বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ আগামী ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এ সময়ের আগে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পাঠদান উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তবে অর্থ সংকটের কারণে মফস্বল পর্যায়ের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী কিনতে পারছে বলে জানা গেছে। ফলে ৩০ মার্চ থেকে যে সকল স্কুল-কলেজ পাঠদানে প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে না, মাঠ কর্মকর্তাদের কাছে সেগুলোর তালিকা চেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।
মাউশির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মফস্বলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিছু স্কুল-কলেজে চেয়ার, টেবিল, মেঝে, স্কুলের বাউন্ডারির দেয়াল, ওয়াশরুম, খেলার মাঠসহ নানা স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো পুনরায় সংস্কার করা না হলে পাঠদান কার্যক্রম শুরু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
পাশাপাশি করোনার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী কেনা সম্ভব হচ্ছে না। অর্থ সংকটের কারণে সংস্কার ও স্বাস্থ্য সামগ্রী কিনতে পারছে না বলে মাঠ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হচ্ছে।
এজন্য গত ১০ মার্চ মাউশি থেকে সারাদেশের ৯টি আঞ্চলিক উপ-পরিচালককে চিঠি দিয়ে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। সোমবারের (১৫ মার্চ) মধ্যে এসব তথ্য পাঠাতে উপ-পরিচালকদের নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।
জানতে চাইলে মাউশির উপপরিচালক (বিদ্যালয়) মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন জেলার রিমোট এলাকার কিছু স্কুল-কলেজ অর্থ সংকটের কারণে ৩০ মার্চের মধ্যে পাঠদান শুরুর প্রস্তুতি শেষ করতে পারছে না। অনেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীও ক্রয় করতে হিমশিম খাচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য আমরা সারাদেশ থেকে তথ্য চেয়েছি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল অঞ্চলের তালিকা পেয়েছি। সেখানে এ ধরনের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি। আগামীকাল সকল অঞ্চলের তথ্য পেলে এ সংখ্যাটা জানা যাবে। তবে এসব স্কুলগুলোকে পরামর্শ ও সহায়তা দিতে বিভিন্ন এনজিও এগিয়ে আসছে।
বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের কাছ থেকে জানা গেছে, রংপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গত ১ বছর বন্ধ থাকায় পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কার করতে যে পরিমাণে অর্থ প্রয়োজন তা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে না থাকায় তা করা সম্ভব হচ্ছে না। তার উপরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। এ জন্য সরকারি কোনো অনুদান বা বরাদ্দ না থাকায় তারা পড়েছেন বিপাকে। জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবীর কাছে আর্থিক সহায়তা চাইলেও চাহিদা মতো পাওয়া যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ৩০ মার্চের মধ্যে পাঠদান শুরু করার উপযোগী হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা হচ্ছে। মাউশির মনিটরিং সেল ও সকল কর্মকর্তারা বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করছেন। আমি নিজেও কয়েকটি জেলায় গিয়েছি। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন করেছে।
তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারা কাজ শেষ করতে পারছে না, কেন পারছে না সে তথ্য পাঠাতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেসব তথ্য পেলে তা একত্রিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তবে জেলা পর্যায়ের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করতে অর্থ সংকট সমাধানে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় বিত্তশীল ও বিভিন্ন এনজিও এগিয়ে আসছে।
মাউশির এই কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন এনজিওদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। সংকটে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা এনজিওদের দেয়া হবে। তারা সার্বিক সহযোগিতা করবে বলে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি সরকারিভাবে কোনো আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হলে তা বণ্টন করা হবে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply