শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ ব্যক্তি মালিকানাধীন সাইনবোর্ড টানিয়ে সরকারি জমির মালিকানা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে এ জমি থেকে মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে ওই জমি মাটি দ্বারা ভরাট করার পাঁয়তারা করছে একটি মহল। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার আকুবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভূমি অফিসে অভিযোগ করলেও রহস্যজনক কারণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানায় ভূক্তভোগিরা।
অভিযুক্ত আব্দুর রহিম পাশের গ্রাম মোহাম্মদপুরের মৃত হাজী চান মিয়ার ছেলে। অভিযোগকারী আবু ছায়েদ বলেন, আমার জমির সামনে দিয়ে সরকারি হালট রয়েছে। এ জমিটি আশ-পাশের জমির মালিকরাই ব্যবহার করার কথা। কিন্তু কয়েকদিন পূর্বে হঠাৎ ঘুম থেকে ওঠে দেখি পাশের গ্রাম মোহাম্মদপুরের আশিকুর রহমানের নামে ওই জমির সামনের রাস্তায় একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়। এর ৩/৪ দিন পর ওই সাইনবোর্ডেই তাঁর বাবা আব্দুর রহিমের ক্রয় সূত্রে ৪ শতক জমির মালিকানা দেখায়। একটি চক্র প্রভাব খাটিয়ে একেক সময় একেক সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কিছুদিন পূর্বে সরকারি জমি থেকে একটি মেহগনি গাছও কেটে নেয়। বর্তমানে ওই জমি মাটি দিয়ে ভরাট করারও পাঁয়তারা করছে তাঁরা। এ বিষয়ে গত ২৬ এপ্রিল উপজেলা ভূমি অফিসে অভিযোগ দিলেও তাঁরা কি কারণে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, তা আমি জানি না।
আকুবপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সোহাগ বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইনবোর্ড সরিয়ে নিতে বলি। বিষয়টি আমি লিভিতভাবে এসিল্যান্ড স্যারকে জানিয়েছি।
সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, জমিটি রাস্তার পাশে হওয়ায় বর্তমান বাজার মূল্য অনেক। তাই ঘোড়াশাল গ্রামের মৃত রাহাত মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া, মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সবুর মিয়ার যোগসাজসে একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে জালাল মিয়াকে দখল করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। প্রভাব খাটিয়ে পাশের মোহাম্মদপুর গ্রামের আশিকুর রহমানের নামে ওই সরকারি জমিতে একটি সাইনবোর্ড লাগায়। এ নিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে রাতের অন্ধকারে ওই সাইনবোর্ড সরিয়ে তাঁর বাবা আব্দুর রহিম নামের সাইনবোর্ড লাগিয়ে জমির মালিকানা দাবি করছেন। আরো জানা যায়, ওই সরকারি জমি থেকে মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে জালাল মিয়া একটি মেহগনি গাছ কেটে নেয়। বর্তমানে ওই জমিটি মাটি দিয়ে ভরাট করারও পাঁয়তারা করছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুর রহিম সাইনবোর্ড দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরকারের প্রয়োজন হলে জমিটি ছেড়ে দেব। অন্য কাউকে ভোগ দখল করতে দিব না। অপর অভিযুক্ত হোসেন মিয়া, জাকির হোসেন ও সবুর মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জমিটি সরকারি বলে স্বীকার করেন। তবে এ জমিটি যেন পাশের বাড়ির জালাল মিয়া পায় সে ব্যাপারে তাঁরা চেষ্টা করছে বলে জানান।
মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, বিষয়টা আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি জায়গাটি সরকারি হয়, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply