মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আমাদের দেশে নানা বিধ অপরাধ হলেও সবাই পবিত্র স্থান হিসাবে ব্যাখা দেয় আল্লাহর ঘর মসজিদকে। কিন্তু সেই মসজিদের অর্থ নিয়ে নিজেকে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন এখন প্রতিটি সমজিদ কমিটির মধ্যেই দেখা দিয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে খবর পাওয়া যায় মসজিদের টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে মুসল্লীদের তোপের মূখে পরে মসজিদ কমিটি। এমন এক ঘটনার জম্ম হল বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৪নং নিয়ামতি ইউনিয়নের চামটা গ্রামের মসজিদের টাকা আত্মসাৎ করতেই নানা ধরনের নাটক করছে কথাকথিত সভাপতি। যানা গেছে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউপি’র চামটা গ্রামের মুন্সী বাড়ির সামনে বাইতুল আমান জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা হয় প্রায় ৫০/৬০ বছর পূর্বে।
আমাদের দেশের একটি প্রবাদ আছে মুসল্লীদের টাকায় মসজিদ চলে। মসজিদটি ভালো ভাবে চললেও সেখানে আসে সরকারের নানা বরাদ্ধের অর্থ। মসজিদের মুসল্লী সূত্র জানা গেছে কুয়েতী সংস্থার দৃষ্টি পরে এই পুরাতন মসজিদটির দিকে। সাহায্যে’র হাত বাড়িয়ে দেয় সংস্থাটি। সংস্থার অর্থ নিতে হলে একটি কমিটি করা প্রয়োজন বলে জানান ওই সংস্থার কর্মকর্তারা। তখন কুটকৌশল অবলম্বন ও ওই সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে মিলে জৈনক ছালাম মুন্সী নামের এক ব্যক্তিকে মৌখিক ভাবে সভাপতি করে একটি কমিটি পেশ করেন কুয়েতী সংস্থার কাছে। তখন ওই সংস্থার কর্মকর্তারা কমিটিকে স্বীকৃতি দিয়ে অর্থ বরাদ্ধ দেয়। মসজিদের কাজ করানোর দায়িত্বপান কথাকথিত সভাপতি ছালাম মুন্সী। তিনি কাজের দায়িত্ব পাওয়ার পরে নিজেকে অনেকটাই বেসামাল করে রেখেছে। মসজিদ নির্মান কাজ চলমান অবস্থায় হিসাব নিকাশ নিয়ে বসলে কাজের পরিমানের চেয়ে অতিরিক্ত ভাউচার বানান ছালাম মুন্সী। তখনেই তার এই অনৈতিক কাজের বাধা প্রদান করে একই বাড়ির কবির মুন্সী। বাধা প্রদানের এক পর্যায়ে বাকবিতান্ডার ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি জানতে পেরে সবাইকে নিয়ে ঘটনার ফয়সালা করতে মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক কামরুল মল্লিকের বাসায় ডাকা হয় শালিশ সভা। সূত্র জানায় চামটা নতুন বাজারে মুদি দোকানী কবির মুন্সী প্রতিদিনের ন্যায় দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যাওয়ার পথে উপস্থিত হয় ওই বৈঠকে। কারন তিনিও একজন মসজিদ কমিটির সদস্য ও নিয়মিত মুসল্লী। কামরুল মল্লিকের বাসায় প্রবেশ করার পরেই দেখা যায় ছালাম মুন্সী তার পুত্র ক্যাডার হিসাবে নিযুক্ত করে রেখেছে। তখন সেখান থেকে কবির মুন্সী বেড়িয়ে আসতে চাইলেও আসতে পারে না সমাজের স্বার্থে। কিন্তু কামরুল মল্লিকের সম্মানের কথা ভেবে তার বসত ঘরের মধ্যেই বসে চলে আলোচনা।
আলোচনার মধ্যেই মসজিদের অতিরিক্ত টাকা মেরে খাওয়া ছালাম মুন্সীর পুত্র জিহান ও তিনি নিজেই মারধর শুরু করে দেয় কবির মুন্সী নামক ওই মুসল্লীকে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলো কামরুল মল্লিক, কবির মুন্সী, লতিফ মুন্সী, ছালাম মুন্সী ও জিহান। দুই বাপ-ছেলে এক সাথে কবির মুন্সীকে বেধরক মারধর করছে। এমন দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক কামরুল মল্লিক। সূত্র জানা গেছে, কবির মুন্সীর বুকের উপর উঠে মারধর করার সময় তার বুক পকেটে থাকা নগদ অর্থও ছিনিয়ে নেয় ছালাম মুন্সীর পুত্র জিহান। কবির মুন্সী আত্মরক্ষায় উঠে দাড়াতে গেলে ছিটকে পড়ে যায় ছালাম মুন্সী।
পরে গিয়ে ফের মারধরের চেষ্টা কালে কামরুল মল্লিকের খাটের একটি অংশ ভেঙ্গে ছালাম মুন্সীর মাথায় আঘাত লাগে। এতে মাথার চামরা কেটে গেলে চিৎকার দিয়ে ছুটে গিয়েছে বাকেরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় বাকেরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তাকে খুজলে পাওয়া যায় নি। পরে দেখা যায় অন্য বেডে গিয়ে রোগীদের সাথে খোশ গল্পে আছেন। কাউকে কিছু না বলেই তিনি বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। এমন সময় ছালাম মুন্সী’র পুত্র বাদী হয়ে কবির মুন্সী ও তার দুই পুত্রসহ ৪জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রতিপক্ষকে ফাসাতে তারা রোগির নাম কাটিয়ে ঢাকায় চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এত ঘটনার মূলেই মসজিদের টাকা হজম করতেই হবে। সে জন্য যত নাটক প্রয়োজন তা করবে ছালাম মুন্সী বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে গত ১৬ নভেম্বর দিবাগত রাত ৯ টার দিকে মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক কামরুল মল্লিকের বসত ঘরে এ ঘটনা ঘটে। তবে এলাকাবাসীর দাবী এই ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করে দোষিদের শাস্তি দেয়া হোক। যারা মসজিদের টাকা মেরে খেতে এত নাটক করছে তাদের বিচার একদিন আল্লাহ’র আদালতেই হবে জানান ওই মসজিদের এক মুসল্লী।
Leave a Reply