ৩১টিসহ মোট ৩২ মামলা রয়েছে। চিঠিতে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
তারপরও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো ধরনের ব্যবস্থা। উল্টো শাহেদ হয়ে উঠেন বেপরোয়া। সরকারের শীর্ষ মহলের নাম ব্যবহার করে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন তিনি। রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখার একটি কক্ষে শাহেদ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যদের আটকে নির্যাতন চালাতেন বলে জানা গেছে। তার প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখেই প্রশাসন থাকত নীরব।
প্রতিদিন ভিআইপি মর্যাদায় বড় অফিসারদের কক্ষে বসে আড্ডা মারতেন। পরে তাদের মাধ্যমে তদবির বাণিজ্যও করতেন শাহেদ। প্রভাবশালীদের সঙ্গে চলাফেরা আর ছবি তুলে তা ফেসবুকে শেয়ার করে নিজেকে ধীরে ধীরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত প্রতারক থেকে ক্ষমতাবান ব্যক্তিত্বে পরিণত হন রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার শাহেদ।
অপরদিকে একটি সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদী যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউয়ের ঘনিষ্ঠদের তালিকায় ছিলো অনিয়ম-জালিয়াতিতে অভিযুক্ত শাহেদ। নানা অভিযোগে কারাগারে থাকা শামিমা নূর পাপিয়া পার্টিতে উপস্থিত করতেন শাহেদ। ২০১৬ সালের দিকে উত্তরায় রিজেন্ট ক্লাব গড়ে তোলেন শাহেদ। এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল পাপিয়ার। তবে পাপিয়া ওই অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। এজন্য তার মনোনীত একজন প্রতিনিধি পাঠান। পাপিয়ার পাঠানো ওই তরুণীকে নিয়েই রিজেন্ট ক্লাব উদ্বোধন করেছিলেন শাহেদ। ক্লাবের আড়ালে সেখানে মূলত মদ ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের আসর বসাতো শাহেদ।
Leave a Reply