বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
আমজাদ হোসেন, বাউফল প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় সড়ক মেরামতের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের উপকরণ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
সদ্য ওই প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত কার্যাদেশ হয়নি। এরই মধ্যে ঠিকাদার কাজ শুরু করেছেন। সড়কে কলাগাছ আর ডালপালা দিয়ে প্যালাসাইডিং নির্মাণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সরেজমিন উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কর্পূরকাঠি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নিম্নমানের ইট দিয়ে সড়কের দুপাশ তৈরি করা হচ্ছে। চৌধুরীবাড়ির দীঘির পাড়ে কলাগাছ আর ডালপালা দিয়ে প্যালাসাইডিং নির্মাণ করে ভাঙন ঠেকানোর কাজ চলছে। এমন চিত্রই চোখে পড়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই গ্রামের নূর হোসেন মৃধার বাড়ি থেকে মোশারেফ হোসেন খানবাড়ি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক মেরামতকাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। গত ৭ অক্টোবর টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় আহমেদ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৪০ লাখ টাকার চুক্তি হয় এলজিইডির। সিডিউল অনুযায়ী সড়কটির ভাঙন ঠেকানোর জন্য ৭৩টি খুঁটি স্থাপন করে ব্রিকওয়াল দিয়ে প্যালাসাইডিং নির্মাণ ও ২৫ এমএম কার্পেটিং করার কথা।
স্থানীয় হারুন অর রশিদ খান, শফিকুল ইসলাম নায়েব, মহিউদ্দিন মল্লিক, প্রমানন্দ দাস ও মিজানুর রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, কয়েকজন শ্রমিক সড়কটির কাজ করছেন। সাইট পরিদর্শনের জন্য এলজিইডি অফিসের কোনো কর্মকর্তা আসেন না। ধুলোবালি দিয়ে সড়কটির গর্ত ভরাট করা হচ্ছে।
দুপাশে দেয়া হচ্ছে চুলার মাটির মতো ইট দিয়ে। আর দীঘির পাড়ে ভাঙন ঠেকানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে কলাগাছ ও ডালপালা। এভাবে নামমাত্র কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। কাজটি তদারকির দায়িত্বে থাকা বাউফল এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী জালাল আহমেদ বলেন, আমার কাছে শুধু প্রকল্পটির সিডিউল আছে। কার্যাদেশ এখনও হাতে পাইনি। অনিয়মের খবর পেয়ে আমি প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছি। কলাগাছের প্যালাসাইডিং ভেঙে ফেলেছি।
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি খবির সিকদার বলেন, কয়েক দিন পর ধানকাটা মৌসুম শুরু হবে। তখন শ্রমিক পাওয়া যাবে না। তাই আমি আগভাগেই কাজ শুরু করেছি। কার্যাদেশ ২/১ দিনের মধ্যেই পেয়ে যাব। সিডিউল অনুযায়ী সব কাজ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত বাউফল উপজেলা প্রকৌশলী যুগল কৃষ্ণ বলেন, ওই কাজে কোনো অনিয়ম করার সুযোগ নেই। সিডিউলে যা আছে তাই করতে হবে। অন্যথায় বিল পরিশোধ করা হবে না। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply