আসন্ন রোজা ঘিরে বাড়তি চঞ্চলতা দেখা দিয়েছে ভোগ্য পণ্যের বাজারে Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০১ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




আসন্ন রোজা ঘিরে বাড়তি চঞ্চলতা দেখা দিয়েছে ভোগ্য পণ্যের বাজারে

আসন্ন রোজা ঘিরে বাড়তি চঞ্চলতা দেখা দিয়েছে ভোগ্য পণ্যের বাজারে

আসন্ন রোজা ঘিরে বাড়তি চঞ্চলতা দেখা দিয়েছে ভোগ্য পণ্যের বাজারে




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ আসন্ন রোজা ঘিরে বাড়তি চঞ্চলতা দেখা দিয়েছে ভোগ্য পণ্যের বাজারে। তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর ও অন্যান্য ফলমূলসহ রোজায় চাহিদা বাড়ে, এমন পণ্যের বাড়তি আমদানি হয়েছে। টুকটাক বিক্রি শুরু হয়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে। রোজার মূল কেনাবেচা শুরু হবে শবেবরাতের কয়েক দিন আগে থেকে। সে অনুসারে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যেই দাম বাড়তে শুরু করেছে বেশ কিছু পণ্যের। এবার করোনার প্রভাব কমে আসায় রমজানের বাজার ধরার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কিছু পণ্যের দাম গত বছরের মতো থাকলেও তেল, চিনি, শসা, লেবু, বেগুনসহ বেশ কিছু পণ্য ভোক্তাকে ভোগাবে। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলো ঘুরে এরই মধ্যে কিছু পণ্যের দম বাড়তে দেখা গেছে। এবার চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আগামী ১৪ এপ্রিল রোজা শুরু হতে পারে। রোজার ১৫ দিন আগে শবেবরাত পালিত হয়।

 

 

সে হিসাবে পুরোদমে রোজার বিক্রি শুরু হতে আর বাকি এক মাসেরও কম। ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, প্রতি মাসে পাঁচ-ছয় হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা থাকলেও রমজানে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টন লাগে। রোজা ঘিরে আমদানিকারকরা এরই মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার টন খেজুর আমদানি করেছেন। দাম কম থাকায় গত বছরের তুলনায় এবার ১০ শতাংশের মতো আমদানি বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা। বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘খেজুরের মৌসুম শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে।

 

তখন থেকেই আমরা ক্রয়াদেশ দিচ্ছি। রোজার চাহিদার ৮০ শতাংশ আমদানি শেষ। গত বছর আমরা ইরাকি (লুজ) খেজুর বিক্রি করেছি ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। এবার বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬৫ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কম।’ তবে খুচরা বাজারে দেখা গেল কিছুটা ভিন্ন চিত্র।

 

সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে, যা এক মাস আগেও ছিল ১৩০ থেকে ৫০০ টাকা। গত বছর এই মানের খেজুর বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত বছরের তুলনায় বর্তমানে খেজুরের দাম বেশি রয়েছে ১৮ শতাংশ।

 

খেজুরের পাশাপাশি রোজায় চাহিদা বাড়ে ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও সব ধরনের ডালের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, বছরে ভোজ্য তেলের চাহিদা ২০ লাখ টন, রোজার মাসে চাহিদা থাকে আড়াই থেকে তিন লাখ টনের মতো। সারা বছরের জন্য প্রয়োজন হয় ১৮ লাখ টন চিনি।

 

এর মধ্যে তিন লাখ টনের চাহিদা থাকে শুধু রোজার সময়। সারা বছর যেখানে পাঁচ লাখ টন মসুর ডাল লাগে, সেখানে রোজায় চাহিদা থাকে ৮০ হাজার টনের মতো। বছরে ৮০ হাজার টন ছোলার প্রয়োজন হয় দেশে, যার ৮০ শতাংশই ব্যবহার হয় রোজার মাসে। এ সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় পেঁয়াজের।

 

২৫ লাখ টন বার্ষিক চাহিদার পাঁচ লাখ টনই দরকার হয় রোজার সময়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়তে থাকায় ভোজ্য তেলের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। বাজারে এখন খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা লিটার, এক মাস আগেও যা ছিল ১১২ থেকে ১১৬ টাকা। টিসিবির হিসাবে গত বছর এই সময় সয়াবিন তেলের লিটার ছিল ৮৫-৮৮ টাকা।

 

অর্থাৎ দাম ৩৫ শতাংশ বেশি। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৩০-১৪০ টাকা লিটার। গত বছর ছিল ১০০-১১০ টাকা লিটার। বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ। তেলের দাম লিটারে আরো পাঁচ টাকা বাড়ানোর জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

 

ছোলার বাজারে এখনো আসন্ন রোজার তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। গত বছরের ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দামেই বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে গত মাসের তুলনায়। বড় দানার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা কেজি। মাসখানেক আগে ৬৫-৭০ টাকায় কেনা যেত এই মানের ডাল।

 

গত বছর এ সময় এই দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, মুগদাসহ বিভিন্ন খুচরা কাঁচাবাজার ঘুরে জানা যায়, তেল, চিনির দাম স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হলেও সচেতন অনেকেই আরো বাড়ার শঙ্কায় কিছু কিছু কিনে রাখছে। সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মঈন স্টোরের বিক্রেতা মো. সুমন বলেন, সারা বছর এক বস্তা চিনি বিক্রি করতে তিন দিন লাগে।

 

শবেবরাতের পর রোজার প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এক দিনেই এক বস্তা শেষ হয়ে যায়। বেশি চলে ছোলা ও তেল। তবে কয়েক দিন ধরে কোনো কোনো ক্রেতা একটু বেশি করে চিনি, তেল কিনছে। আগে যারা ছোলা কিনত না, এমন অনেকে ছোলাও কিনছে।

 

বিক্রেতারা বলছেন, চিনির দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। সাদা চিনি মাসখানেক আগেও খুচরায় ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা গেছে। এখন কেনাতেই ৬৫ টাকা পড়ছে। সেগুনবাগিচা বাজারে সাদা ও লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে, মাসখানেক আগে যা ছিল ৬৫-৭০ টাকা।

 

গত বছর এ সময় চিনির দাম ছিল ৬৫-৬৮ টাকা কেজি। দেশে ভোগ্য পণ্যের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার রাজধানীর মৌলভীবাজার। জানতে চাইলে মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মওলা বলেন, ‘তেল, চিনির চাহিদা সারা বছরই থাকে। তবে রোজায় অনেক বেশি লাগে। এসব পণ্যের চাহিদা একটু একটু করে বাড়ছে। ত

 

বে রোজার বিক্রি শুরু হবে শবেবরাতের কয়েক দিন আগে থেকে। তার সপ্তাহখানেক আগে থেকে রোজার পণ্য কিনতে শুরু করব। তখন দাম নির্ভর করবে সরবরাহের ওপর।’ তিনি বলছিলেন, সয়াবিন তেলের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। চিনির দামও বাড়তি রয়েছে। রোজায় সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে। এবার পেঁয়াজের দামে স্বস্তির আশা করেছিল ভোক্তা। কিন্তু পেঁয়াজের দামও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে।

 

মাসখানেক আগে দেশি পেঁয়াজ পাওয়া যেত ২৫-৩০ টাকা কেজিতে। এখন ৩৫-৪০ টাকা। তবে গত বছরের এই সময়ের তুলনায় দাম এখনো কম। ওই সময় ছিল ৬০-৮০ টাকা কেজি। বসুন্ধরা গেট কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রিতা নোমান বলেন, রোজায় বেগুন ও সালাদ আইটেমের সবজির চাহিদা বাড়ে। তাই এগুলোর দামও কিছুটা বেড়ে যায়। বাজারে এর মধ্যেই বেগুনের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন বারো মাসই বাজারে বেগুন পাওয়া যায়।

 

সে হিসাবে রোজায় দাম কম থাকার কথা। বাজারে এখন বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। মাসখানেক আগেও বেগুনের কেজি ছিল ২০-৩০ টাকা। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে গত বছর এ সময় বেগুনের দাম ছিল ২৮-৩০ টাকা কেজি। শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি। মাসখানেক আগেও ২৫-৩০ টাকায় শসা পাওয়া গেছে। গত বছর শসার দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা কেজি। বাজারে এখন লেবুর দাম আকাশছোঁয়া। ছোট আকারের এক হালি লেবু কিনতে ভোক্তার পকেট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।

 

মাসখানেক আগেও এই মানের লেবু ২০-৩০ টাকায় পাওয়া যেত। রোজার আঁচ লেগেছে মাংসের দামেও। টিসিবির হিসাবে, গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ। আর গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন বেশি রয়েছে ২৬ শতাংশ। বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। এক মাস আগেও ছিল ১২৫-১৩৫ টাকা। গত বছর এই সময়ে ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। তবে রোজায় মুরগির দাম কমবে বলে জানিয়েছেন পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মহসিন।

 

তিনি বলেন, খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও অনুষ্ঠান বেশি হওয়ার কারণে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে আবহাওয়ার কারণে মুরগির ওজন বৃদ্ধির হার কম। এসব কারণে মুরগির দাম বেড়েছে। এ মাসের মাঝামাঝিতেই এই দাম কমতে শুরু করবে বলে তিনি মনে করেন। রোজায় সবচেয়ে অস্থির হয়ে ওঠে গরুর মাংসের দাম। এবারও এর ব্যতিক্রম দেখা গেল না। এরই মধ্যে দাম বেড়েছে। মাসখানেক আগেও ৫৫০-৫৮০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস পাওয়া যেত।

 

এখন তা ৫৮০-৬০০ টাকা কেজি। গত বছর এ সময় গরুর মাংসের দাম ছিল ৫৪০-৫৫০ টাকা কেজি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত ডিসেম্বরে এক লাখ ৪৩ হাজার টন চিনি আমদানির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়। জানুয়ারিতে তা বেড়ে দুই লাখ ৩৩ হাজার টনে দাঁড়ায়। ডিসেম্বরে ৫১ হাজার টন ছোলা, মসুর ও অন্যান্য ডাল আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়। জানুয়ারিতে হয় ৯৫ হাজার টনের। খেজুরসহ অন্যান্য ফল মিলে ১৪ হাজার টন আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয় ডিসেম্বরে। পরের মাস জানুয়ারিতে খোলা হয় ২৩ হাজার টনের।

 

আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক দাম বৃদ্ধির কারণে তিন লাখ দুই হাজার টন ভোজ্য তেল আমদানির ক্রয়াদেশ দেন ব্যবসায়ীরা। জানুয়ারিতে দেওয়া হয় দুই লাখ ৭১ হাজার টনের। ডিসেম্বরে প্রায় ১২৩ মিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের তেলবীজ আমদানিও করা হয় বলে জানা যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে।

 

টিসিবির প্রস্তুতি : রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবি রোজায় আড়াই কোটি লিটার তেল, ১৭ হাজার টন ডাল, ৬০০ টন ছোলা, ১৩ হাজার টন চিনি, ১৭ হাজার টন পেঁয়াজের মজুদ নিয়ে সুলভ মূল্যের বাজার ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি নিয়েছে। স্থানীয় বাজার থকে ৫০০ টন খেজুর ও আরো আট হাজার টন ছোলা সংগ্রহ করতে এরই মধ্যে দরপত্রপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।

 

টিসিবির রমজানের মূল বিক্রি শুরু হবে শবেবরাতের পর, অর্থাৎ এপ্রিলের শুরু থেকে। পণ্যের দাম গত বছরের মতোই থাকবে বলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির জানালেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। এবার দেশব্যাপী ৫০০ ডিলারের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে ১০০-১২০টি থাকবে ঢাকায়।’

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD