বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজ করে আসছে। করোনা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও তা পরীক্ষার কাজ চলছিল এই প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্বে। বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রকল্পে কর্মরত ৫৭ জন এবং প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ১৩ টেকনোলজিস্ট বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও ল্যাবরেটরিতে তা পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। মেডিকেল টেকনোলস্টি সংকটের কারণে দেশব্যাপী নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছিল।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সরকার এক হাজার ২০০ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের ঘোষণা দেয়। এরই অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত ২ জুন ১৮৩ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের তালিকা চূড়ান্ত করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু ওই ১৮৩ জনের তালিকায় আইইডিসিআর থেকে একজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য গতকাল থেকে তালিকায় থাকা প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তালিকায় নিজেদের নাম না থাকায় আইইডিসিআরে শুরু থেকে কাজ করা মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা ভেঙে পড়েছেন। আইইডিসিআরের পাশাপাশি বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলাসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব ও জেলা সদর হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত কারও নামই ওই তালিকায় রাখা হয়নি।
এতে নমুনা সংগ্রহ কাজের সঙ্গে যুক্ত টেকনোলজিস্টরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। আইইডিসিআরের অন্তত পাঁচজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সমকালকে জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুরু থেকে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজ করে আসছেন। নমুনা পরীক্ষার কাজ করতে গিয়ে তাদের অনেকে আক্রান্তও হয়েছেন। এরপরও তারা নমুনা সংগ্রহের কাজ বন্ধ রাখেননি। অথচ সরকারি নিয়োগে তাদের নাম নেই।
টেকনোলজিস্টরা অভিযোগ করেছেন, একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় শুরু থেকে কাজ করার পরও তারা বঞ্চিত হয়েছেন। নিয়োগের জন্য ওই সিন্ডিকেটটি জনপ্রতি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। এ কারণে তাদের শ্রম ও ত্যাগের মূল্যায়ন করা হয়নি। করোনা সম্পর্কিত কেনাকাটার সিন্ডিকেটই নিয়োগ বানিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বলে জানিয়েছেন অনেকে।
আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সমকালকে বলেন, নিয়োগের তালিকায় আইইডিসিআর থেকে কারও নাম না থাকায় তিনি হতাশ হয়েছেন। কারণ দেশে করোনা সংক্রমণের আগেই জানুয়ারি থেকে এসব টেকনোলজিস্টদের তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন। সরকারি নিয়োগের তালিকায় তাদের নাম না থাকা দুঃখজনক। বিষয়টি জানিয়ে গতকাল রোববার তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। মন্ত্রণালয় এসব টেকনোলজিস্টদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
নিয়োগের তালিকায় যারা :অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত ২ জুন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বেলাল হোসেন ১৮৩ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের তালিকা পাঠান। ওই চিঠিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের (ল্যাবরেটরি) নামের তালিকার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
এতে দেখা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্ল্যানিং) শাখা থেকে ২৩ জন, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক থেকে ৩৪ জন, জাতীয় যক্ষ্ণা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) থেকে ৬০ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে ৫ জন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ থেকে ৪ জন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে ২ জন, আইদেশী থেকে ৪ জন, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে ১ জন এবং আরও বেশ কয়েকটি মেডিকেল কলেজ থেকে সব মিলিয়ে মোট ১৮৩ জনের নাম রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বেলাল হোসেন সমকালকে বলেন, টেকনোলজিস্ট নিয়োগের আগে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান থেকে নামের তালিকা চেয়ে মেইল পাঠায় এমআইএস। যেসব প্রতিষ্ঠান নামের তালিকা পাঠিয়েছে, কেবল তাদের নামই অন্তর্ভুক্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
যারা নাম পাঠায়নি, তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
তবে আইইডিসিআর পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সমকালকে বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠান থেকে টেকনোলজিস্টদের তালিকা তৈরি করে ১ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এরপরও আইইডিসিআরের কারও নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডা. বেলাল কোনো জবাব দেননি।
প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ প্রক্রিয়া :কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, পরিচালক (প্রশাসন) কার কিংবা কোন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ১৮৩ জনের নামের তালিকা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠালেন চিঠিতে সেই কর্তৃপক্ষ অথবা কোনো নির্দেশনার স্মারক নম্বর উল্লেখ করেননি।
এ ছাড়া পরিচালকের পাঠানো চিঠিতে মহাপরিচালকের অনুমোদনের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়নি। সাধারণত সরকারি এ ধরনের চিঠিতে মহাপরিচালকের অনুমোদন রয়েছে বলে উল্লেখ করা থাকে। চিঠিতে ১৮৩ জনকে সরাসরি স্থায়ী নিয়োগের কোনো প্রস্তাব কিংবা সুপারিশও নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কার প্রস্তাব অথবা সুপারিশে সরাসরি স্থায়ী নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির প্রমার্জনা চেয়ে সারসংক্ষেপ পাঠালেন তাও উল্লেখ করা হয়নি।
১৮৩ জনের নামের তালিকায় বিএসএমএমইউ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা রয়েছেন। এসব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও এনজিওতে কর্মচারী নিয়োগ হয় তাদের নিজস্ব নিয়মে। এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে কর্মচারী নিয়োগ কিংবা পদায়নের এখতিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের নেই।
এ ছাড়া দেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) এবং পরিচালক (মেডিকেল এডুকেশন) এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে। তবে সেখানে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের তালিকা তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পরিচালক (প্ল্যানিং) এবং এনটিপি থেকে।
পরিচালক (প্ল্যানিং) হিসেবে আছেন অধ্যাপক ডা. ইকবাল কবীর এবং লাইন ডিরেক্টর (এনটিপি) হিসেবে আছেন অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম। এই দু’জনের বিরুদ্ধে করোনা সংক্রান্ত ক্রয় প্রক্রিয়ায় দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে কোনো স্মারক নম্বর না থাকা এবং কার নির্দেশে ওই চিঠি পাঠানো হলো, মহাপরিচালকের অনুমোদন রয়েছে কিনা তা কিছুই উল্লেখ করা হয়নি, এমনকি উল্লিখিত প্রার্থীদের সরাসরি নিয়োগের কোনো প্রস্তাব কিংবা সুপারিশ করা হয়েছে কিনা- এসব বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য চাইলে ডা. বেলাল হোসেন কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
তবে এই নিয়োগে মহাপরিচালকের সম্মতি রয়েছে বলে তিনি জানান।
কাজ করেও নিয়োগের তালিকায় নেই :থআইইডিসিআরের পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার প্রথম চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে কাজ করা মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নামও এই তালিকায় রাখা হয়নি।
একইভাবে মুগদা মেডিকেল কলেজেরও কারও নাম নেই। দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব ও জেলা সদর হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজে যুক্ত থাকা মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নামও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গত চার থেকে পাঁচ বছর ধরে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে (মাস্টাররোল) প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত আছেন চারজন এবং দেড় বছর ধরে আছেন দু’জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ছয়জনকে নিয়মিত করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম পাঠালেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন ছয়জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে কাজী ইকবাল হোসেন ও কবির মাহমুদ নামে দু’জন গত ১৭ মে কুর্মিটোলায় কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আবেদন করলেও তারা যোগদান করেননি। এই দু’জনসহ তালিকায় নতুন ছয়জনের নাম দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অবাক হয়েছেন।
কাজ শুরু না করেও নিয়োগের প্রথমে :গত মে মাসের শেষ দিকে কাজ শুরু করা ব্র্যাক থেকে ৩৪ জন এবং ঈদের পর এনটিপি কর্মসূচি থেকে নিয়োগ পাওয়া ৬০ জনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এনটিপি কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম মে মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দুই ধাপে ৬০ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে বিভিন্ন হাসপাতালে করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজে যোগদানের নিয়োগপত্র দেন। দাতা সংস্থা ইউএনএফপিএর অর্থায়নে ২২ হাজার টাকা বেতনে জুন ও জুলাই মাসের জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পাওয়া টেকনোলজিস্টদের মধ্যে অনেকে ১ জুন কাজে যোগদান করেন। আবার কেউ কেউ ৫ থেকে ৭ জুনের মধ্যে যোগদান করেছেন। এসব কর্মচারীকে প্রকল্পের চাকরিতে যোগদানের আগেই ২ জুন তাদের সরকারি চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ১৮৩ জনের নামের তালিকায় খাদিজা খাতুন নামে একজন টেকনোলজিস্টের নাম রয়েছে। এনটিপি কর্মসূচির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া খাদিজা খাতুন ৭ জুন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে নমুনা পরীক্ষার কাজে যোগদান করেন। অথচ ২ জুন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর পরিকল্পনা শাখায় কোনো টেকনোলজিস্ট যুক্ত না থাকলেও সেখান থেকে ২৩ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে।
ক্রয় দুর্নীতির সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণেই নিয়োগ বাণিজ্য :নিয়োগ প্রক্রিয়ার একটি অডিও ফোন কল রেকর্ড সমকালের হাতে এসেছে। সেখানে টেকনোলজিস্টদের একটি সংগঠনের এক নেতা বলেন, টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয় না। নিজেদের মেসেঞ্জার গ্রুপেও তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানান। তাকে বলতে শোনা যায়, প্রত্যেকটি নিয়োগের জন্য নূ্যনতম ১০ লাখ টাকা করে লাগবে।
সংশ্নিষ্টরা বলেছেন, এনটিপি কর্মসূচি থেকে আসা ৬০ জন, ব্র্যাক থেকে আসা ৩৪ জন এবং পরিকল্পনা শাখা থেকে আসা ২৩ জনসহ সবাই আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। করোনা সংক্রান্ত ক্রয় প্রক্রিয়ায় জড়িত সিন্ডিকেটই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায়ও যুক্ত। এই কারণেই কাজে যোগদান করার আগেই ওই তিন কর্মসূচি থেকে প্রার্থীদের নাম সরকারি নিয়োগের তালিকায় স্থান পেয়েছে। টেকনোলজিস্টদের তিনটি সংগঠনের ছয়জন শীর্ষ নেতাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের পাশাপাশি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
দাতা সংস্থার অর্থায়নে চাকরি নিয়ে মে মাসের শেষ দিকে এবং জুনের ১ তারিখ ও ৭ তারিখ যোগদান করা সত্ত্বেও ২ জুন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পাঠানো নিয়োগের তালিকায় এনটিপি কর্মসূচির ওই ৬০ টেকনোলজিস্টের নাম আসার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শমিউল ইসলাম বলেন, স্বেচ্ছাসেবা ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত টেকনোলজিস্টদের তালিকা চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো চিঠি তিনি পাননি।
পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বেলাল হোসেনের টেলিফোনে মৌখিক নির্দেশনায় এনটিপি কর্মসূচিতে নিয়োগ পাওয়া টেকনোলজিস্টদের তালিকা তিনি পাঠিয়েছেন। তাদের সরকারীকরণ না কি, অন্যকিছু করা হবে সে সম্পর্কেও তিনি অবগত নন বলে জানান। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গেও তার সংশ্নিষ্টতা নেই বলে উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক ডা. ইকবাল কবীর সমকালকে বলেন, আইইডিসিআর যখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজ বন্ধ করে দেয়, তখন তার প্রকল্পে ১৪ জনকে নেওয়া হয়। ওই ১৪ জন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আরও ৯ জনের নাম যুক্ত করে পরিকল্পনা শাখার নামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য :এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পারসন ও অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বে রয়েছে।
মন্ত্রণালয় কেবল অনুমোদন দিয়ে থাকে। নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কার্যক্রমকে আরও বেগবান করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ প্রায় তিন হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।
এই নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে শতভাগ স্বচ্ছ। অনিয়ম-দুর্নীতির কোনো অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।সুত্র,দৈনিক সমকাল
Leave a Reply