বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন যথেষ্ঠ বিলম্বিত হতে যাচ্ছে। প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কটি বর্তমানের ১৮ ফুট প্রস্থ থেকে ১২ ফুট হার্ডসেল্ডার সহ ৩৬ফুটে উন্নীতকরনের পাশাপাশি ক্যারেজওয়ের মান উন্নয়ন করার লক্ষে অনুমোদিত প্রকল্পটি চলতি বছর সম্পন্নের কথা থাকলেও নানামুাখি জটিলতায় যথেষ্ঠ বিলম্বিত হচ্ছে। ৩১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলের এ প্রকল্পটির আওতায় বরিশালের ১৩.৩৬ কিলোমিটার, ভোলাতে ১৬.৪৭ কিলোমিটার এবং লক্ষ্মীপুরে ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্ত করন সহ মান উন্নয়ন করার কথা।
কিন্তু এ প্রকল্পের ‘উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি’ তৈরীর সময় যথাযথ সমিক্ষা সহ বেশ কিছু বিষয়ে বিষদ তথ্য সংগ্রহ না করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ডিপিপি সংশোধন সহ তা অনুমোদনের লক্ষে সড়ক অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয় হয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরন করতে হচ্ছে। এমনকি প্রকল্পব্যায়ও ৩১২ কোটি থেকে প্রায় ৫শ কোটিতে উন্নীত হতে যাচ্ছে ।
অথচ এ মহাসড়কটির মাধ্যমেই চট্টগ্রাম,বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি হবার কথা। উপক’লীয় এ জাতীয় মহাসড়টির কারনে উল্লেখিত এলাকার দুরত্ব প্রায় অর্ধেক হ্রাস পাওয়া ছাড়াও চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কটির ওপর যানবাহনের চাপও হ্রাস পাবে বলে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
অথচ এ মহাসড়কটি প্রসস্ত করা সহ মান উন্নয়নের মূল ডিপিপি তৈরীর সময় সড়ক অধিদপ্তরের জমি কতটুকু রয়েছে, তা বিবেচনায় নেয়া হয়নি। ফলে নির্মান প্রতিষ্ঠনকে কার্যাদেশ দেয়া হলেও জমি বুঝিয়ে দিতে না পারায় মহাসড়কটির বরিশাল সড়ক বিভাগের ১৩ কিলোমিটারের বেশীরভাগ অংশে। ব্যাক্তি মালিকানার জমিতে নির্মান প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরুই করতে পারেনি।
এখন মহাসড়কটির বরিশাল অংশে প্রায় ২৫.৪২ হেক্টর জমি হুকুম দখল করতে প্রায় ১৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে। ফলে প্রকল্প ব্যয়ও প্রায় ৫শ কোটি ছুতে চলেছে।
অপরদিকে, ভোলা সড়ক বিভাগের আওতাধীন ১৬.৪৭ কিলোমিটার মহাসড়কটি নির্মানকালে এর দু পাশে যেসব গাছ লাগান হয়েছিল, প্রসস্তকরন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তার একটি বড় অংশই কাটা পড়বে। সরকারী নীতিমালার অলোকে এসব গাছ অপসারন করে মহাসড়কটি প্রসস্ত করার উদোগে নেয়া হলেও একটি বেসরকারী সংস্থার আবেদনে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে লক্ষ্মীপুর প্রান্তের ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্ত করনে তেমন কোন সমস্যা না থাকায় সেখানে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। মহাসড়কটির বরিশাল অংশে সড়ক বিভাগের নিজস্ব জমি রয়েছে, সেখানেও নির্মান প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে ।
কিন্তু বরিশাল সড়ক বিভাগে ভ’মি অধিগ্রহন আর ভোলা প্রান্তে গাছ অপসারনের আইনগত বাঁধা দুর করে এ প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন কবে শুরু হবে, তা এখনো অনেকটাই অজ্ঞাত। ভ’মি অধিগ্রহনের লক্ষে ডিপিপি অনুমোদন অত্যাবশ্যক। তবে ডিপিপি অনুমোদনের পরেও সব আইনগত বিধিবিধান অনুসরন করে ভ’মি অধিগ্রহনে অন্তত এক বছর সময় প্রয়োজন হতে পারে বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী এখনো প্রকল্পটির সংশোধীত ডিপিপি সড়ক অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন করে মন্ত্রনালয়ে পাঠান হয়নি। মন্ত্রনালায়ের অনুমোদনের পরে তা পরিকল্পনা কমিশন সহ একনেক-এর অনুমোদন কবে মিলবে, তাও বলতে পারছেন না দায়িত্বশীল মহল।
এব্যাপারে প্রকল্প পরিচলক ও বরিশাল সড়ক সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সাতে অলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি সব জটিলতা কাটিয়ে বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কটির মান উন্নয়ন সহ সার্বিক প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে’ ।
Leave a Reply