রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ অপরাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলীতে রাতের আঁধারে ঘর তুলে জোরপূর্বক অন্যের জমি দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে বাধা দেয়ায় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বাসহ তিন নারীকে মারধর করা হয় বলে জানা যায়। মারধরের শিকার গর্ভবতী ওই নারীর রক্তক্ষণ হয়েছে।
শনিবার সকালে আহত তিন নারীকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহতরা হলেন অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম (৩৫), গৃহবধূ হাওয়া আক্তার (৩৪) ও হনুফা আক্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমতলী উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামে আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার নামে এক ব্যক্তির ৭০ শতাংশ জমি রয়েছে। একই উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা মো: জামাল হাওলাদার শুক্রবার গভীর রাতে ১০ থেকে ১২ জন লোক নিয়ে ওই জমি দখল করে ঘর তোলেন। এ সময় জমির মালিক আবদুর রাজ্জাক বাড়িতে ছিলেন না। তিনি ও তার ভাই মাসুদ ছারছিনা দরবারের মাহফিলে ছিলেন।
এ দিকে জমি দখলের খবর পেয়ে আবদুর রাজ্জাকের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নাজমা বেগম, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হাওয়া বেগম ও বোন হনুফা আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর তুলতে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল হাওলাদার ও তার সহযোগী নাসির মাঝি, ওয়াজেদ মিস্ত্রি, ও হারুন হাওলাদারসহ ১০ থেকে ১২ জন মিলে ওই তিন নারীকে মারধর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। এমন অভিযোগ আহত হনুফা বেগমের।
তার দাবি, হামলায় অন্তঃসত্ত্বা নাজমার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তিনি ও তার আরেক ভাইয়ের স্ত্রী হাওয়া বেগমও আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হনুফা।
শনিবার আমতলী হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ঘর তুলতে বাধা দেয়ায় জামাল হাওলাদার, নাসির মাঝি, হারুন হাওলাদারসহ ১০ থেকে ১২ জনে আমাদের মারধর করেছে। জামালের লাথির আঘাতে আমার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমি এর বিচার চাই।’
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা: মো: শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে শঙ্কামুক্ত।’ তিনি আরো বলেন, ‘তিন নারীকেই যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামাল হাওলাদার অন্যের জমিতে ঘর তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।’ তার দাবি, ‘প্রয়োজন হওয়ায় তাদের জমিতে ঘর তুলেছি। ওই পরিমাণ জমি তাদেরকে অন্য জায়গা থেকে দিয়ে দেব।’
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Leave a Reply