মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ পরিবারের অজান্তে একটি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করার অপরাধে ওই ছাত্রীকে প্রায় এক মাস ধরে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে শিকলবন্দী করে রাখার অভিযোগ উঠেছে পরিবারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউপির নওপাড়া গ্রামে। শিমু নওপাড়া গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের বড় মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওপাড়া গ্রামের মো. বকুল মন্ডলের ছেলে মো. মাসুদ রানার সঙ্গে ওই এলাকার মো. সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া ইসলাম শিমুর পঞ্চম শ্রেণি থেকে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। চলতি সালের ৩ মার্চ তারা দুজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
পরে ৬ মার্চ ঢাকা হাইকোর্টে তারা দুইজন বিয়ে করে। প্রায় তিন মাস ঢাকায় বসবাস করেন তারা। এদিকে মেয়ের বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই ছেলে ও তার বাবাসহ ১৪ জনের নামে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন গুরুদাসপুর থানায়। তিন মাস পরে ঢাকা থেকে মাসুদ রানা ও তার বাবা বকুল মন্ডলকে আটক করে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ। ১৪ দিন জেল হাজতে থাকার পরে জামিনে মুক্ত পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন তারা।
শনিবার সকালে সরেজমিনে ওই মেয়ের বাড়িতে গেলে সংবাদকর্মীদের দেখে গেট বন্ধ করে দেয় পরিবারের লোকজন। পরে মেয়ের বাবাকে অনেক কৌশলে বুঝিয়ে কথা বলার সুযোগ হয় মেয়েটির সঙ্গে। সংবাদকর্মীদের দেখেই মেয়ের পা থেকে শিকল খুলে ভয়ভীতি দেখিয়ে রুম থেকে বের করা হয়। মেয়েটির বাম পা ও বাম হাতে শিকলের দাগ দেখা যায়।
সাদিয়া ইসলাম শিমু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তাকে প্রায় এক মাস ধরে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছে এবং শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে। স্বাভাবিক জীবনে তাকে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না। ওই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান তিনি।
মাসুদ রানা অভিযোগ করে বলেন, তারা দুইজন দীর্ঘ সাত বছর ধরে প্রেম করে আসছে। ভালোবাসার টানে পরিবার থেকে মেনে না নেয়ার ভয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। জন্ম নিবন্ধনে বয়স ১৮ বছর থাকলেও সার্টিফিকেটে ১৭ বছর রয়েছে। তিন মাস ঢাকায় অবস্থান করার সময়ে মেয়ের বাবার করা অপরহণ মামলায় ঢাকা থেকে তাকে ও তার বাবাকে আটক করে পুলিশ। ১৪ দিন জেল হাজতে থেকে জামিনে মুক্ত পেয়ে বাড়িতে এসে এলাকাবাসীর কাছে তার প্রেমিকার শিকলবন্দী জীবনের খবর পায় এবং তখনি সে ভেঙে পড়ে। তিনি আরো বলেন, শিকলবন্দী জীবন ও শারীরিক নির্যাতন থেকে যেন তার ভালোবাসার মানুষকে মুক্ত করে দেয়া হয়।
মেয়ের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, তার মেয়ের এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। ভুল বুঝিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো তার মেয়েকে। মানসিক চাপে মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে বলে তাকে ঘরের মধ্যে রাখা হয়েছে। তাকে শিকলবন্দী করে রাখা হয়নি।
Leave a Reply