সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বগুড়ার সব গ্রামে যুবলীগ নেতা হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৪ জুন রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাবগ্রাম বন্দর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব(৩৫) কে শহরের আকাশতারা জুট মিলের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরপরই পুলিশ সুপার জনাব মো. আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং আসামি গ্রেপ্তারের নির্দেশনা প্রদান করেন।
ঘটনার পরদিন নিহত তালেবের স্ত্রী বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটা হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় বেশ কয়েকটি টিম মাঠে নামে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারে তৎপর হয়।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার মহোদয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নিরবচ্ছিন্ন তদন্তে ঘটনার এজাহারনামীয় আসামি চাঁন মিয়া(২১) পিতা আফসার প্রামাণিক এবং বাপ্পারাজ বাপ্পা পিতা কাইয়ুম প্রামাণিক উভয় সাং আকাশতারা মধ্যপাড়া থানা সদর জেলা বগুড়াদ্বয়কে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটা চৌকস টিম ইন্সপেক্টর এমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে ১৯/৬/২০২০ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের বারপুর এলাকা থেকে রক্তমাখা পোশাক পড়া গ্রেপ্তার করে।
তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়ানোর কারণে তারা পোশাক পরিবর্তন করতে পারেনি বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাদের নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধারে যাওয়া হয়। বগুড়া – গাবতলী রোড সংলগ্ন আকাশ তারা এলাকায় (এশিয়ান পেইন্ট এর গুদামের সাথে)ইউক্যালিপটাস বাগানের ভিতর থেকে আসামিদের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উপস্থিত জনগণের সামনে জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী আরো জানান, মামলার আসামি তিনজনই একসাথে চলাফেরা করে। তারা প্রায় সবসময় বার্মিজ চাকু বহন করে থাকে। ১ নম্বর আসামি ফিরোজ ফোকরার সাথে খুন হওয়া তালেবের পূর্বে ভাল সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। চাঁন এবং বাপ্পার সাথেও তালেবের সম্পর্ক ভাল ছিল না। তালেব বিভিন্ন সময়ে তাদের বিভিন্ন ইস্যুতে ডাকলেও তারা যেত না। তালেবের বড়ভাই সুলভ আচরণ তিনজনের কেউই মন থেকে মেনে নিতে পারেনি।
ঘটনার দিন এই তিনজন ঘটনাস্থলের পাশে আইয়ুবের দোকানে পান খাচ্ছিল। এমন সময় তালেব একটা মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে আসে। মোটরসাইকেল থেকে নেমে সে চাঁনকে ডাক দিলে তিনজনই এগিয়ে যায়। তালেব চাঁনকে জিজ্ঞেস করে “কিরে,কথা শুনিস না কেন, বেশি সেয়ানা হয়ে গেছু? কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চাঁন চাকু বের করে তালেবের বুকে আঘাত করলে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পিছন থেকে তিনজনই তালেবকে এলোপাথারি ছুড়ি মারতে থাকে।তালেব মাটিতে পড়ে যাবার পরেও তারা মারতে থাকে। এ সময় ফিরোজের চাকুর আঘাতে তালেবের শ্বাসনালী প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তাদের নিজেদের এলোপাথারি কোপে চাঁনের ডান হাতের কনে অঙ্গুল এবং ফিরোজের ডান কনুই কেটে যায়।
ঘটনায় জড়িত অপর আসামি ফিরোজ ফোকরাকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে। আসামিদের আজ ২০/৬/২০২০ তারিখে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
Leave a Reply